রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

নিউইয়ার্কে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে একুশ উদযাপন

২৬ বছর

গ্রন্থমেলা, স্মারক স্ট্যাম্প প্রকাশ ও জাতিসংঘের সামনে

শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে একুশ উদযাপন

নিউইয়র্ক: একুশের গ্রন্থমেলা, ইউএসপিএস কর্তৃক স্মারক স্ট্যাম্প প্রকাশ ও জাতিসংঘের সামনে একুশের প্রথম প্রহরে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মাধ্যমে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালির চেতনা মঞ্চ ২০১৭ সালে একুশ উদযাপন করে।

একুশের প্রথম প্রহর

বাংলাদেশের একুশের প্রথম প্রহরের সঙ্গে মিল রেখে মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক সময় বেলা ১টা ১ মিনিটে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। গত ২৫ বছরের মত এবছরও উপস্থিত সর্বকনিষ্ঠ শিশু জাইমা মাশিয়াত এর পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হয়। এরপর একে একে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্্রটদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মমীন, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসা শহীদদের শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র শাখা, জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্র শাখা, জাসদ যুক্তরাষ্্রট শাখা ছাড়াও মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, ভাসা সৈনিক আবদুস সা,াদ পরিবার, একুশে চেতনা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা, ব্রাহ্মনবাড়য়িা সম্মিলনী, পেশাজীবী সমন্বয কমিটি. নিউইযর্ক স্টেট আওযামী লীগ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নিমৃূল কমিটি, আমেরিকান প্রেসক্লাব অব অরিজিন, বঙ্গবন্ধু প্রচারকেন্দ্র সমাজকল্যাণ পরিষদ, বাঙলাদেশ স্পোটস কাউন্সিল, উদিচী শিল্পী গোষ্ঠী, শিরি সাহিত্য কেন্দ্র, উদয়ন শিল্পী গোষ্ঠী, জাগরনী যুব সংঘ, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা যুবলীগ, সিলেট গলদাবী পরিষদ, ব্রঙ্কস বাংলাদেশ সোসাইটি, বাংলাদেশ আমেরিকান কমিউিনিটি কাউন্সিল, মুক্তধারা ফাউন্ডেশন, বাঙালীর চেতনা মঞ্চ ও লাগার্ডিয়া কলেজ স্টুডেন্ট গভনমেন্ট এর সভাপতি আয়েশা খাতুনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্লাবের ছাত্র-ছাত্রীরা শহীদদের পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানয়। এছাড়াও নিউইয়র্কে উল্লেখযোগ সংখ্যক কবি লেখক শিল্পী সাহিত্যিক-সাংবাদিক, ইউনাইটেড নেশনের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।

সেমন্তী ওযাহেদ এর সঞ্চালনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সম্মিলিত কন্ঠে ভাষার গান পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর এক মিনিট নীরবতা পালন করে বাংলাদেশ সময় একুশের প্রথম প্রহার রাত ১২-০১ মিনিট নিউইয়র্ক সময় দুপুর ১.০১ মিনিটের শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করা শুরু হয়। অনুষ্ঠানটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম ছিলেন প্রধান অতিথি। তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের’ স্বীকৃতি আদায়ে প্রবাসীদের অবিস্মরণীয় ভূমিকার প্রশংসা করেন। তৌফিক ইলাহী বলেন, “আজ আমরা যে নতুন স্বপ্ন দেখছি, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করার, বাঙালি সংস্কৃতিকে চিরজাগ্রত রাখার, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্যেই শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংকল্প গ্রহণ করলাম।”

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈযদ বসারত আলী, যুক্তরাষ্ট আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আবদুস সামাদ আজাদ ও বাঙালির চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাদশা বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানে। গত ২৬ বছর ধরে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এবং বাঙালি চেতনামঞ্চের উদ্যোগে জাতিসংঘের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হলেও বাংলাদেশের একুশের প্রথম প্রহরের সাথে সঙ্গতি রেখে গত বছর থেকে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হচ্ছে।

একুশে গ্রন্থমেলাboimela20172

উত্তর আমেরিকায় বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মকে বাংলা ভাষা চর্চার প্রতি আরও বেশি করে আগ্রহী করে তুলতে হবে। বাংলা সাহিত্যেও প্রতি নিবিড় প্রেম সৃষ্টি করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই বিশ্বদরবারে বাংলা সাহিত্যের মর্যাদা আরও সমুন্নত হবে। তবে ব্যাপক সংখ্যক প্রবাসী লেখকের উপস্থিতি ও তাদের প্রকাশিত নতুন গ্রন্থই ছিল এবছরের একুশের গ্রন্থ মেলার প্রধান আকর্ষণ।

নিউইয়র্কে আয়োজিত একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। স্থানীয় সময় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রোববার বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের পিএস ৬৯ (পাবলিক স্কুল) মিলনায়তনে এই মেলার আয়োজন করা হয়। দুই দিনব্যাপী এই গ্রন্থমেলার আয়োজক মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালির চেতনা মঞ্চ।

প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট লেখক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস, মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের কর্ণধার বিশ্বজিত সাহা, বাঙালি চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আবদু রহিম বাদশা, সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ, কবি কাজী জহিরুল ইসলাম, তাজুল ইমাম, গোপাল সান্যাল, ছড়াকার মঞ্জুরুল কাদের প্রমুখ।

এবারের গ্রন্থমেলায় উত্তর আমেরিকা প্রবাসী লেখকদের অসংখ্য বই প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থমেলা উদ্বোধনের পর মঞ্চে আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। এতে অংশগ্রহণ করেন ড. মাহফুজুর রহমান, কনসাল জেনারেল শামীম আহসান, নিনি ওয়াহেদ, হাসান ফেরদৌস, ডঃ জিতেন রায, ডঃ সব্যসাচী ঘোষ দস্তিদার ও সেমন্তী ওযাহেদ। সঞ্চালনা করেন রানু ফেরদৌস।

ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, বাংলা সাহিত্যের চর্চা ও লেখন-পঠন আগের চেয়ে বেড়েছে। কয়েক দশকের তুলনায় এসব ক্ষেত্রে দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। প্রতিবছর বইমেলায় অনেক বই বের হয়। অনেক বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। কিন্তু লেখালেখি যে হচ্ছে, সেটাই ইতিবাচক।

মাহফুজুর রহমান বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময় অসাম্প্রদায়িকতার জন্ম হয়েছিল। কিন্তু সেই অসাম্প্রদায়িকতা এখন পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নিউইয়র্কে বাংলা সাহিত্যের চর্চা দেখে গর্বিত বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, মুক্তধারা ফাউন্ডেশন গত ২৫ বছর ধরে ধারাবহিকভাবে প্রবাসে শিশু-কিশোরদের জন্য বাংলা লিখন-চিত্রাংকনসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে, এটি একটি অনণ্য অসাধারণ উদ্যোগ।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন,প্রবাসের নতুন প্রজন্মকে বাংলার প্রতি আরও বেশি করে আগ্রহী করে তুলতে হবে। প্রবাসী প্রজন্ম ১৪-১৫ বছর বয়স পর্যন্ত বাংলা চর্চা করে। কিন্তু ১৬ বছর বয়সের পর তারা অন্যদিকে ধাবিত হচ্ছে। তাদের বাংলা চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে অভিভাবকদের ভূমিকা রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের বিশ্বজিত সাহা বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাঙালিদের গৌরব ও মর্যাদা বাড়িয়ে দিতে ্এই গ্রন্থমেলার আয়োজন করা হয়। তিনি বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেসব নতুন বই বাংলা একাডেমীর গ্রন্থ মেলায় প্রকাশিত হয়েছে, তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোই এই মেলায় স্থান পেয়েছে। প্রায় ২৬ জন লেখকের এবছর একুশের গ্রন্থ মেলার বিশেষ দিক ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আলোচনা সভার আগে শিশুরা কবিতা আবৃত্তি করে। কবিতা আবৃত্তি করে আশরাফ আসীম, আওসাফ আহমেদ, অর্জিতা প্রবর্তনা দাস, ইশিকা আহমেদ অহনা, নওশীন চৌধুরী, লাম মীম, নাহরীন ইসলাম, মুন জেবিন হাই এবং লিউনা মুহিত।
boimela20173
একুশের গ্রন্থমেলায় কবিতা পড়েছেন: তমিজ উদদীন লোদী, তাজুল ইমাম, শামস চৌধুরী রুশো, খালেদ শরফুদ্দীন, কাজী জহিরুল ইসলাম, লিয়াকত আলী, এবিএম সালেহ উদ্দীন, জুলি রহমান, আলম সিদ্দিকী, শরিফুল আলম, সায়ীদ আহমেদ জুয়েদ, মণিজা রহমান, আনোয়ার সেলিম, মাকসুদা আহমেদ, নূরুল মোস্তফা রসি, আহমেদ ছহুল, রিমি রুম্মন, রানু ফেরদৌস, কামরুন্নাহার ডলি, শাহ আরম দুলাল, পলি শাহানা, মেহের চৌধুরী, মুজিব বিন হক, সীমা, সুলতানা বাদিত মুন্না, রেনু রোজা ও মনজুর কাদের।

আদনান সৈয়দের সঞ্চালনে অনুষ্ঠিত হয় একুশের গ্রন্থমেলার নতুন বইয়ের পরিচিতি অনুষ্ঠান। এতে হাসান ফেরদৌস, তমিজ উদদীন লোদী, শামস আল মমীন, ফকির ইলয়াসসহ সব লেখকরা অংশ নেন। প্রাণবন্ত এই অনুষ্ঠানে লেখকরা কিভাবে নিজের গ্রন্থটি রচনা করেছেন সে কথাগুলোও উঠে আসে।

গ্রন্থমেলার মঞ্চে একুশের কবিতা পাঠ, আলোচনা, নতুন বইয়ের পরিচিতি ও নতুন প্রজন্মের কবিতার অনুষ্ঠান ছাড়াও মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। একক শিল্পীদের মধ্যে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শফি চৌধুরী হারুণ, শাহ মাহবুব, দিঠি হাসনাৎ, তানভীর শাহীন ও সঙ্গীতা চক্রবর্তী প্রমূখ। এছাড়া উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। এতে অংশগ্রহণ করেন জীবন বিশ্বাস,তৃষা মন্ডল, সুদৃতা পাল, ানামিকা মজুমদার, শাহানা আখতার নুপুর, জয়শ্রী ভট্টাচার্য, অমৃতা রায়, রাবেযা আখতার. নাজনীন সুলতানা, নাজমুন নাহার, তৃষা মন্ডল প্রমূখ শিল্পী। তবলা সঙ্গত করেন দীপ্ত রায় ও উদিতা তন্বী। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন রানু ফেরদৌস ও উর্বি হাই।

একুশের গ্রন্থমেলায়
boimela2017

প্রবাসী লেখকদের বই

উত্তর আমেরিকা বসবাসরত লেখকদের ২০১৭ সালে প্রকাশিত যেসব গ্রন্থ একুশের গ্রন্থমেলায় প্রদর্শিত হয় সেগুলো হলো: আদনান সৈয়দ: পূর্ব পশ্চিমের আলো, আহমেদ ছহুল: তখনো আমার ঘরে রাত, আহম্মদ হোসেন বাবু: দাঁড়ারে না কথা ছিল, জল দাও ভঙ্গিমা, আলম সিদ্দিকি; নামকাব্য, ঘুমভাঙানি ছড়া, লিমেরিক, দিলরুবা আহমেদ: ব্রাউন গার্লস, ডঃ নূরুন নবী: জন্ম ঝড়ের বাংলাদেশ, দুলাল তালুকদার: আমি, ফকির ইলিয়াস: মুক্তিযুদ্ধের মানচিত্র ও স্বাধীনতার উত্তরাধিকার, হাসান ফেরদৌস: নিউইয়র্কের খেরোখাতা, হুমায়ূন কবীর: আমার রোগী বন্ধুরা, খরভব রহ ষরমযঃ, ইকবাল হাসান: আলো আঁধারে কয়েকটি সোনালী মাছ, নির্বাচিত গল্প, প্রেম বিরহের অনুকাব্য, একদা চৈত্রের রাতে, ছায়ামুখ ও আশ্চর্য কুহক, জসিম মল্লিক: আমার মা, স্মৃতির নির্জনতা, পরীর মত মেয়ে, কামরুন নাহার ডলি: প্রকৃতি ও উচ্ছাস, খায়রুল আনাম: ভাষা-স্বাধীনতা, রবীন্দ্র-নজরুল, খালেদ সরফুদ্দীন: কুটুম কুটুম, মনজুর কাদের: গোলাপ বাগান আগলে রাখি, খালেকুজ্জামান মতিন: উজানে বাঁধ ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, মিশুক সেলিম: জোছনার জলমাখা পদ্ম, মোমীনুল হক: অস্তরাগ, মাকসুদা আহমেদ: বৃষ্টি তোমার ছোঁয়া। মনিজা রহমান: ঝর্ণার জলের কারাগার, অরপি আহমেদ: আগুণমুখী!, লাকসাম জংশন!, সোনাপুরের সুলতানা, কাজী জহিরুল ইসলাম: রাস্তাটি ক্রমশ সরু হয়ে যাচ্ছে, সূর্যাস্তের পরের ফিরিস্তি, জালালুদ্দিন রুমির কবিতা, রিমি রুম্মান: পূবের আকাশে ভোরের অপেক্ষায়, রোমেনা লেইস: মেঘের দেশে মেঘ বালিকা, শামস আল মমীন: নির্বাচিত কবিতা, শাহ আলম দুলাল: সব কিছুতেই একটা কম, শামস চৌধুরী রুশো: গোলকের উল্টো পিঠে, সিনহা আবুল মনসুর: এক মুক্তিযোদ্ধার না বলা কথা, তমিজ উদদীন লোদী: নির্বাচিত কবিতা, আনন্দময় নৈরাশ্য ও ইস্পাত মানুষেরা, ই্উসুফ রেজা: পাখী জীবন।

ইউনাইটেড স্টেট পোস্টাল সার্ভিস

কর্তৃক ‘অমর একুশে’র অনন্য স্বীকৃতি

বাংলাদেশের অমর একুশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভের দ্বিতীয় বারের মত যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগ নিউইয়র্কের জ্যাকসন হ্টাসের পোস্ট অফিসে গতকাল একুশে ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টায় একটি স্মারক সিলমোহর চালু করেছে। আমেরিকার ডাক বিভাগ (টঝচঝ)এ উপলক্ষ্যে ‘ঈবষবনৎধঃরহম ২৭ ণবধৎং ড়ভ ঊশঁংযবু ঋবনৎঁধৎু’ উইইখ ওহঃবৎহধঃরড়হধষ গড়ঃযবৎ খধহমঁধমব উধু একুশে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ শীর্ষক একটি বিশেষ সিলমোহর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যবহার করবে। মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের ডাকবিভাগ এই বিশেষ সিলমোহর (চরপঃড়ৎরধষ ঈধহপবষষধঃরড়হ) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ট্রাই স্টেট পোস্টাল সার্ভিস কর্তৃক (নিউইয়র্ক, নিউজার্সী ও কানেকটিকাট) কর্তৃক আয়োজিত পোস্টাল স্মারক উদ্বোধন করেন নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, সংস্কৃতি মন্ত্রীসহ ৫০ জন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিকে একুশ উপলক্ষে প্রকাশিত বিশেষ স্মারক ডাকটিকেট ও সীলমোহরসহ মুক্তধারা ফাউন্ডেশন থেকে চিঠি পাঠানো হয়।

২১শে ফেব্রুয়ারিকে ইউনেস্কো, জাতিসংঘ ও নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃক আন্তর্জাতিক মতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির পর ইউনাইটেড স্টেট পোস্টাল সার্ভিস স্মারক কর্তৃক এই ডাক টিকেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে দিনটিকে আরো গৌরবান্বিত করলো বলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জ্যাকসন হাইটস পোস্ট অফিসের কর্মকর্তা প্যাট্রিসিয়া তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। বিশিষ্ট সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ এর সঞ্চালনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানটির উদ্বোধক শামীম আহসান বলেন, আন্তর্জাতিক বলয়ে একুশকে তুলে ধরার জন্য মুক্তধারা ও বাঙালির চেতনা মঞ্চ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে। এ সকল কার্যক্রম বিদেশে দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্বল থেকে উজ্বলতর করে। এটিকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহা বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটিকে প্রতি বছরই নতুন নতুনভাবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করে চলেছি। বাঙালীর চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাদশা বলেন, বাঙালির চেনাকে সমুন্নত রাখতে আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে। একুশের প্রত্যেকটি অনুষ্ঠান সফল কওে তোলার জন্য তিনি সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উল্লেখ্য, স্মারক সিলমোহরটির ডিজাইন করেছেন নিউইয়র্ক প্রবাসী শিল্পী কে সি মং।

১৯৯২ থেকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সামেন অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে অভিবাসী বাঙালিরা প্রতি বছর অমর একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করে থাকে। মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালির চেতনা মঞ্চের যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সর্বশেষ কর্মসূচী ছিল আজ। এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী একুশের গ্রন্থমেলা। ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয জাতিসংঘের সামনে নির্মিত শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ। উক্ত অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ডঃ তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম , জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুন বিন মমীন ও কনসাল জেনারেল শামীম আহসানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যোগ দেন। বাংলাদেশের ডাচবাংলা ব্যাংকের সহযোগিতায় মুক্তধারা ফাউন্ডেশন গত বছর জাতিসংঘের সামনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ভাস্কর্য প্রদর্শণের পর এবার ইউনাইটেড পোস্টাল সার্ভিস কর্তৃক স্মারক সীলমোহর প্রকাশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে নতুন মাত্রা যোগ হলো বলে বিভিন্ পর্বে আলোচকরা মতামত ব্যক্ত করেছেন।