শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মীরসরাইয়ে পিতৃমাতৃৃহীন একমাত্র কন্যাকে নিজ গৃহে ঢুকতে দিচ্ছে না চাচাতো ভাইরা

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ

মীরসরাই উপজেলার ৭ নং কাটাছরা ইউনিয়নের পূর্ব কাটাছরা গ্রামে এক পিতৃমাতৃহীন কন্যাকে নিজ গৃহে ঢুকতে দিচ্ছে না নিজের ঘরের দখলদার চাচাতো ভাইরা। শুক্রবার ( ৩০ মার্চ) ঘরের একমাত্র উত্তরাধিকারী এলে তাকে সেই ঘরে থাকতে ও দেয়নি প্রতিপক্ষরা । এসময় বাড়ীর দখল নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ও এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের পূর্ব কাটাছরা গ্রামের পিতৃমাতৃহীন আফসানা শারমিন ( ২৪) দুবছর পূর্বে পিতাকে হারায়। গত ১০ মাস পূর্বে মা ও মৃত্যুবরণ করে। পিতা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ফয়েজ উল্লাহ মৃত্যুর কয়েকমাস পূর্বে কন্যাকে বিয়ে দেন জনৈক বেলায়েত হোসেন এর পুত্র নাজমুল হোসেন এর কাছে। মা’য়ের মৃত্যুর পর নিজবাড়ীতে একা বসবাস করছিল বলে স্বামীর কাছে থাকতে চট্টগ্রামে যায় কয়েকমাস পূর্বে। আর তখনি বাড়ীর চাচাতো ভাই আলাউদ্দিন, জাহেদ হোসেন উক্ত বাড়ীর গেট ও ঘরের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে সব দখল করে নেয়।

শুক্রবার ( ৩০ মার্চ) স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল্লাহ, ইউপি মেম্বার আলাউদ্দিন, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি ইব্রাহিম, ছাত্রলীগ নেতা আরিফ চৌধুরী সহ গন্যমান্য ব্যক্তিগনের উপস্থিতিতে শারমিন পিতার উক্ত ঘরে প্রবেশ করতে আসলে ও দখলদার গ্রুপের সাথে প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে আশংকায় দখলদারদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে শারমিনকে পিতার ঘরে থাকতে দেয়া হয়নি। এসময় শারমিন অশ্রুসিক্ত নয়নে উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মীদের জানায় আমি আমার পিতা মাতার একমাত্র সম্বল আমার শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত আমার বাড়িতে ওরা আমাকে আমার স্বামীকে নিয়ে থাকতে ও দিচ্ছে না। এখন আমার পৈত্রিক এই বাড়ী ও বাহিরের সকল সম্পদ দখল করার জন্য ওরা আমাকে ও পালক মেয়ে বলে প্রচার করছে। শারমিন বলে এমন অন্যায়ের সুবিচার কি আমি পাবো না।

এদিকে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় মৃত ফয়েজ উল্লাহ তার জীবদ্বশায় উক্ত বাড়ি নিজে তৈরী করে স্ত্রী ও উক্ত কন্যা শারমিন সহ বসবাস করতো। ফয়েজ উল্লাহর মৃত্যুর পর চাচাতো ভাইয়েরা এখানে সম্পদ পাবে বলে দাবী করে। এই বিষয়ে উক্ত বাড়িতে বর্তমানে বসবাস করা প্রতিপক্ষ চাচি তাহেরুন্নেছা ( ৬০) এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ওরা দুই ভাই মিলেই এই জমিতে এই ঘর করেছিল। বাজারে দোকান ও ব্যবসা কেন্দ্রীক বিভিন্ন লেনদেন ও ছিল। এই বিষয়ে দখলদারকারীগনের পক্ষে জনৈক মোমিনুল হক এই বাড়ী বিষয়ে আদালতে মামলার কয়েকটি রায় রয়েছে বলে জানায় তবে কোন রায়ের কপি তিনি এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত দেখাতে পারেননি।

এই বিষয়ে উক্ত ঘটনার অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা জোরারগঞ্জ থানার এসআই আলমগীর বলেন উক্ত বাড়ীর সকল প্রকার যাচাই বাছাই অনুযায়ী উক্ত বাড়ীর প্রকৃত মালিক মৃত ফয়েজ উল্লাহ। শারমিনকে বাবা এই বাড়ী দিয়ে যাওয়ায় তার কন্যাই মালিক। তবে যেহেতু আদালতে মামলা চলমান তাই দখলকারীদের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা ব্যতিরেকে আমরা আইনগত উদ্যোগ নিতে পারছি না। এই বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরী হুমায়ন চেয়ারম্যান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি ইতিমধ্যে জটিল আকার ধারন করেছে। তবুও আমরা স্থানীয় পর্যায়ে একটি বৈঠকের মাধ্যমে এর আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করবো। তবে কোন প্রকার বিশৃংখলা ও অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ করেন তিনি।