সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মহাসড়কে লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ কিশোররা চালাচ্ছে এখন লক্কড়-ঝক্কড় লেগুনা

mirsori chobi 01

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
অদক্ষ চালক, রুটপারমিট ও ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এখন চলাচল শুরু করেছে লক্কড়ঝক্কড় মার্কা অগনিত লেগুনা। হিউম্যান হলার বা লেগুনা নামের এসব বাহনের মালিক-শ্রমিকরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। পূর্বে রাজধানী ঢাকার আসেপাশে যেসব লক্কও ঝক্কও লেগুনা অবাধে চলাচল করতো এগুলো এখন আসা শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই সীতাকুন্ড রুটে।
সিএনজি বিহীন মহাসড়কে গন দূর্ভোগের এই সুযোগে যে যেভাবেই যেমন ঝুকিপূর্ণই হোক উঠে বসছে সেটিতে। আর সেই সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু সিন্ডিকেট এই রুটে নতুন বাহন না এনে এসব ঝুকিপূর্ণ ফিটনেস বিহীন পরিবহন আনছে। যার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পূর্বের চেয়ে মহাসড়ক আরো বেশী ঝুকিপূর্ন হবার আশংকা রয়েছে।
আবার এসব লেগুনার অধিকাংশ চালকই অদক্ষ ও শিশু-কিশোর। বিভিন্ন সময় চালকদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে পুলিশ ব্যবস্থা লক্ষ করলে ও মহাসড়কে গন পরিবহন সংকট থাকায় প্রভাবশালীদের সুপারিশে তারা মুক্ত হয়ে যাচ্ছে অবাধে।
গতকাল (২৬ডিসেম্বর) এই রুটের কিশোর লেগুনা চালক রিপন (১৮) এর কাছে তার গাড়ীর ফিটনেস ও ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে সে বলেন ‘আমার কাছে কিছু নাই, মনে হয় কোম্পানীর কাছে আছে’। আবার অপর হিউম্যান মিশুক চালক মোঃ জিয়া ( ২৬) এর কাছে জানতে চাইলে সে বলে এই রুটে সেক্রেটারী। তার গাড়ীর ফিটনেস ও লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে সে ও বলে কোম্পানীর কাছে আছে। প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানা যায় বড়দারোগারহাট থেকে বাবৈয়ারহাট পর্যন্ত মহাসড়কের প্রায় ২৫ কিলোমিটার জুড়ে ইতিমধ্যে ৩৫টি ফিটনিসবিহীন হিউম্যান মিশুক চলছে। যেগুলো একদম লক্কও ঝক্কও হয়ে অন্যান্য রুট থেকে রিজেক্টেড হয়ে এখানে এসেছে। অথচ ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের মতো সড়কে এমন গাড়ী চলাচল পূর্বের চেয়ে ঝুকিপূর্ণতা যেন আরো কয়েক গুন বাড়িয়ে দিল। এসব গাড়ীতে যেমন কিশোর চালক তেমন রয়েছে শিশু হেলপার ও।
৭-১০ বছর বয়সী অনেক শিশুকে লেগুনাতে চালকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করতে দেখা গেছে। যা আগে ঢাকা-চট্টগ্রামেই দেখা যেত। লেগুনার অবাধ চলাচলের বিষয়ে মানবাধিকার উন্নয়ন ফোরামের মীরসরাই উপজেলা শাখার সভাপতি প্রফেসর ডাঃ জামশেদ আলম বলেন ফিটনেববিহীন এসব লেগুনা, মিশুক ও হিউম্যান হলার আসলে আমাদের আঞ্চলিক পরিবহন ব্যবস্থার দুরবস্থার চিত্র। সিএনজি বন্ধের পর আশা করেছিলাম ভালো মানের কোন বাহন আসছে এই রুটে। কিন্তু উল্টো অদক্ষ কিশোর চালক, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং আনফিট এসব পরিবহন আমাদের জীবন যাত্রাকে আরো এক ধাপ পিছিয়ে দিল।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি সরাসরি লেগুনা চলাচলের বিরোধিতা করছি না। কেননা এ সার্ভিসটি আমাদের অনেক উপকারে আসে। কিন্তু যানবাহনটি যেহেতু রিস্কি তাই এর বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা করতে হবে বা কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টি ভালভাবে দেখভাল করতে হবে। যেহেতু সাধারণ যাত্রীরা ঠাসাঠাসি করে এ যানবাহনে যাতায়াত করেন সেহেতু চালককে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সচিব মো. শওকত আলী বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া যেসব অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে লেগুনা চালাচ্ছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি, নেব। ঢাকার বাহিরে ও আমরা এসব বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশনা দিব শীঘ্রই।
এই বিষয়ে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরিদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এই মুহুর্তে গনপরিবহন ঘাটতির জন্য ফোর হুইলার হিসেবে আমরা কিছু ছাড় দিচ্ছি। তবে ফিটনেস ও কিশোর ড্রাইভারদের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিবো শীঘ্রই।