শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী ‘তাদের মানুষের জন্য কান্না নাই, কান্না রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য’

pm-12-2-600x330

রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ঢাকায় বসে আন্দোলন করেন, জীবনেও কখনো রামপালে যাননি। তাদের মানুষের জন্য কোন দুঃখ নাই, মানুষের জন্য কোন কান্না নাই, মানুষের ভালমন্দ দেখার দরকার নাই, সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য তারা কাঁদছেন। রামপাল নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন তাদেরকে অনুরোধ করব, তারা যেন সুন্দরবনে যান, রয়েল বেঙ্গলের সঙ্গে দেখা করে তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা। আজ চট্টগ্রামে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) ৫৭তম জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটা করছি, এটা হচ্ছে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্ল্যান্ট। পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র আমরা তৈরি করছি। সেখানে আমরা পাঁচ লাখ বৃক্ষরোপণ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। ইতিমধ্যে দেড় লাখ বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ উচ্চতায় চিমনি করা হচ্ছে। কয়লার যে ছাইটা হবে, এদেশে যত সিমেন্ট কারখানা আছে, অনেকে ইতোমধ্যেই কন্ট্রাক্ট করে ফেলেছে যে তারা ছাইটা কিনে নেবে। তিনি বলেন, কয়লা আনা হবে কভার্ড কার্গোতে করে যাতে নদী দূষিত না হয়। ইতোমধ্যে সেখানে একটি খাল, ঘাসিয়া খাল নামে পরিচিত যেটা জাতির পিতা চালু করে দিয়ে গেছেন ১৯৭৪ সালে, পরবর্তীতে আর এটা তেমন ড্রেজিং কিংবা সংরক্ষণ হয়নি। আমরা ঘাসিয়াখাল ড্রেজিং করেছি। আরো ৮০টা খাল ড্রেজিং করার জন্য প্রকল্প পাস করেছি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, রামপালে যখন আমরা কাজ শুরু করি তখন রাস্তাঘাট কিছুই ছিল না। একমাত্র নৌপথে যাওয়া যেত। এখন আস্তে আস্তে রাস্তাঘাট হচ্ছে। একসময় তাদের হেলিকপ্টারে রামপাল দেখানো হয়েছে। হেলিকপ্টারে দেখালে তো বুঝবে না। এজন্য রামপাল স্থানটা দেখে ওখান থেকে পদযাত্রা করুক সুন্দরবন পর্যন্ত। বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রসঙ্গে  প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখের কথা না বলে পারি না। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সারা বিশ্বব্যাপী প্রচার করে বেড়াচ্ছে যে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপালে হচ্ছে, এটা কিন্তু সুন্দরবনে হচ্ছে না। আর সুন্দরবন সেখান থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পশুর নদীর তীরে। সুন্দরবনের যে অংশ ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে সেখান থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে। কাজেই সেখানে কোন ক্ষতি হবার সম্ভাবনা নেই।

ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের মূল দায়িত্ব প্রকৌশলীদের কাছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নকাজ যেন বিদেশিদের কাছে অনুসরণীয় হয়। একটি গোষ্ঠী সব সময় দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত থাকে।

আইইবি’র সভাপতি কবির আহমদ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে কনভেশনে সম্পাদক আব্দুস সবুরও বক্তব্য দেন। এছাড়া আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সভাপতি এবং ৫৭তম কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান সাদেক মোহাম্মদ চৌধুরী ও সম্মানী সম্পাদক প্রবীর কুমার সেন বক্তব্য দেন। দেশ-বিদেশের প্রায় ছয় হাজার প্রকৌশলী এ সম্মেলনে যোগ দেন।