দেশব্যাপী সহিংসতা ও নাশকতা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে আছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বিশেষ করে সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে হামলার পর এই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে বিশেষ অভিযানে চালানো হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। দলটির সূত্রগুলো বলছে, নাশকতা ও নৈরাজ্য প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি থাকবেন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ-সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। দলীয়প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন পর্যন্ত মাঠে থাকবেন তাঁরা। আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘আতঙ্কে আছি। কী যে হচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। এলাকায় অনেক দিন যাইনি। আসাদুজ্জামান নূর যেখানে আক্রমণের শিকার হন, সেখানে আমাদের কী হবে?’ আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, ‘নাশকতা’ প্রতিহত করতে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে ইতিমধ্যেই দলের নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিজয় দিবসের পর থেকেই সহিংসতার বিরুদ্ধে ‘চূড়ান্ত’ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে দলটি। পাশাপাশি নির্বাচনী মাঠ দখলে নির্বাচনের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন ক্ষমতাসীনেরা। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানাচ্ছে, সারা দেশে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব রুখতে গত বুধবার থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিশেষ বার্তা পাঠানো শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত সাতক্ষীরা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খুলনা, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়া, নড়াইল, ঝিনাইদহ, গাইবান্ধা ও জয়পুরহাটে ১৭ ডিসেম্বর থেকে বিশেষ অভিযানে নামতে পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইতিমধ্যে সাতক্ষীরায় বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। কারণ, এসব এলাকায় নাশকতা অব্যাহত আছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে পুলিশের গাড়ি এবং আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, আর নয়। এখন পাল্টা আঘাত করতে হবে। আর সেটা শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বর থেকেই।’ জনগণের জানমাল রক্ষায় মাঠে নামা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াত-শিবির যেভাবে সহিংসতা, নাশকতা চালাচ্ছে, তাতে আমাদের মাঠে না নামা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে মাঠে নেমে মরণকামড় দেওয়া হবে। কারণ তাঁরা নিরীহ মানুষের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।’ যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বলেন, ‘রাজনৈতিক দায়িত্ব থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেব বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরকে মোকাবিলায় কী কর্মসূচি পালন করা যায়।’ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি সম্পদ নষ্ট ও মানুষ হত্যা কখনো রাজনীতি হতে পারে না। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা মাঠে ছিলেন, ভবিষ্যতেও মাঠে থাকবেন।
উৎস- প্রথম আলো