রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মীরসরাই অর্থনৈতিক জোন পরিদর্শনে ৭ মন্ত্রণালয়ের সচিব

মীরসরাই উপজেলার উপকূলাঞ্চলে দেশের শীর্ষ অর্থনৈতিক জোন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী ১০ বছর পর মীরসরাই উপজেলার এই অর্থনৈতিক জোন হবে দেশের একটি উৎপাদনমুখর ব্যস্ততম বাণিজ্য নগরী। মীরসরাইয়ের এই অর্থনৈতিক জোন দিয়েই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো আমরা। গতকাল শনিবার সকাল ৯ টায় রাষ্ট্রীয় হেলিকপ্টারযোগে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ এর মীরসরাই অর্থনৈতিক জোন সফরকালে তাঁর সফর সঙ্গী ছিলেন আরো ৫ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং রাজস্ব ও বনবিভাগসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গগণ। ৭ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ৭ ব্যক্তি যথাক্রমে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ারুল ইসলাম, সড়ক ও সেতু সচিব এনএ এন সিদ্দিকী, ভূমি সচিব মেজবাহ উল আলম, জ্বালানি সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, নৌ পরিবহন সচিব অশোক মাধব রায়, এনবিআর চেয়ারম্যান নাজিবুর রহমানসহ বেজা চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, সাপোর্ট টু ক্যাশসিটি অব বেজা প্রকল্প’র পরিচালক মো: হারুন অর রশিদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক১ মো: নাফিউল হাসান, প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুছ আলী, এ সময় তার সাথে অন্যান্যের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, ফেনী জেলা প্রশাসক মো: আমিন উল আহসান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন, মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান, ইছাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা প্রমুখ প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ।

মীরসরাইয়ের উক্ত শিল্পজোন পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময়কালে তিনি বলেন বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার একর ভূমি শিল্প জোনের আওতায় আনা হয়েছে এবং এতে পূর্ণ মাত্রায় কাজ চলছে। আগামী দশ বছরের মধ্যে এখানে আমরা পূর্ণ উৎপাদন করতে পারবো। এখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি দেশীয় বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ করতে পারবে। প্রত্যেককে আলাদা আলাদা করে জোন বুঝিয়ে দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন মীরসরাইয়ের এই অর্থনৈতিক জোন দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো আমরা।

তিনি বলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ও শীর্ষ কর্মকর্তারা আজ এসেছেন তাঁরাও দেখে যাচ্ছেন এখানে কার কি কি কাজ করা দরকার। যেখানে যা করা দরকার পৃথক পৃথক মন্ত্রণালয় নিজ নিজ কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি জানান। সকলের একসাথে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের উদ্দেশ্য এটি বলে জানান তিনি। ৫০০ একর করে স্টান্ডার ব্লক ধরে কোনটা ৫০০, কোনটা ৭০০ একরের ব্লক করা হচ্ছে। পুরো এলাকা শনাক্ত করে আমাদের নিয়ন্ত্রণে আসলেই জোনগুলো আলাদা করে দেয়া হবে। এখানে এক এক জোনে একেক ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হবে। ৬ শত ব্লক ধরে কাজ শুরু করা হয়েছে।

এতে প্রকল্প এলাকা আপাতত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার একর ধরবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বর্তমানে এখানে সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন ক্যালেন্ডারের পাতা ধরে এক বছরের শেষের দিকে আপনারা দেখতে পাবেন উন্নয়ের লক্ষমাত্রা। এসময় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবা উদ্দিনের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান। ৬নং ইছাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা। অনুষ্ঠানের শুরুতে আগত অতিথিবৃন্দ প্রকল্প এলাকা কোথাও হেলিকপ্টারে কোথাও পায়ে হেঁটে পরিদর্শনের মাধ্যমে শিল্পজোনের বিভিন্ন কাজের তদারকি করেন। আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আরো বলেন, সরকার সারা দেশে ১শ’ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলবে। আয়তনের দিক থকে এটি দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ৩০ থেকে ৩৫ হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠছে এ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এখানে শিল্পকলকারাখানাসহ স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এটির কাজ অনেক অগ্রসর হবে বলেও তিনি জানান।

সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবসহ সকল সচিবগণ পুনরায় হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে মিরসরাই অর্থনৈতিক জোন এলাকা ত্যাগ করেন। এছাড়া চট্টগ্রাম ও ফেনী জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরত্বে পরিকল্পিত এই শিল্প শহরটির কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন।