শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

লেখালেখির ক্ষেত্রে পাঠকের ভালোবাসা সবচেয়ে বড় পুরষ্কার : মীনা উজ্জ্বল


কবি মীনা উজ্জ্বল। জন্ম ১৯৭৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলে। বাবা আওলাদ হোসের, মা রওশন আরা বেগম। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ৯ বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে গাজীপুরে একটি প্রফেশনাল অনার্স কলেজে (চীফ অব এডমিন, বিআইএসটি) দায়িত্বরত। সম্প্রতি তিনি কথা বলেন বইমেলা, নতুন বই ও তার লেখালেখি নিয়ে- কথা বলেন পাক্ষিক খবরিকা বার্তা সম্পাদক ইমাম হোসেন এর সাথে।

সাহিত্যে এলেন কেন এবং কিভাবে?
মীনা ঃ সাহিত্য কেউ তো পরিকল্পনা করে আসেনা, আমিও আসিনি। তবে সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রীতি এবং সাহিত্যের প্রতি একটু বেশি টান ছিল সব সময়। গত বছর কয়েক আগে হঠাৎ বিশেষ একটি আহ্বান হতেই জেগে উঠি আমি ভিন্নরূপে, কলম হাতে তুলে নিই সাহসীকতায় এবং সকলের উৎসাহে প্রেরনায় এগিয়ে চলছি।
মেলায় এবার কী বই আসছে?
মীনাঃ আমার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘শয্যা ভরা নির্জনতা ‘, পায়রা প্রকাশনি হতে। প্রচ্ছদ করেছেন শ্রদ্ধেয় প্রচ্ছদশিল্পী রাগিব আহসান। উৎসর্গ করেছি আমার প্রদ্ধেয় আব্বা-মা’ কে।
নতুন বই সম্পর্কে বলুন?
মীনাঃ পাঠকের ভালবাসায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছি। আশা করছি বইটি পাঠক প্রিয়তা পাবে।
গ্রন্থবদ্ধ লেখাগুলোর বিষয়বস্তু নিয়ে যদি বলেন?
মীনাঃ আমার এই বইটিতে বিরহের নেপথ্যে প্রেম-ভালবাসা, অভিমান- অনুযোগ, দ্রোহ, মুক্তি-ভক্তি বিষয়ক লেখা রয়েছে।
প্রতিটি নির্জনতায় মানুষ নিজকে দেখে- খুঁজে, চেনে- বোঝে, হতাশ হয় আবার আশাবাদীও হয়। কিছু পাওয়া,কিছু না পাওয়ায় ভেঙ্গে-গড়ে নতুন আলোয় মানুষ বদলায়, নতুবা সামলায়। ফেলে আসা দিনটি ভুলে গিয়ে নতুবা সামনে রেখে চলতে শেখে, বলতে শেখে। আমার ‘শয্যা ভরা নির্জনতা’ বইটিতে অনেক ক্ষেত্রে পাঠক নিজকে খুঁজে পাবে। বইটি পাঠকের ভাল লাগবে আশা করি।

আপনার প্রবন্ধ/কবিতা/গল্প বা উপন্যাসের পাঠক সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি?
মীনাঃ পাঠকগণ আমার কাছে সম্মানিত সব সময়ই। কারণ আমিও পাঠক। আর বিশেষ করে আমার বইয়ের পাঠকদের প্রতি অশেষ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

বছরের অন্য সময় প্রকাশ না করে মেলায় কেন?
মীনাঃ বই তো বছরের যেকোন সময়ই প্রকাশ করা যায়। তবে মানুষ যেমন কোন উৎসব কেন্দ্র করেই নতুনে সাজে ঠিক তেমনি লেখক প্রকাশকরাও বোধ করি মেলার উৎসবে আপ্লুত হয়েই অধিকাংশ বই মেলায় প্রকাশ করে।

সামগ্রিকভাবে মেলা সম্পর্কে আপনার ভাবনা জানতে চাই
মীনাঃ একটি দেশের নিজস্ব সাহিত্য সংস্কৃতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সাহিত্যের এক বিশাল সমারোহ হচ্ছে বইমেলা। বইমেলা হচ্ছে মানুষের প্রাণের মেলা। লেখক-পাঠক এক বিশাল মিলনমেলা।

মেলা নিয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা
মীনাঃ আমি গাজীপুর থাকি বিধায় শত ইচ্ছে থাকলেও ঢাকা বইমেলায় যাবার সুযোগ কম। হাতে গুনে দু-তিন দিন যাওয়া হয়। মেলায় গেলে অনেক পরিচিতদের সাথে অপ্রত্যাশিত ভাবে দেখা হয়ে যায়। এটা খুব আনন্দের। এছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন অভিজ্ঞতা নেই।

লেখালেখি চর্চার ক্ষেত্রে প্রেরণা বা প্রভাব কার কাছ থেকে বা কিভাবে
মীনাঃ সাহিত্য অনুরাগ বহু আগে থেকে ভেতরে বাজতো। এরপর আমার বড় ছেলে উল্লাস এর লেখা পড়ে উৎসাহিত হই। আর কলম হাতে তুলে নেয়ার সাহস পাই আমার শ্রদ্ধেয় গুরু, এক বিশেষজন, বিশিষ্ট ছড়াকার, আতিক হেলাল এর অনুপ্রেরণায় এবং সার্বিক সহযোগিতায়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আমার উল্লাসের প্রতিও ভালবাসা।

আমাদের দেশে বইমেলার প্রয়োজনীয়তা কী? আপনার দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বলুন?
মীনাঃ বইমেলা অবশ্যই প্রয়োজনীয়। বর্তমান ডিজিটাল সময় ও বিশ্বায়নের কারণে বিশ্ব মানুষের হাতের মুঠোয়। এরপরেও একটি বই হচ্ছে একটি দর্পন, একটি ইতিহাস, একটি শ্লোগান, একটি জাগানিয়া সুর, একটি আলোকিত পথ, সর্বোপরি একজন বিস্বস্ত বন্ধু। বইয়ের উপযোগিতা কোন কালেই শেষ হবার নয়। তাই আমি বলবো বইমেলা শুধু বিভাগীয় পর্যায়ে নয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নানা জাতীয় উৎসব কেন্দ্র করে জাকজমক ভাবে আয়েজিত হওয়া উচিত। যাতে করে বর্তমান প্রজন্মকে বইপ্রেমী করা যায় এবং নিজস্ব সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশে নতুন নতুন ধারার আবির্ভাব ঘটিয়ে সাহিত্যকে কাল উপযোগী, শিক্ষামূলক ও বিনোদন ধর্মী করা যায়।
কোন কোন ব্যাপারে মনঃক্ষুন্নতা আছে আপনার?
উত্তরঃ আমি অল্পে সন্তুষ্ট একজন মানুষ। তাই তেমন কোন মনঃক্ষুন্নতা নেই আমার।
লেখালেখি নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
মীনাঃ আমি শেষ পর্যন্ত লিখতে চাই, লেখার সুযোগ ও পরিবেশ চাই। শিশুদের নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। এছাড়া গল্প লেখার বিষয়ও ঘুরপাক খাচ্ছে মাথায়। আর কবিতা লিখে যাওয়ার প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবেই ইনশাল্লাহ।
লেখালেখি ক্ষেত্রে কোন পুরস্কার পেয়েছেন ?
মীনাঃ লেখালেখির ক্ষেত্রে বড় পুরষ্কার হলো পাঠকের ভালোবাসা। মীরসরাই এর জনবহুল পাক্ষিক “খবরিকা” ২০১৮ সালের ‘দুই বাংলার কবিতা উৎসবে’ কবিতায় অবদানের জন্যে সম্মাননা পদক প্রদান করে।