রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ঢাকার বাইরে স্বস্তির বৃষ্টি

pic-21_77087

 

টানা গুমট গরমের পর অবশেষে ঢাকার বাইরে মিলেছে প্রত্যাশিত বৃষ্টির দেখা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুরসহ কয়েকটি এলাকায় অল্প সময়ের জন্য বৃষ্টি ঝরেছে। আবহাওয়া অফিসও জানাচ্ছে সুখবর। তারা বলছে, বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ায় আজ শনিবার থেকে দিনের তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে থাকবে। সেই সঙ্গে বাড়বে বৃষ্টির সম্ভাবনা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আজও হতে পারে বৃষ্টিপাত।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, আজ সিলেট, ভোলা, বরিশাল, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। এ ছাড়া দেশের সর্বত্র আকাশ থাকবে অংশত মেঘলা। তাপমাত্রা অল্প অল্প করে কমতে থাকবে। দু-এক দিনের মধ্যে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি নামলে ঝপ করে গরম কিছুটা কমবে। ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে স্বাভাবিক লঘুচাপ।
গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়- ৪১.৯। বৃহস্পতিবার ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল ৫৪ বছরের মধ্যে রেকর্ড।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সন্ধ্যা ৬টার পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা বিভাগের কয়েকটি অঞ্চলে বয়ে যেতে পারে অস্থায়ী দমকা হাওয়া ও ঝোড়ো হাওয়া। সেই সঙ্গে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি। তবে টাঙ্গাইল অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইবে মাঝারি থেকে হালকা তাপপ্রবাহ। চট্টগ্রাম বিভাগের কয়েকটি অঞ্চলেও অস্থায়ী দমকা ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি রাঙামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ফেনী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইবে মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ। খুলনা বিভাগের কয়েকটি অঞ্চলে অস্থায়ী দমকা ও ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে। তবে খুলনা, মংলা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বরিশাল বিভাগের কয়েকটি অঞ্চলে অস্থায়ী ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার কথা। তবে সেখানে কয়েকটি অঞ্চলে বইবে মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ।  সিলেট বিভাগের কয়েকটি অঞ্চলে হতে পারে ঝড় ও বৃষ্টি। অন্যত্র বইবে মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী ও ঈশ্বরদী এবং রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার কথা।
আমাদের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, একনাগাড়ে ভাপসা গরমের পর গতকাল জেলায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আর এটি কৃষকের জন্য বয়ে এনেছে দুর্ভোগ। জেলার বানিয়াচং উপজেলার পূর্ব-উত্তরাঞ্চলে শিলাবৃষ্টিতে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হচ্ছে- উপজেলা সদরের উত্তর-পূর্ব ইউনিয়ন, দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়ন, উত্তর-পশ্চিম ও কাগাপাশা ইউনিয়নের হাওরাঞ্চল। স্থানীয় লোকজন জানায়, উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের মাউথপুর, মজলিশপুর, পূর্বগড়, কামালখানি, মাথাপুর, নন্দীপাড়া, দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়নের পুরানবাগ, জাতুকর্ণপাড়া, ছিলাপাঞ্জা, পাড়াগাঁও, উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের চানপাড়া, আমিরখানি, কুতুবখানির হাওর ও বড়ইউরি।
সিলেট অফিস জানায়, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে নগরে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। এর সঙ্গে কমতে থাকে উত্তাপ। আকাশে জমতে থাকে মেঘ। ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামে অল্প বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য আবদুস সালাম কালাম জানান, বিকেলে দমকা হাওয়ার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি হয়েছে।
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে বড়লেখা উপজেলায় ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি হয়। প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী বৃষ্টিতে গাছপালার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিতে সবাই খুব খুশি।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বিকেল সোয়া ৫টার দিকে মুষলধারায় নামে স্বস্তির বৃষ্টি। এ সময় নারী-পুরুষ সবাই বৃষ্টিস্নানে মেতে ওঠে। অনেকে বাসার ছাদে, ব্যালকনিতে বা খোলা মাঠে সপরিবারে বৃষ্টিতে ভিজে সেরে নেয় গোসল। ২০ মিনিট পর বৃষ্টি কিছুটা ধরে আসে।
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বিকেলে জেলায় বৃষ্টি স্বস্তি ফিরিয়ে আনে। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। চলে প্রায় এক ঘণ্টা। সেই সঙ্গে থেমে থেমে চলে বজ্রপাত। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, সন্ধ্যার পর মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতে জেলাজুড়ে স্বস্তি নেমে আসে। এর আগে বিকেল থেকে হালকা বাতাস বইতে থাকে বিভিন্ন স্থানে। অনেককেই দেখা যায় রাস্তায় বা বাসার ছাদে বৃষ্টিতে ভিজে উল্লাস করতে।