রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

বিডিআর বিদ্রোহে খালেদা জিয়া জড়িত : প্রধানমন্ত্রী

2_140238

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জড়িত ছিলেন ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ কারণেই তিনি ঘটনা শুরুর আগে সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।
বিদ্রোহের দিন লন্ডন থেকে তারেক রহমানের প্রায় অর্ধশতাধিক টেলিফোন করার কথা উল্লেখ করে তার ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্র“য়ারি পিলখানায় সেই রক্তাক্ত বিদ্রোহ শুরুর কিছু সময় আগে খালেদা জিয়া তার সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে’ চলে যান মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও এটা নিয়ে নানা কথা বিএনপি বলছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কে থাকতে পারে? যে বাড়ি ছেড়ে পালায়, সেই থাকতে পারে। নইলে বাড়ি ছেড়ে পালাবে কেন?’ বুধবার তার তেজগাঁও কার্যালয়ে ‘সাংবাদিক সহায়তা ভাতা ও অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে’ এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারেকের ফোনের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে ‘অনেক তথ্যই’ জানা যাবে। আপনারা দেখছেন যে, বিএনপির নেত্রী এখন নিজে যতটা কথা বলেন তার চেয়ে ছেলেকে দিয়ে বেশি বলাচ্ছেন। তাদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন, যখন বিডিআরে ঘটনাটা শুরু হল, প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে। ঠিক সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে ওই বাড়িটা থেকে বের হয়ে তিনি আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গিয়েছিলেন কেন?
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, জবাবটা তিনি দেবেন কিনা? তিনি ওখান থেকে বের হয়ে কোথায় গেলেন, কোথায় ছিলেন? আর উনার পুত্র লন্ডন থেকে মধ্যরাতে, প্রায় ১টা থেকে ২টা- এই সময় অনবরত ঢাকায় না হলেও ৪০ থেকে ৪৫ জনের কাছে টেলিফোন করেছেন, কথা বলেছেন। কেন?
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্র“য়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিদ্রোহে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তখনকার মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ অর্ধশতাধিক সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। ১৬১ জনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
খালেদা জিয়ার বাড়ি ছেড়ে যাওয়া এবং তারেকের টেলিফোন নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার এই টেলিফোনে কথা বলাটার উদ্দেশ্যটা কী ছিল? কেন বলতে গেল? এই রহস্যটা একটু খুঁজে বের করেন। তাহলে অনেক কথার জবাব পাওয়া যাবে।’
শেখ হাসিনা দাবি করেন, সরকার কাজ করছে বলেই দেশের মানুষ আস্থা ও বিশ্বাস পাচ্ছে, স্বস্তিতে চলার সুযোগ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু দেখেন, অস্বস্তিতে কারা আছেন? নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার সেই অন্তরজ্বালা তো আছেই। হত্যা ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি যেটা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যার পর এ দেশে শুরু হয়েছিল, সেই হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি আজ বন্ধ। হাজার উসকানি দিয়েও সেটা করতে পারছে না।’
এই ‘অন্তরজ্বালা’ থেকে ‘বিভ্রন্তিমূলক মিথ্যা তথ্য’ দিয়ে জনমনে ‘অস্বস্তি সৃষ্টির’ চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পিলখানায় নিহত ৫৭ কর্মকর্তার ৩৩ জনই কোনো না কোনোভাবে ‘আওয়ামী লীগ পরিবারের সঙ্গে’ সম্পর্কিত।
বিদ্রোহের ওই ঘটনা সামাল দেয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা এবং দোষীদের বিচার করার বিষয়গুলোও তিনি অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের যেমন বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন জিয়াউর রহমান, ঠিক একইভাবে ২১ আগস্টের হামলাকারীদেরও আশ্রয় দিয়েছিল কে? সুতরাং এই ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করেই বোঝা যাবে যে এদের চরিত্র কি?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা একটু বিশ্লেষণ করলেই দেখবেন যে, জিয়াউর রহমান, তার স্ত্রী, তার ছেলে যারা খুনি, যুদ্ধাপরাধী, নারী ধর্ষণকারী তাদেরই বারবার প্রতিষ্ঠিত করেছে, পুরস্কৃত করেছে।’
গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ‘ভুল করেছে’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনৈতিক জীবনে যদি সিদ্ধান্তে কখনও ভুল হয় তাহলে তার খেসারত সে দলকে দিতেই হয়। সে প্রতিশোধ জনগণের ওপর নেয়া তো ঠিক না।’