শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চায় জাতিসংঘ

khaledahasina

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংলাপের তাগিদ দিয়ে দুই নেত্রীকে চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। চিঠিতে তিনি দুই নেত্রীর দেয়া নির্বাচনকালীন সরকার প্রস্তাবের সমন্বয় করে গ্রহণযোগ্য একটি পন্থা বের করতে সংলাপে বসার পরামর্শ দেন। মহাসচিবের স্বাক্ষর সংবলিত এক পৃষ্ঠার চিঠিটি গত ২৫শে নভেম্বর নিউ ইয়র্ক থেকে পাঠানো হয়। যা কূটনৈতিক চ্যানেলে এরই মধ্যে দু’নেত্রীর কাছে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। একাধিক সূত্র মতে, দু’নেত্রীকে পাঠানো চিঠিতে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে জাতিসংঘের অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছে। সরকার ও বিরোধী দলকে সংঘাত-সহিংসতামুক্ত নির্বাচন আয়োজনে উভয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি পন্থা-পদ্ধতি খুঁজে নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘের তরফে খুব স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে, অবশ্যই নির্বাচনটি সব দলের অংশগ্রহণে এবং দেশের মানুষের চোখে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এমন নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে তার দূত হিসাবে ৬ই ডিসেম্বর জাতিসংঘের রাজনীতি বিভাগের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বাংলাদেশ সফর করবেন বলে চিঠিতে অবহিত করা হয়েছে। ওই মিশন সফল করতে উভয় পক্ষের সহযোগিতাও চেয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। দেশের সব দলের অংশগ্রহণে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনকালে প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- তা উদ্ধৃত করেই চিঠিটির সূচনা করেন বান কি মুন। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠির শুরুতেই তিনি লিখেন- ‘আপনি বলেছিলেন, আপনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে চান। সব দলকে নিয়ে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চান। এ নিয়ে সংলাপের কথাও বলা হয়েছিল। আমরাও তা প্রত্যাশা করি। আপনার ওই বক্তব্যের ফলোআপ হিসেবেই আমি লিখছি।’ ২০১৪ সালের শুরুতে নির্বাচন হওয়ার কথা। এ অবস্থায় সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। আপনার পাশাপাশি একই ধরনের চিঠি আমি বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও দিয়েছি। ওই চিঠিতে গঠনমূলক ও অর্থবহ সংলাপের জন্য তাকে এবং তার দলকে উদ্বুদ্ধ করেছি। চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আপনি এবং বিরোধীদলীয় নেতা বিস্তারিত দু’টি প্রস্তাব দিয়েছেন। এ দু’টি প্রস্তাবের সমন্বয়ে কিভাবে উভয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি পন্থা খুঁজে নেয়া যায়- তা নিয়ে রাজনৈতিক সংলাপ প্রয়োজন। একটি অর্থবহ এবং গঠনমূলক সংলাপের মধ্য দিয়ে সব বিরোধী নিষ্পত্তি ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।’ বান কি মুন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনের পরিবেশ তৈরিতে উভয়কে সাহায্য করতে আমার প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘ সহকারী মহাসচিব তারানকো আগামী ৬-৯ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন। তিনি এর আগেও দু’বার বাংলাদেশে গেছেন। তার এবারের মিশনে আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সাক্ষাৎ পেলে আমি আনন্দিত হবো। রাজনৈতিক সঙ্কট ও সহিংসতার প্রেক্ষাপটে সংলাপের তাগিদ দিয়ে গত মে মাসে প্রথম দফায় দু’নেত্রীকে পৃথক চিঠি দেন বান কি মুন। এরপর আগস্টে দুই নেত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে সব দলের অংশগ্রহণে এখানে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে বিশ্ববাসীর প্রত্যাশার বিষয়টি জানিয়েছিলেন তিনি।এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরী। বিরোধী নেতাকে দেয়া চিঠিতেও সংলাপের তাগিদ দেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

উৎস- মানবজমিন

Leave a Reply