সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

বাংলাদেশের সামনে আজ পাকিস্তান

1_82459
হৃদয়ের খণ্ডহরে এখনও জ্বলছে আশার দীপ। ক্ষীণতর তার আলো। তবুও জ্বলছে তো। কিংবা অকূল দরিয়ায় ভাসছে মাঝিবিহীন নৌকা। কূল-কিনারার দিশা পাচ্ছে না। তবুও ভাসছে তো।বাংলাদেশ দলটাকে আর কিসের সঙ্গে তুলনা করা যায়? যখন সংকট-শৃঙ্গ অনতিক্রম্য হয়ে ওঠে, হতাশা এসে দাঁড়ায় পাশে, তখন পৃথিবীটা মনে হয় অন্ধকারময় অরণ্য। মুশফিকুর রহিমের মনের অবস্থা বোঝাতে আর কোনো উপমাই যে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। হংকং-লজ্জার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত ম্যাচেও সেই একই চিত্রনাট্য। সেই একই বিয়োগান্তক সমাপ্তি। পরশু ধোনিদের কাছে ‘নিঃস্ব’ হয়ে মুশফিকের কথা আর্তির মতো শোনায়, ‘কোনো কিছুই ঠিকমতো হচ্ছে না।’ এই যখন অবস্থা তখন অলৌকিক কিছু ঘটুক, সেই প্রার্থনাই করা যেতে পারে শুধু। এই পটভূমিতে আজ বাংলাদেশের সামনে পাকিস্তান। যাদের বিপক্ষে পরিসংখ্যানও মরচে ধরা। এ পর্যন্ত ছয়টি টি ২০ ম্যাচের সব ক’টিতে হার। কিন্তু ক্রিকেট যে শুধু পরিসংখ্যান-আশ্রিত নয়, পারফরম্যান্সই সেখানে মুখ্য। সেই পারফরম্যান্সও মলিন। কাল প্রাক-ম্যাচ কথোপকথনে সাকিব আল হাসান বলে গেলেন, ‘এখন আর কোনো চাপ নেই। এটাই হয়তো আমাদের ভালো খেলতে সহায়তা করবে।’ তার কথাটা খড়কুটো আঁকড়ে ধরে ডুবন্ত মানুষের বাঁচার আকুতির মতো শোনায়। আগের ম্যাচে ৪৪ করা এনামুল হকও আশার পাল ওড়ালেন, ‘এখনও সুযোগ আছে।’ কথাটা দুটি কারণে বলা। এক, জিতলে স্বাগতিকদের গাণিতিক আশা জিইয়ে থাকবে। অস্ট্রেলিয়াও চাইবে বাংলাদেশের জয়। মুশফিকুরদের হাতেই যে বেইলিদের ভাগ্য। আর বাংলাদেশ হারলে তাদের সঙ্গে অসিদেরও বিদায়ঘণ্টা বেজে যাবে। দুই, টি ২০-তে যে কারও দিকে যে কোনো সময় হেলে পড়তে পারে জয়।
এনামুলের কণ্ঠে ঝরে পড়ে আত্মবিশ্বাস, ‘সমর্থকরা আমাদের দিকে তাকিয়ে। এখনও আমাদের কিছু করার সুযোগ আছে। এখনও অর্জন করার মতো বাকি রয়েছে কিছু।’ সাকিব বলেছেন, ‘ম্যাচটা খুবই কঠিন। জয় পাওয়াটাও তাই। পাকিস্তানি স্পিনাররা খুবই ভালো। ব্যাটিংও ওদের খারাপ নয়।’ সুপার টেনে বাংলাদেশের শেষ দুটি ম্যাচ পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। কী করার আছে? কিছুই যে করার নেই, তা মানতে নারাজ এনামুল। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াক, এটাই এখন চাওয়া দলের। সেজন্য চাই আগুনে নৈপুণ্য। সেই আগুনটারই যে ঘাটতি।পাকিস্তান সপ্তাহখানেক বিশ্রাম পেয়ে খেলতে নামছে আজ। সুপার টেনে তারা ভারতের সঙ্গে সাত উইকেটে হেরে শুরু করে। পরের ম্যাচে ১৬ রানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়। রইল বাকি দুটি। অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজ চাওয়া-পাওয়া সম্পর্কে সজাগ, ‘বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই জিততে হবে আমাদের। তবেই যেতে পারব সেমিতে। ভুল করার কোনো অবকাশ নেই।’ ২০০৯-এর চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের টি ২০ বিশ্বকাপ রেকর্ড ঈর্ষণীয়। এর আগে চারটি আসরেই সেমিফাইনালে খেলেছে তারা। তবে পরিসংখ্যান যতই ঋদ্ধ হোক না কেন, অতীতমুখিতায় আপত্তি হাফিজের। তিনিও মানছেন যে, ‘টি ২০ ক্রিকেটে কোনো দলকেই হারানো সহজ নয়। প্রতিটি মুহূর্তে আসল কাজটা করতে হয়। আমরা বাংলাদেশ দলকে সমীহ করি। জেতার জন্য নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে।’এখানেই বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছে আশার আলো। ফরম্যাটটা টি ২০ বলেই টানেলের শেষ প্রান্তে আলো দেখা যাচ্ছে। টি ২০-তে কোনো ফেভারিট নেই। অঘটন ঘটতে কতক্ষণ। এখন সাকিব-তামিমদের ঘুম ভাঙলেই হয়। তারা যদি জেগে ওঠেন, ঘুমিয়েও পড়তে পারেন হাফিজরা।
উৎস- যুগান্তর