সিরিয়ায় লড়াই থেকে বাঁচতে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীর সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে। এ দেশটি এখন সবচেয়ে বড় ধরনের জরুরি মানবিক পরিস্থিতিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সিরিয়ার জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
২০১১ সালের মার্চ থেকে সিরীয়রা উদ্বাস্তু হিসেবে পাশের দেশগুলোতে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। সেখানে নিবন্ধিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে তারা। এবং শরণার্থীর এ ঢল কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বহু শরণার্থীই প্রতিবেশী দেশগুলো বিশেষ করে লেবাননে পালিয়ে গেছে। সেখানে শরণার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ৪০ হাজার। এরপর আছে তুরস্ক (৮১৫,০০০) এবং জর্ডান (৬০৮,০০০)। ইরাকে পালিয়েছে ২১৫,০০০ শরণার্থী এবং বাদবাকিরা মিসর ও অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিয়েছে। সিরিয়ার তিন বছরের গৃহযুদ্ধে নিহত হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সিরিয়ায় বিরোধী দলগুলো প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে। ২০১১ সালে আসাদ সরকার তার শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা নিলে এ লড়াই শুরু হয়। ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান এবং অগ্রযাত্রার কারণে সম্প্রতি কয়েক মাসে পরিস্থিতি অনেক খারাপ হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বলেছে, প্রতি ৮ জনে একজন সিরীয় সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে গেছে এবং আরও ৬৫ লাখ সিরীয় দেশের ভেতরেই উদ্বাস্তু হয়েছে। এদের অর্ধেকই শিশু। নিবন্ধিত সিরীয় শরণার্থীর সংখ্যা মাত্র এক বছর আগে ২০ লাখ থেকে আরও বেড়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলো আতঙ্কিত এবং ক্লান্ত। তাদের কেউ কেউ বছরের পর বছর ধরে সিরিয়ার ভেতরেই এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে পালিয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, বর্তমানে সিরিয়ার বাইরে যাওয়াও সিরীয়দের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ, সিরিয়ার বাইরে যেতে হলে অনেককেই সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছে। বিবিসি।