শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

টি ২০ বিশ্বকাপ ফাইনাল আজ

2_85347
‘চার-ছক্কা হৈ হৈ, বল গড়াইয়া গেল কই।’ শুধু বল নয়, বেলাও গড়িয়েছে। স্নায়ুক্ষয়ী উত্তেজনা আর রোমাঞ্চের ককটেল। সব ভুলে টি ২০-র মাদকতায় ক’টা দিন বুঁদ হয়ে ছিল গোটা দেশ। তিন সপ্তাহের সেই মধুচন্দ্রিমা শেষ হতে চলেছে আজ। দু’বছর আগে কলম্বো থেকে ড্যারেন স্যামিদের হাত ধরে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে পাড়ি জমিয়েছিল টি ২০ বিশ্বকাপ ট্রফি। বিশ্বসেরার মুকুটটা আজ আবারও ফিরে আসছে উপমহাদেশে। ছোট ক্রিকেটের বড় আসরে ফাইনালটা যে এবার অল-এশিয়ান!আজ মিরপুরে ভারত-শ্রীলংকা আগুনে ফাইনালে যেই জিতুক না কেন উপমহাদেশের জয় নিশ্চিত। মুশফিকদের বিশ্বকাপ অভিযান সুপার টেনে শেষ হয়ে গেলেও ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ বাঙালির টি ২০ উন্মাদনায় ভাটা পড়েনি। জাতীয় দল ব্যর্থ হলেও এত বড় একটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের সফল আয়োজক হিসেবে লাল-সবুজ পতাকাটা বিশ্ব দরবারে ঠিকই উঁচিয়ে ধরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ঝকঝকে ট্রফিটা আজ ধোনি কিংবা মালিঙ্গার হাতে ওঠার পরই কন্যালয়ের মতো বিষাদে ডুবে যাবে দেশ। বিষণ্নতার চাদর গায়ে জড়িয়ে আরেকটি বড় আসরের জন্য ক্ষণগণনা শুরু করবে মিরপুর।প্রায় তিন মাস আগে ঢাকায় পা রাখা লংকানরা এশিয়া কাপ জিতে ফেভারিট হিসেবেই টি ২০ বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল। কিন্তু এশিয়া কাপে সুপার ফ্লপ ভারতকে ফেভারিটের তালিকায় রাখতে অনেকেরই আপত্তি ছিল। সেই ভারতই টুর্নামেন্টে একমাত্র অপরাজিত দল হিসেবে ফাইনালে উঠে এসেছে। অশ্বিন ও মিশ্রর মায়াবী স্পিন, ধোনির চৌকস নেতৃত্ব এবং বিরাট কোহলির চোখধাঁধানো ফর্ম অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে ভারতকে। নিঃসন্দেহে ফাইনালে ধোনিদের পক্ষেই বাজির দর বেশি থাকবে। তাই বলে শ্রীলংকাকে পিছিয়ে রাখা যাবে না। কোহলি বা অশ্বিনের মতো ধারাবাহিক কোনো পরফর্মার না থাকলেও দল হিসেবে দুর্দান্ত ফর্মে আছে লংকানরা। জয়বর্ধনে, দিলশান, কুশাল পেরেরা, মেন্ডিস, হেরাথ, ম্যাথিউস কিংবা মালিঙ্গা- প্রতি ম্যাচেই কেউ না কেউ জ্বলে উঠছেন। ফর্মে নেই শুধু সাঙ্গাকারা। কে জানে সেরাটা হয়তো ফাইনালের জন্যই জমিয়ে রেখেছেন সাঙ্গা!
শুধু চিরন্তন আক্ষেপ ঘোচানোর ফাইনাল নয়, আন্তর্জাতিক টি ২০-তে এটাই সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনের শেষ ম্যাচ। বিদায় মঞ্চে শিরোপাটা উঁচিয়ে ধরতে মুখিয়ে আছেন দু’জনই। আসলে মুখিয়ে আছে গোটা শ্রীলংকাই। গত সাত বছরে ওয়ানডে ও টি ২০ মিলিয়ে চারটি বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরেছে তারা। এবারও ফাইনালের গেরো খুলতে ব্যর্থ হলে তাদের চোকার অপবাদটা চিরস্থায়ী হয়ে যাবে। গত আসরে ফাইনালে নিজেদের আঙিনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছিল লংকানরা। এবার সেমিফাইনালে ক্যারিবীয়দের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে তার বদলা নিয়েছেন মালিঙ্গারা। ফাইনালেও কিন্তু প্রতিশোধের একটি ব্যাপার আছে। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে এই ভারতই ছিল তাদের ঘাতক।শ্রীলংকার জন্য যেটি শাপমোচনের ম্যাচ, ভারতের জন্য সেটি আবার ইতিহাস গড়ার মঞ্চ। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের তিনটি বড় শিরোপা পরপর জেতার নজির নেই। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর আজ টি ২০ বিশ্বকাপ জিততে পারলে ধোনিদের অমরত্ন নিশ্চিত হয়ে যাবে। সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হেলায় হারিয়ে রীতিমতো উড়িয়েছেন কোহলিরা। এক চোকারকে যখন হারানো গেছে, আরেক চোকারকে নিয়ে কিসের ভয়? কোহলি কিন্তু বিষয়টি এভাবে দেখছেন না। ‘হলকাভাবে নেয়ার মতো দল নয় শ্রীলংকা। কখনোই ছিল না।’