শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মীরসরাইয়ের গৃহবধূ হত্যাদায় স্বীকার করে দুই আসামীদের জবানবন্দী

1410

নিজস্ব প্রতেবেদক : মীরসরাইয়ে চাঞ্চল্যকর গৃহবধু হোসনে আরা বেগম হত্যা মামলার দুই আসামী দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন – দেবর আমজাদ মিয়া ও ভাসুরপুত্র মোশারফ হোসেন।
গত শনিবার (২৭ আগষ্ট) চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে জবানবন্দি দেন আমজাদ মিয়া। এই ঘটনার অন্য আসামী মোশাররফ শুক্রবার একই বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘরে ঢুকে সোনা ও বীমার টাকার চুরি করতে দেখে ফেলায় গৃহবধু হোসনে আরা বেগমকে দেবর আমজাদ মিয়া পা চেপে ধরে এবং ভাসুরপুত্র মোশারফ হোসেন জবাই করে হত্যা করে।

মীরসরাই থানার ওসি ইমতিয়াজ ভূঁইয়া জানান, গত বুধবার রাতে মীরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের মজিদিয়া মুহুরিপাড়া গ্রাম থেকে সৌদিপ্রবাসী জহির উদ্দিনের স্ত্রী হোসনে আরা বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মীরসরাই থানার উপ-পরিদর্শক সফিকুল ইসলাম পিপিএম হোসনে আরার ভাশুরের ছেলে মোশাররফ ও চাচাতো দেবর আমজাদ হোসেন ওরফে মিয়াকে আটক করে। নিহত হোসনে আরার ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মীরসরাই থানায় মামলা করেন।

সীতাকুন্ড এএসপি সার্কের মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রবাসীর জহিরের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম হত্যায় জড়িত দুই আসামী দেবর আমজাদ মিয়া ও ভাসুরপুত্র মোশারফ দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। লোকমুখে শোনা হোসেন আরার ঘরে থাকা বীমা কোম্পানী থেকে প্রাপ্ত টাকা ও স্বর্ণ চুরির পরিকল্পনা করে পার্শ্ববতী ঘরের ভাসুরপুত্র মোশারফ হোসেন। পরিকল্পনা শেয়ার করে চাচা আমজাদ মিয়ার সাথে। সুকৌশলে দরজা লক খুলে দুইজনই ঘরে ঢুকে পড়ে। মোশারফ পাশ্বর্তী ঘরের হওয়ার চুরির অভিযানটা সে শুরু করে। আলমিরা খুলে টাকা পাননি মোশারফ। এসময় আলমিরাতে থাকা ৪/৫ ভরি স্বর্ণলঙ্কার লুট করে নেয়। শব্দ শুনে হোসনে আরা বেগম দেখে ফেললে দুইজন তাকে মুখ চেপে ধরে।

দেবর আমজাদ মিয়া পা চেপে ধরে এবং রুমে থাকা ফ্রিজের পাশ থেকে ছুরিটি নিয়ে হোসনে আরার গলায় পোজ দিতে থাকেন মোশাররফ। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর স্বর্ণ নিয়ে দুইজনই পালিয়ে যায়। পরে নিহতের মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের ঘুম ভাঙ্গলে মায়ের রক্তাক্ত দেহ দেখে চিৎকার শুরু করে প্রতিবেশরা জড়ো হতে থাকেন। প্রতিবেশীদের সাথে দুই ঘাতকও এসে মায়া কান্না করেন। সকালে তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।

মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে মীরসরাই থানার ওসি ইমতিয়াজ ভূঁইয়া ও এস আই সফিকুল ইসলাম পিপিএমের আপ্রাণ চেষ্টায় দুই ঘাতকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া স্বর্ণগুলো উদ্ধার করা হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যা রহস্যের জট উন্মোচন করতে সক্ষম হয়।