রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মীরসরাইয়ে সাংবাদিকের বাড়ির পথ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ : শীঘ্রই খুলে দেয়ার প্রতিশ্রুতি


নিজস্ব প্রতিনিধি ::
প্রতিবেশী সাংবাদিকের সাথে আলোচনা না করে চলাচলের পথ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ করায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মীরসরাই পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কয়েকটি পরিবার। চলাচলের রাস্তা দখল করে বাড়িতে প্রবেশের পথ আটকে ঘর নির্মাণ করায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে ওই পরিবারগুলোর। উক্ত ঘটনা চলমান থাকার কয়েকদিন পর অবশেষে খবরিকাকে জানান তিনি শীঘ্রই উক্ত চলাচলের পথ মুক্ত করে দিবেন এবং নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান করে সম্পর্কের উন্নতির উদ্যোগ গ্রহন করবেন।
জানা গেছে, মীরসরাই পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড পূর্ব মীরসরাই এলাকার জনৈক হাজী শাহ আলম কিছুদিন আগে বহুতল ভবন নির্মান শুরু করেন। এসময় তিনি পার্শ্ববর্তী মরিয়ম আক্তার, সুলতান আহম্মদ ও রহিমা বেগমের দীর্ঘ ২৫ বছরের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি জোরপূর্বক গভীর গর্ত খুড়ে এবং টিনের ঘেরা দিয়ে রুদ্ধ করে দেন। এতে ১০টি পরিবারের চলাচলের একমাত্র পথ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলেও প্রভাবশালী হাজী শাহ আলম কর্নপাত না করে নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। উপরন্তু তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব বিস্তার করে কাজ করে যাচ্ছেন।
বর্তমানে বাড়িতে প্রবেশের পথ একেবারেই বন্ধ করে দেয়ায় দৈনন্দিন কাজ কর্মের জন্য ঘর থেকে বের হওয়া এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল আনা নেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা দূর্ঘটনার ঘটনা ঘটলে তা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ বা কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য তাকে বের করে আনারও কোনো রাস্তা নেই।
ইমারত নির্মান বিধিমালার ৮.১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ইমারতের সাইট সংলগ্ন অথবা সাইটের সহিত সংযোগকারী ন্যুন্যতম ৩.৬৫ মিটার প্রশস্ত রাস্তা থাকিতে হইবে; তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন রাস্তার ক্ষেত্রে অন্যূন ৩.০০মিটার প্রশস্ত রাস্তা হইতে হইবে।’ অথচ নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ওই পথে প্রতিবেশীদের চলাচলের বিষয়টি আমলে রাখেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। তোয়াক্কা করেননি ইমারত নির্মান বিধিমালাও। এতে বিপাকে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
অভিযোগের বিষয়ে হাজী শাহ আলম এর পূর্ব বক্তব্য ছিল সাংবাদিক পিতা হাজী শাহ আলম রাস্তার প্রয়োজন নেই বলে লিখিত দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি এই বিষয়ে বুধবার ( ১৭ জুন) খবরিকাকে জানান তিনি সকলের সাথে মিলে মিশেই থাকতে চান। কিছু লোক বরং দুপক্ষকে উস্কানী দিয়ে সম্পর্কের অবনতি করতে চায়। অতঃপর তিনি নির্মান কাজের নিচের অংশ কাজ শেষ হলে চলাচলের পথ মুক্ত করে দিবেন শীঘ্রই। বর্তমানে চলাচলের বিকল্প পথ রয়েছে বিধায় বন্ধ করেই কাজ করছেন।
মীরসরাই পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাখের ইসলাম রাজু জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য আমি হাজী শাহ আলমের সাথে প্রতিবেশীদের পক্ষে বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু শাহ আলমের অনড় অবস্থানের কারনে মিমাংসা করা যায় নি।
এ বিষয়ে মীরসরাই পৌর মেয়র এম. গিয়াস উদ্দিন জানান, ভবন নির্মানের জন্য হাজী শাহ আলম অনুমতি চাইলে প্রতিবেশী পরিবার গুলোকে ডাকা হয়েছিলো তখন তারা আসেনি। এখন নকশা অনুমোদন দিয়ে দেয়ার পর তারা রাস্তার জন্য অভিযোগ করছেন। তিন ফুট জায়গা ছেড়ে ভবন নির্মানের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা মীরসরাই থানার জৈষ্ঠ উপপরিদর্শক আমিরুল মুজাহিদ বলেন বিষয়টি মিমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে নোটিশ করা হয়েছিল। আইন শৃংখলার অবনতি না ঘটে সে বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য বলেন তিনি। উল্লেখ্য যে, সৃষ্ট বিবাদমান চলাচলের পথটি ব্যবহার করেন মীরসরাই উপজেলা থেকে কর্মরত দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও মীরসরাই খবর এর নির্বাহী সম্পাদক আবু সাঈদ ভূঁঞা। একজন সংবাদকর্মীর বাড়ীর চলাচলের পথ অবরুদ্ধ করায় মীরসরাইয়ের সকল সাংবাদিক সমাজের পক্ষে প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।