শবেবরাতের রাতে বাজি ফুটানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পল্লবীর কালশীতে ত্রিমুখি সংঘর্ষে অগ্নিদগ্ধ ও গুলিতে একই পরিবারের চারজনসহ ১০ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে পাঁচ নারী ও দুই শিশু রয়েছে। এসময় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। শনিবার ফজর নামাজের পর এ সংঘর্ষ শুরু হয়। দুপুর ৩টায় সমঝোতা বৈঠকের পর বিহারী ক্যাম্প থেকে লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়েছে।নহতরা হলেন- আশিক (২৬), শাহনারা (২৩), লালু (১০), ভুলু (১০), মারুফ (০১), বেবী (৩০), রোকসানা (১৬), আফসানা (১৮) ও ফারজানা (২৩)। এছাড়া মো. আজাদ (৩৫) নামে গুলিবিদ্ধ একজন ঢামেক হাসপাতালে মারা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফজরের নামাজের পরপরই বিহারি পল্লীর কয়েক তরুণ বাজি ফোটালে প্রথমে নিজেদের দুই পক্ষে ও পরে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এ সময় পুলিশ এগিয়ে এলে ওই তরুণদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিহারি পল্লীর লোকজন বেরিয়ে এসে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।সংঘর্ষ প্রায় নিয়ন্ত্রণে এলে সকাল সোয়া ৮টার দিকে বিহারী পল্লীর কয়েকটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে ঘটটাস্থলে একই পরিবারের চারজনসহ ৯ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে আরো একজন মারা যায়।
সংঘর্ষের সময় পুলিশের সঙ্গে আসা পল্লবী থানার পরিচ্ছন্নকর্মী আসলাম হোসেন (৫০) রাবার বুলেটবিদ্ধ হন। পরে আরও দুজন শটগানের গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধরা হলেন পানদোকানদার বদর উদ্দিন (৪৫) ও মো. আরজু (২১)। তাদের ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মধ্য রাতের পর আতশবাজির বিস্ফোরণে অথবা ঘরে কেউ আগুন দেয়ার কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে দাবি করে মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, মূলত বিহারিদের এ ক্যাম্পে কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় আছে। তাদের মধ্যে অন্তর্কোন্দলকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়েছে। পরে আশপাশের স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এ সময় আগুনে পুড়ে কয়েকজন মারা গেছেন। তবে বিহারিদের সঙ্গে আলোচনা করে মৃতদেহ উদ্ধারের পর বলা যাবে ঠিক কতজন মারা গেছেন।