সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

আওয়ামীলীগে ৪ নতুন মুখ, বিএনপিতে প্রার্থী-৩ :: হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা


খবরিকা রিপোর্ট :: আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ আসন চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই)। নির্বাচন সুষ্ঠ ও পূর্বের মতো আওয়ামীলীগ- বিএনপির অংশগ্রহনে হলে আবারো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে নৌকা- ধানের শীষের। এমনটাই যেন অপেক্ষা করছে। তবে সবটাই নির্ভর করছে সকলের মতৈক্য আর সমন্বয় এর উপর।
একদিকে ভারত সীমান্ত কেন্দ্রিক নতুন স্থলবন্দরের প্রবেশ দ্বার মীরসরাই, আবার দেশের সর্ববৃহৎ ইকনোমিক জোন, পর্যটনেন ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার আসনটিকে সময়ের আবর্তে দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখানকার ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি দীর্ঘদিন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি কেন্দ্রিক থাকলে ও সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্রোহ আর বহুমুখি সংকট দানা বেধে উঠেছে। পুর্বে ও জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এমন সংকট সৃষ্টি হলে ও তিনি তাঁর বিচক্ষনতা দিয়ে সকল সংকটই কাটিয়ে উঠেন। একচ্ছত্র আধিপত্তে তিনি কাউকেই সাইড দেন নি পূর্বে ও, পেছনে যাই হোক তাঁর জীবদ্ধশায় কেউ তাঁর সামনে থেকে তাঁর বিরোধিতায় আসবেন এমনটা এখনো অভাবনীয়। বিচক্ষন রাজনৈতিক তৎপরতার কাছে সকল বিরোধ নৌকার প্রশ্নে একসময় অবসান হতেই দেখা গেছে। এবার ও শেষভাগে কি হয় তা পর্যবেক্ষন করছেন ভোটার পর্যবেক্ষক সকলেই।
অপরদিকে বিএনপির তাঁবুতে জাতীয় কোন ব্যক্তিত্ব না থাকলেও জনসমর্থন রয়েছে। তবে উভয় দলে একাধিক প্রার্থী দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন এমনটাই বলছেন। জামায়াতের ভোট থাকলেও তাদের কার্যক্রম অনেকটাই আন্ডারগ্রাউন্ডে। জাতীয় পার্টির ও তৎপরতা কম।
আওয়ামীলীগ : আগামী চট্টগ্রাম-১ মীরসরাই আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীদের একজন বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তবে এবার তিনি নিজে নির্বাচন না করে তাঁর মেঝ সন্তান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবুর রহমান রুহেলকে ভোটের মাঠে দেখতে চান। তবে এই বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলছেন কে নির্বাচন করবে তা দলের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। ’ নির্বাচন ইস্যুতে রুহেল বলেন, ‘আমি আমার এলাকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অন্যান্য ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের ১৮টি ইউনিটকে সুসংগঠিত করেছি। দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। দল যে সিদ্ধান্ত নিবে সে অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে আমার পক্ষ থেকে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
নির্বাচন ইস্যুতে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, ‘আমি এখন জীবন সায়াহ্নে। এবারের নির্বাচন আমি করতে চাই না। তবে দীর্ঘদিন আমার ছেলে রুহেল দলের সাথে কাজ করছে। আমি চাইবো এবার সে দলের মনোনয়ন লাভ করুক।’
দল চাইলে আপনি নির্বাচন করবেন কি না জানতে চাইলে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে বঙ্গবন্ধুর সময় বঙ্গবন্ধুর কথা কখনো ফেলতে পারিনি। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনো কিছু বললে তা ফেলিনি। আগামীতেও তা পারবো না। দল যদি চায় হয়তো নির্বাচন করতেও হতে পারে।’
আওয়ামী লীগ থেকে নতুনভাবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স এসএসএফ ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র সাবেক পরিচালক ব্রিগিডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামসুল আলম চৌধুরী। যিনি এলাকায় বিগ্রেডিয়ার শামস নামেই অধিক পরিচিত। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার পরপরই তিনি দেশে বেশ আলোচিত হন। এরপর দেশে-বিদেশে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘মনোয়ন চাইবো। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে মোশাররফ ভাইয়ের মতো সিনিয়র নেতা রয়েছেন।’ এ সময় তিনি বলেন, ‘আসলে আমি সবসময় আমার এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চেয়েছি। যখন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলাম তখনও করেছি। মানুষের জন্য কিছু করতে হলে ক্ষমতারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশের প্রয়োজনে রাজনৈতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে দলের যে কোন সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করবো।’
অন্যদিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়মাী লীগের সদস্য, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন এবারও মনোনয়ন চাইবেন। ৭৫ পরবর্তী সময়ে তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৮১-৮২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৯২ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক, এরপর সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। গিয়াস উদ্দিন দাবি করেন, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণআন্দোলন, ২০০১ পরবর্তী বিএনপি জামায়াত জোটের হামলা-মামলার বিরুদ্ধে মাঠের আন্দোলনে সক্রিয়তা, ২০০৭ সালের ওয়ান ইলাভেন পরবর্তী পরিস্থিতিতে হুলিয়া এবং ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও পোড়াও’র বিরুদ্ধে মাঠে প্রতিরোধ গড়ার কাজে তিনি সক্রিয় ছিলেন। গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘মাঠের কর্মীরা আমাকে ভালোবাসে। মীরসরাই’র এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত সবকিছুই আমার নখদর্পণে। ইনশাল্লাহ মনোনয়ন চাইবো। দলীয় সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর আমার আস্থা আছে।’ দল অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে কি করবেন জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষে নৌকাকে বিজয়ী করতে কাজ করবো।’
আওয়ামী লীগ থেকে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী বড়তাকিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্মেদ এলিট। তিনি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পরিচালক, বাংলাদেশ জুনিয়র ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট বলেন, ‘দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। আমার বিশ^াস দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। দল যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয় সে ক্ষেত্রে নৌকার পক্ষে কাজ করবো।’
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের হয়ে এ আসনে মনোনয়নের জোর দাবি তুলেছেন বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। জোটের হয়ে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে কাজ করেন এ বাম নেতা। যাকে বাংলাদেশের উন্নয়নে বড় অংশীদার চীনের বন্ধু বিবেচনা করা হয়। দিলীপ বড়–য়া বলেন, ‘সাম্যবাদী দল ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম অংশীদার। জোটের হয়ে আমরা দেশে ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র একটি আসন দাবি করবো। আর সেটি হচ্ছে চট্টগ্রাম-১ মীরসরাই। এটি আমরা পাওয়ার দাবি রাখি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অবশ্যই এটি বিবেচনা করবেন বলে আমার বিশ্বাস।’ তবু ও তিনি যা সিদ্ধান্ত দিবেন আমি তাই মাথা পেতে নিব।
বিএনপি : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মাঠে আন্দোলরত আছেন বিএনপি। এই সরকারের অধিনে নির্বাচনে যাবেন না এটাই তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত । শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষনা দিয়েছে দলের নেতৃবৃন্দ।
যদি নির্বাচনের পরিস্থিতি ফিরে আসে আর নির্বাচনে অংশগ্রহন করে সে প্রশ্নে ইতিমধ্যে দলের মধ্য থেকেই দীর্ঘদিন রাজনীতি ও আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থাকা অনেক প্রার্থীই বর্তমানে মাঠে আছেন। ইতিমধ্যে দলের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলে মনোনয়ন চাইবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল আমিন। তিনি ১৯৮০ সালে মীরসরাই উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি, ১৯৮৬ সালে দলীয় কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এবং একই সময় তিনি জেলা বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৯১ সালে তিনি মীরসরাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, ২০০৪ সালে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২০১০ সালে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির এ নেতা দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থীর নির্বাচনে অন্যতম সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এলাকায় একজন সজ্জন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাঁর খ্যাতি ও সুনাম রয়েছে। নুরুল আমিন বলেন, ‘আমরা এখন সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে রাজপথে রয়েছি। এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সরকার যদি আমাদের দাবি মেনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয় তাহলে অবশ্যই বিএনপি নির্বাচনে যাবে এবং সেক্ষেত্রে আমি মীরসরাই আসন থেকে মনোনয়ন চাইবো।’
অপর সম্ভাব্যপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী ও ছাত্রদল থেকে নিজের রাজনীতি শুরু করেছেন। ১৯৮৪ সালে উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, ৮৬ সালে সভাপতি এবং ১৯৯৬ সালে উপজেলা যুবদলের সভাপতি ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ২০০৯ সালে জাসাস চট্টগ্রাম উত্তরজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে তিনি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বর্তমানে তিনি আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘গত ১৪ বছর আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে আছি। গত ৫ অক্টোবর বিএনপির রোডমার্চ কর্মসূচি মীরসরাইতে রূপ নিয়েছিলো মহাসমাবেশে। ক্ষমতাসীন এবং নিজেদের ভেতরের অনেক ষড়যন্ত্রকারী এ কর্মসূচি বানচালের চেষ্টা চালিয়েছিলো। অবশেষে আমরাই সফল হয়েছি।’ মনোনয়ন প্রশ্নে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘দল যদি নির্বাচনে যায় তাহলে অবশ্যই মনোনয়ন চাইবো। আমার আশা দল আমাকে নিরাশ করবে না।’
বিএনপির আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দলের মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গত কয়েকদিন তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
জামায়াত : মীরসরাইতেও জামায়াতে ইসলামীর কর্মকান্ড অনেকটা স্থবির। যদিও গোপনে তাদের কার্যক্রম ঠিকই চলছে। কিন্তু মিলছে না যথাযথ অভিভাবক।
জাতীয় পার্টি : একসময় জাতীয় পার্টির এখানে ভালো অবন্থান ছিল। বর্তমানে দু-একজনকে দলের সাংগঠনিক তৎপরতায় দেখা গেলে ও বড় কোন সাংগঠনিক তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এক লাখ ৫ হাজার ৩৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রফেসর এমডিএম কামাল উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছিলেন ৯৪ হাজার ৬৬৫ ভোট। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নুরুল আমিনকে হারিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি নির্বাচিত হন। তবে এ আসনে অতীতের নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটের ব্যবধান ছিল খুব অল্প। এর আগে ১৯৯০ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে ২৭ হাজার ভোটে পরাজিত করে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছিলেন এম এ জিন্নাহ্ । ১৯৯৬ সালের ১২ জুন ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মাত্র ৪ হাজার ভোটে পরাজিত করে জয়ী হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে উপ-নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বিএনপি প্রার্থী এম.এ জিন্নাহকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে জয়ী হন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন বিএনপি প্রার্থী এম এ জিন্নাহ তাতেও ভোটের ব্যবধান ছিলো কম। সব মিলিয়ে অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠিত হলে এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আবারো হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা আছে এমনটাই মনে করেন সকলে।