রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

২৯ গ্রেনেড ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার ।।মীরসরাইয়ে জঙ্গী আস্তানায় অভিযান

dd83e8a01650185a5b45c094a3e3e1b0

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মীরসরাইয়ের একটি ভবনে আইএসএর জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল বুধবার সে আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ২৯টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন গ্রেনেড, ৯টি চাপাতি, ৪০টি পাওয়ার জেল, ২৮০ প্যাকেট কার্বন স্টিল বল, ১১ কেজি বোমা তৈরির সরঞ্জাম, আই এসএর পোশাক ও একটি ব্যানার উদ্ধার করা হয়। এসময় আটক করা হয় এক মহিলাকে। তবে আটককৃত মহিলার বিষয়ে পুলিশ যাচাই বাছাই করছে বলে জানানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বাড়ির মালিককেও।

জানা যায়, মীরসরাই পৌরসদরের (মীরসরাই ডিগ্রী কলেজ রোডে) জনৈক রিদোয়ানের মালিকানাধীন রিদোয়ান মঞ্জিলের দু’তলা ভবনে আইএস-এর জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় মীরসরাই থানা পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় কুমিল্লা থেকে পুলিশের একটি দল আটককৃত জঙ্গিদের নিয়ে মীরসরাইয়ের এই আস্তানায় আসেন, এরপর মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দিনভর অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক ধ্বংস করেন। অভিযানে মীরসরাই থানা পুলিশ, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, স্পেশাল টিম এবং র‌্যাব ৭ এর সদস্যরা অংশ

নেন। এই ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে দিনভর আতঙ্ক বিরাজ করে। পুলিশ ১০জনকে আসামী করে একটি মামলা রুজু করেছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কাউন্সিলরের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তদন্ত করা হবে বলে জানানো হয়।

অভিযান শেষে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা এক ব্রিফিংয়ে বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কটুম্বপুর এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের একটি তল্লাশী চৌকিতে হামলার সময় ২ জঙ্গিকে আটক করে। তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তারা মীরসরাইয়ের এই আস্তানাটির তথ্য প্রদান করে। পরে রাতে পুলিশ পাহারায় বাসাটিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে এই বাসা থেকে অজ্ঞাত এক মহিলাকে আটক করা হয়। এসময় এসপি নুরে আলম মিনা আরো জানান, মীরসরাইয়ের এই বাসাটি আটককৃত জঙ্গি মাহমুদ হাসান চলতি বছর ফেব্রুয়ারি ১ তারিখে তার বোন এং বোন জামাসইসহ থাকবে বলে ভাড়া নেন। কিন্তু তারা এখানে মার্চ মাসের ১ তারিখ থেকে উঠেন। মিনা আরো জানান, আটককৃত জঙ্গি ও উদ্ধারকৃত বোমাগুলোর মধ্যে বহনকৃত বোমা ও অন্যান্য সরঞ্জমাদি কুমিল্লা থেকে আসা পুলিশ এবং মামলার তদন্ত কর্মমকর্তা নিয়ে যায়। তবে শক্তিশালী বোমাগুলো এখানে রয়েছে। এগুলো চট্টগ্রাম থেকে আসা বোমা নিস্কিয়কারী দলের সদস্যরা এলে তা ধ্বংস করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে মিনা বলেন, আটককৃত জঙ্গিরা কোন দলের তা তদন্তের পরে জানা যাবে। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মশিউদৌলা রেজা, র‌্যাব ৭ ফেনী’র সাফায়েত জামিল, মীরসরাই এর এএসপি সার্কেল মাহবুবুর রহমান, মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন, মীরসরাই থানার ওসি সাইরুল ইসলাম প্রমুখ।

এ বিষয়ে মীরসরাই এসসপি সার্কেল মাহবুবুর রহমান বলেন, আটককৃত জঙ্গিরা ভুয়া পরিচয় পত্র দিয়ে এখানে বাসা ভাড়া নিয়েছিলো। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির মালিক রেদোয়ানকে আটক রাখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে বিকেল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ সকল বোমা ও বিস্ফোরক পাউডার বিনষ্ট করেছে চট্টগ্রাম থেকে আসা মেট্রোপলিটন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ টিম। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মীরসরাই থানায় ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা ও রুজু করা হয়েছে। এএসপি সার্কেল আরো জানান ইতোমধ্যে মীরসরাই পৌরসভার এলাকার সকল কাউন্সিলরের মাধ্যমে পৌর এলাকায় সকল ভাড়াটিয়ার তথ্য সরবরাহ ও সকল আগন্তুকদের বিষয়ে কাউন্সিলরদের ব্যাপক খোঁজ খবর রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু উক্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এই বিষয়ে উদাসীন কেন ছিল তা ও তদন্ত করে দেখা হবে।