মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ভারত থেকে আরো ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলবে

pic-30_69008
ভারত থেকে আরো ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতের বিদ্যুৎ বাজার (পাওয়ার পুল) থেকে ৫০০ মেগাওয়াট এবং ত্রিপুরার পালটানা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। এর বাইরেও দেশটির বিদ্যুৎ বাজার থেকে আরো ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ।পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে দেশটির অন্যান্য অঞ্চলে নেওয়ার জন্য করিডর দেবে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎসচিব ড. মনোয়ার ইসলাম এসব তথ্য জানান।
বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতাবিষয়ক বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির (জেএসসি) সপ্তম বৈঠক শেষে গতকাল দুপুরে হোটেল রূপসী বাংলায় আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎসচিব ড. মনোয়ার ইসলাম ও ভারতের বিদ্যুৎসচিব প্রবীর কুমার সিনহা। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তাঁরা। এ ছাড়া উভয় দেশের বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতাবিষয়ক বাংলাদেশ-ভারত জেএসসির সপ্তম বৈঠক শেষ হয় গত বুধবার।সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. মনোয়ার ইসলাম বলেন, ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আরো ৩০ থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে একমত হয়েছে উভয় পক্ষ। এর বাইরে নতুন একটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে আরো ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এ জন্য যৌথ কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে।বর্তমানে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ। এর সঞ্চালনের সিস্টেম লসের কারণে ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নষ্ট হয়ে যায়।বিদ্যুৎসচিব জানান, জেএসসি বৈঠকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতকে ৬০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চালনের করিডর দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্ভাব্য দুটি করিডরও ঠিক হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রাকসমীক্ষা যাচাই শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। অন্যদিকে ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রসঙ্গে ভারতের বিদ্যুৎসচিব প্রবীর কুমার সিনহা বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বাংলাদেশ-ভারত ১৫ শতাংশ করে ৩০ শতাংশ অর্থায়ন করবে। আর ৭০ শতাংশ অর্থ আসবে ঋণের মাধ্যমে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য সুখের বিষয়টি হচ্ছে, ভারত ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করলেও কোনো বিদ্যুৎ নেবে না। পুরো বিদ্যুৎই পাবে বাংলাদেশ। বিদ্যুতের মূল্য এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ফাইন্যান্সিয়াল ক্লোজিং হলে বিষয়টি বলা যাবে। ভারতে এ ধরনের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য পড়ে বাংলাদেশের মুদ্রায় সাত টাকার মতো।জেএসসি বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎসচিব ড. মনোয়ার ইসলাম। অন্যদের মধ্যে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক নিলুফার আহমেদ, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব আনোয়ার হোসেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য তমাল চক্রবর্তী প্রমুখ।অন্যদিকে ভারতের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সে দেশের বিদ্যুৎসচিব প্রবীর কুমার সিনহা। প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ, ভারতের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব যুথি আরোরা, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার সন্দীপ চক্রবর্তী, এনটিপিসির চেয়ারম্যান অরূপ রায় চৌধুরী প্রমুখ।ভারতীয় প্রতিনিধিদলটি গত ১ এপ্রিল সকালে বাংলাদেশে আসে।