শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

এমপিদের শপথ আজ

rooson

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী ২৮৯ সংসদ সদস্যরা শপথ নিচ্ছেন আজ। সংসদ সচিবালয়ের শপথ কক্ষে সকাল ১০টায় স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী এমপিদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন বলে সংসদ সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে। এদিকে নবম জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সংসদ সচিবালয়ের অফিস কক্ষ ইতিমধ্যে খালি করা করা হয়েছে। শপথের পর নতুন বিরোধীদলীয় নেতাকে ওই অফিস কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংসদ সচিবালয়। জাতীয় সংসদের জনসংযোগ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, এরই মধ্যে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী শপথ কক্ষ পরিদর্শন করেছেন। এদিকে সংসদ না ভেঙে নতুন এমপিদের শপথ পড়ানো নিয়ে আইনি জটিলতার কথা বলছেন আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। এর আগে গতকাল ২৯০ আসনের বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। গত ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে বিজয়ীদের মধ্যে বাদ পড়েছেন যশোর-১ এবং যশোর-২ আসনের বিজয়ীদের নাম। ইসি সচিবালয় জানায়, যশোর-১ এ শেখ আফিল উদ্দিন ও যশোর-২ আসনে মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনের আগে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকায় তাদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের সময় সহিংসতাসহ বিভিন্ন কারণে স্থগিত রয়েছে ৮টি আসনের নির্বাচন। এর আগে গেজেট প্রকাশের জন্য মঙ্গলবার থেকে রাতভর কাজ চলে নির্বাচন কমিশনে। কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিকের নেতৃত্বে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গেজেট চূড়ান্ত করেন। পরে গতকাল সকালে তা মদ্রণের জন্য ছাপাখানায় পাঠানো হয়। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে [অনুচ্ছেদ ১৪৮(২)ধারা] শপথের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে সংসদের অধিবেশন [অনুচ্ছেদ ৭২(২) ধারা] বসারও কথা রয়েছে। নবম সংসদের মেয়াদ ২৪শে জানুয়ারি পর্যন্ত রয়েছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৪৭টিতে ৫ই জানুয়ারি ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৮টি আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ১৫৩টি আসনের প্রার্থীরা আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৩২টি, জাতীয় পার্টি ৩৩টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৬টি, জাসদ ৫টি, জেপি ১টি, তরীকত ফেডারেশন ১টি, বিএনএফ ১টি, এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৩টি আসনে জয়ী হয়েছেন।রওশন বিরোধী নেত্রী, শপথ নিচ্ছেন জাপার এমপিরাজাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পরামর্শে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ। জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল সন্ধ্যায় তিনি জানিয়েছেন, আজ জাতীয় পার্টির নির্বাচিতরা এমপি হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ-ও শপথ নেবেন। তবে আজই নিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানিয়েছেন, তিনি শপথ নেবেন এটি আমরা জানি। বিরোধী দলের নেতা হতে যাচ্ছেন জানিয়ে রওশন বলেন, দলের চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট। তিনি তো আর বিরোধী দলের নেতা হতে পারেন না। তবে আমাদের প্রতি তার দোয়া রয়েছে। আমাকে বলেছেন, তুমি বিরোধীদলীয় নেতা হও। আমার দোয়া রইল তোমার জন্য। আমরা বিরোধী দলে যাচ্ছি। আল্লাহর রহমত ও আপনাদের দোয়া চাই। রওশন এরশাদ বলেন, উনি (এরশাদ) আছেন। উনি আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। শরীরটা একটু খারাপ থাকায় উনি হাসপাতালে আছেন। শরীরে যাতে চাপ না পড়ে এজন্য তিনি সেখানে আছেন। উনি সুস্থ আছেন। কয়েক দিন পরই চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেবেন। সুস্থ হলেই আমাদের মাঝে ফিরবেন। উনার নির্দেশনায় আমরা সব করেছি। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে জাতীয় পার্টির লুকোচুরি অবস্থার মধ্যে অনেকটা নীরব ছিলেন রওশন। এমন অবস্থায় গতকালই রওশন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন। যদিও অবস্থান পরিষ্কার করতে অনেকটা জড়তা ছিল রওশনের কণ্ঠে। রওশন এরশাদ বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ও গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা নির্বাচনে গিয়েছি। তিনি দাবি করেন, জাপা নির্বাচনমুখী দল। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কারাগারে থেকে নির্বাচন করে ৫টি আসনে জয়ী হয়েছেন। ১৯৯৬ সালেও কারাগারে ছিলেন এরশাদ। সেখান থেকে আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাচন করার জন্য। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না। তবুও আমরা নির্বাচনে গিয়েছি। নির্বাচনে অংশ নিয়েছি ২০০১ ও ২০০৮ সালেও। সংঘাত, সন্ত্রাস পছন্দ করি না। হরতাল, অবরোধ জনগণ চায় না। আমরাও চাই না। দেশে শান্তি চাই। পাশাপাশি সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন ছাড়া সরকার বদলের আর কোন পথ নেই। তাই নির্বাচনে গিয়েছি। দুই নেত্রীর টেলিসংলাপের কথা উল্লেখ করে রওশন এরশাদ বলেন, তাতে সাড়া না পাওয়ায় তারা এখন দুই মেরুতে রয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধান দুই দলকে বসতে হবে। দেশে যে সঙ্কট-সমস্যা আছে তা সমাধানের জন্য অবশ্যই পথ খুঁজতে হবে। সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। হাসিনা ও খালেদাকে একসঙ্গে বসার আহ্বান জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, আলোচনা করলে সমাধান পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, বিদায়ী সংসদে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে আলোচনা করতে পারলে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেতো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে মধ্যবর্তী নির্বাচন হতে পারে। আগামীতে সব দল মিলে আলাপ আলোচনা করে আমরা একটা নির্বাচন করতে পারি। ঐকমত্যের সরকারে যাওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রওশন বলেন, আমরা এখনও আলোচনা করিনি। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। নির্বাচন সম্পর্কে মূল্যায়ন কি, জানতে চাইলে রওশন এরশাদ বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা ৩৩ আসন পেয়েছি। শুরুতে নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল বলে সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন রওশন। দলের অপর সদস্য জিএম কাদের সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন। জিএম কাদের দলে আছেন কিনা জানতে চাইলে রওশন বলেন, তিনি আমাদের সঙ্গেই আছেন। সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমদ, মুজিবুল হক চুন্নু, কাজী ফিরোজ রশিদ, সালমা ইসলামসহ নির্বাচিত এমপিরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের আগে জাপার নবনির্বাচিত এমপিদের নিয়ে বিকাল ৪টা থেকে পৌনে ৬টা পর্যন্ত বৈঠক করেন রওশন এরশাদ।

 

উৎস-মানবজমিন

Leave a Reply