রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

চায়ের দোকানদার থেকে প্রধানমন্ত্রী

image_130933_99901

নাম নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি। ভারতের ভাবি প্রধানমন্ত্রী। গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগ সত্বেও শেষ পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তবে এক সময় তিনি ছিলেন চা বিক্রেতা। গুজরাটের রাজধানীর ভাদনগর ট্রেন স্টেশনে ডানপন্থী আরএসএসের রাজ্য সদর দপ্তর পাশে ভাইয়ের চায়ের দোকানে কাজ করতেন বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভাবি প্রধান। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোদির বিজেপির নেতুত্বাধীন এনডিএ জোট ৫৮৩টি আসনের মধ্যে ৩৩৬টি আসন পেয়েছে। যা দিল্লির মসনদে বসার জন্য বেশি হয়ে গেছে। রূপকথার মতোই চা বিক্রেতা থেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
রাজনীতিবিদ হিসেবে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তার একটি বড় কারণ তেজদীপ্ত বক্তৃতা। প্রতিপক্ষকে তুলোধুনো করে দেয়া বক্তৃতার কারণেই সমর্থকদের কাছে ত্রাতা। ভালো ছাত্র না হলেও ছিলেন ভালো তার্কিক। আগ্রহ ছিল থিয়েটারেও। বিশেষ করে, গুজরাট লোককথার গরীবের রাজা রবিন হুড ধরণের ব্যক্তিত্ব জোগিদাস খুমানের চরিত্রে বেশ কয়েকবার অভিনয় করেছেন। বিতর্ক আর থিয়েটারের অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ ভালোই প্রয়োগ করেছেন মোদি।প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আইয়ার বলেছিলেন, আমি কথা দিচ্ছি, নরেন্দ্র মোদি কখনোই দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। তবে এইআইসিসি এর বৈঠকে তিনি চা বিক্রি করতে চাইলে, তার জন্য একটা জায়গা আমি নিশ্চয় করে দেব। আইয়ারের কথাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে আজ সত্যিই প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদি।জন্ম ১৯৫০ সালে গুজরাটে। স্কুলে থাকা অবস্থায় ভাদনগর ট্রেন স্টেশনে বাবার চায়ের দোকানে সাহায্য করতেন। আঠারো বছর বয়সে বিয়ে করেন যশোদাবেন চিমনলালকে। অল্প সময়ই একসাথে কাটিয়েছেন দুজন। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন নিশ্চুপ থাকলেও, বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন চলতি নির্বাচনের সময়। একজন আচারনিষ্ঠ হিন্দু হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু বিজেপির মতাদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় সমাজ সেবক দলের প্রচারক হিসেবে ১৯৭০ সালে। পরবর্তীতে সংঘের ছাত্র সংগঠনের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। এসময়ের মধ্যেই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিকাল সায়েন্সে গ্রাজুয়েশন করে মাস্টার্স করেন গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১৯৮৫ সালে পান বিজেপির সদস্যপদ। কঠোর পরিশ্রম আর দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে ধীরে ধীরে জায়গা করে নেন দলে। দুই হাজার এক সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন মোদি। সেই থেকে এখনো পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায়, তার বিরুদ্ধে দুই হাজার দুই সালে গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগ ওঠে।২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় নরেন্দ্র মোদির নাম। এরপর থেকে নির্বাচনপূর্ব ও পরবর্তী সবগুলো জরিপে উঠে এসেছে মোদি ও তার দলের জয়জয়কার। কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদি নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে ভারতের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র হুমকির মুখে পড়বে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। অবশ্য এ ধরণের আশঙ্কাকে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতেই উড়িয়ে দিয়েছেন মোদি।