সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

দেশব্যাপী বর্ধিত ৪৮ ঘন্টার হরতাল চলছে

hartal-road-fire_226238

 

লাগাতার অবরোধের মধ্যে দেশব্যাপী ২০ দলীয় জোটের ডাকা ৭২ ঘন্টার হরতাল শেষে বর্ধিত ৪৮ ঘন্টার হরতাল চলছে। বুধবার ভোর ৬টায় ৭২ ঘন্টা হরতাল শেষ হওয়ার আগেই শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বর্ধিত আরো ৪৮ ঘন্টার হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি জোট।জোটের পক্ষে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আগামী শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত হরতালের সময়সীমা বাড়ানোর ঘোষণা দেন।এছাড়া বৃহস্পতিবার সারা দেশে জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও সব মহানগরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিলেরও ঘোষণা দেয়া হয়।গত তিন সপ্তাহ ধরে প্রতিটি কর্মদিবসে হরতাল পালন করছে বিএনপি জোট।বুধবার সকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষিপ্ত মিছিল-পিকেটিং, অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে তেমন কোন সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।হরতাল-অবরোধকে ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের যৌথ টহল টিম নামানো হয়েছে। দেশের অন্যান্য নগর মহানগর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। হরতাল-অবরোধের সমর্থনে মিছিল-পিকেটিং ঠেকাতে সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো।এছাড়া অবরোধ-হরতালে যে কোন সহিংসতা মোকাবেলায় পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি সারা দেশে বেশ কয়েক প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সকালে হরতালে রাজধানীতে সীমিত সংখ্যক গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে প্রশাসনের সাথে বৈঠকে ঢাকা পরিবহণ মালিক সমিতির গাড়ি চালানোর আগের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বেলা বাড়ার সাথে সাথে যানবাহন চলাচল বাড়লেও পরিবহনগুলোতে যাত্রী সংখ্যা কম দেখা যায়। এছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলও ছিল কম।ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রী কম থাকায় নির্ধারিত সময়ের পর সেগুলো ছাড়ছে। তবে গাবতলি, সায়েদাবাদ ও মহাখালী থেকে দূরপাল্লার হাতে গোনা কিছু বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেলেও সেগুলোতে যাত্রী সংখ্যা ছিল কম।এদিকে দেশের বিভিন্ন নগর-মহানগরসহ জেলায়ও চলছে শান্তিপূর্ণ হরতাল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক প্রহরার মধ্যেও হরতাল-অবরোধের সমর্থনে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত মিছিল-পিকেটিং করছে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ, রাস্তায় ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঘটেছে ককটেল বিস্ফোরণ। জেলা সদর, নগর-মহানগরগুলোর আন্তঃমহাসড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরায় কিছু হালকা যানবাহন চলাচল করার খবর পাওয়া গেছে।  হরতালে রাজধানীসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম দেখা যায়।মঙ্গলবারের বিবৃতিতে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো ভয়াল ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। অবৈধ সরকার দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতে সমগ্র দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। সরকারি গুপ্তঘাতক পেটোয়া পুলিশ-র‌্যাব বাহিনী প্রতিনিয়তই বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বসতবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করার পর রাস্তাঘাটে, মাঠে-ময়দানে, খালে-বিলে, ক্ষেতে-খামারে লাশ ফেলে রেখে গ্রেফতারের দায়িত্ব অস্বীকার করছে। মিরপুরের নিহত জুয়েল, সুমন ও রবিনের গায়ে ৫৪টি গুলির চিহ্ন পাওয়ার পরও পুলিশের দাবি গণপিটুনিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। সময়ের পটপরিবর্তন হলে এসব গণহত্যায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য উপযুক্ত আদালতের আওতায় আনা হবে।চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি এবং দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে জোটের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।