ক্রীড়া প্রতিবেদক ::গ্রামের অন্য আট দশটা ছেলে যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, ভোরের আলো পুব আকাশে উঁকি দেয়নি তখন গ্রামের খেলার মাঠে দেখা মিলবে একটি কিশোরের। মাঠে ফুটবল নিয়ে নিজে নিজেই করছে নানা কসরত। কিছুক্ষণ পর পর বল নিয়ে ছুটছে মাঠের এ পাশ থেকে ওপাশ। প্রতিনিয়ত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে স্বপ্নের দারপ্রান্তে পৌঁছাতে । জাতীয় ফুটবল দলে দেশের হয়ে খেলবে সেই স্বপ্নে দিন যার কাটে ফুটবল নিয়ে। বলছি আরিফুল হক আরিফের (১৬) কথা। যে নিজ উপজেলা ছাড়িয়ে জেলা, বিভাগ ও প্রথম শ্রেনীর লীগে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন ইতোমধ্যেই। আরিফের জন্ম চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার গ্রামে। বাবা মো: শাহজাহান। ছেলেবেলা থেকেই ফুটবল খেলার প্রতি ঝোঁক। গ্রামের মাঠে ফুটবল খেলায় সিনিয়রদের সাথে খেলায় ছোট থেকেই তাঁর নৈপুণ্য ফুটে উঠে। এরপর থেকে স্থানীয় অভিযান ক্লাবের হয়ে খেলেছে উপজেলার বিভিন্ন টুর্ণামেন্টে। কৃতিত্বেও সাক্ষর রেখেছেন প্রতিটি খেলায়। আক্রমণভাগে বিপক্ষ দলের জাল ভেঙ্গে ব্যবধান গড়ে দিতে যার শিল্প নৈপুণ্য বিপক্ষ দলের রক্ষণভাগের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ২০১৩ সালে অষ্টম শ্রেণীতে থাকাকালীন মিরসরাইয়ের স্থানীয় ফুটবল প্রশিক্ষক দিদারুল ইসলামের কাছে প্রশিক্ষন নিয়েছে প্রায় তিন মাস। এখানে ১১৫ জন খেলোয়াড় থেকে বাছাই করে উপজেলা ফুটবল টিম করা হয় আর সেই টিমের অগ্রভাগে ছিল আরিফ। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলা থেকে বাছাই করে বিভাগীয় টিম করা হয়। নৈপুণ্য আর অসাধারণ দক্ষতার জন্য আরিফ জায়গা করে নেয় সেই টিমে। চট্টগ্রামের হয়ে খেলেছেন ঢাকা লীগে আর গৌরব অর্জন করেছে চ্যাম্পিয়ন টিমের অগ্রভাগের একজন খেলোয়াড় হিসেবে। ২০১৫ সালে খেলা শুরু করেন জাতীয় লীগে বর্তমান সময়ের আলোচিত টিম ফেনী সকার ক্লাবের জুনিয়র টিমে। এছাড়া খেলেছেন খাগড়াছড়ি জেলা লীগে ও মাটিরাঙ্গা অনুর্ধ্ব-১৯ দলে। খেলেছেন ঢাকার পাইওনিয়ার ক্লাবেও। পড়ালেখার পাশাপাশি এখন নিয়মিত চর্চা কওে যাচ্ছেন চট্টগ্রামের কল্লোল ক্লাবের ফুটবল একাডেমীতে। পারিবারিক ও আর্র্থিক অসঙ্গতি থাকলেও খেলার নেশা যাকে দমাতে পারেনি, ছুটে চলেছে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে। সঠিক চর্চা আর আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরিফ হয়ে উঠবে একদিন চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গনের তারকা।
আরিফ তাঁর স্বপ্ন নিয়ে বলেন, ফুটবলই আমার প্রাণ। জাতীয় দলে খেলতে আমি নিরন্তরভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। একদিন আমি নিশ্চয়ই জাতীয় দলে খেলবো।
আরিফের মতো তাঁর অনেক শুভাকাঙ্খীও আরিফকে জাতীয় পর্যায়ে দেখতে চান। এজন্য তাঁরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন নিয়মিত।
Chat Conversation End