খবরিকা রিপোর্টঃ
ধবধবে সাদা টি-শার্ট। নিজামপুর কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের টি-শার্টে কাছের মানুষগুলোর লেখায় ভরে গেছে। গত ২৮শে নভেম্বর রোজ বুধবার লেখালেখির লগ্ন এসেছে সবার মাঝে। এই সময় দেখা গেল একজন বন্ধু আরেক বন্ধু টি-শার্টে লিখেছে ‘তোর জন্য একটা ছেলে আজও ভীষণ একা’, সাইলেন্ট সুন্দরি, তুই ছিলি হাজারো ছেলের ক্রাশ । এই হচ্ছে র্যাগ ডে। বুধবার সারাদিন নিজামপুুর ক্যাম্পাসে কামরুল ইসলাম ও অনুপমা জ্যোতির সঞ্চলনায় বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে দৌড়াদৌড়ি এভাবে পার হয় জীবনের সব থেকে সেরা দিনগুলো। কখন যে সময় চলে যায় কেউ টেরই পায় না। চারটি বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টুং করে বেজে ওঠে বিদায়ের ঘণ্টা। শিক্ষাজীবনের সেই মধুময় দিনগুলো বিদায়ী শিক্ষার্থীর পিছু ডাকে। আর মধুময় দিনগুলোর স্মৃতি হৃদয়ের ফ্রেমে বেঁধে রাখতে, স্মরণীয় করে রাখতে আনন্দে, উচ্ছ্বাসে, রঙে-রূপে এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে বিদায় অনুষ্ঠান পালন করেন শিক্ষার্থীরা। র্যাগ-ডে একটি ইংরেজি প্রবাদ। যার বাংলা অর্থ পড়ালেখা শেষের হৈচৈপূর্ণ দিন। ঘটা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের এ বিদায়ী অনুষ্ঠান পালন করেন নাচ-গান আর হাসি-তামাশার মাধ্যমে।
নিজেদের মেধার সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটিয়ে নিজামপুর কলেজে অনার্সে ভর্তি হয়েছিল চার বছর আগে। একেক করে ৪টি বছর পার করে দিল এবং শেষ করে ফেলল অনার্স পাঠ। এই চার বছরে ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কত মজার স্মৃতি, আনন্দ-বেদনার বিভিন্ন ঘটনা। সবার বক্তবে এমন্টি পুটে ওঠেছে। এমন সময় সবার মাঝে আনন্দটুকু যেন একটু কষ্টের এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস জীবনের নানান স্মৃতিচারণ করে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
এই সময় বিদায় বেলায় কামরুল ইসলাম বক্তবে বলেন, আমরা একসঙ্গে একটা পরিবারের মতো ছিলাম। অনেক আনন্দ উৎসব করলেও প্রিয় ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে হবে ভেবে খারাপ লাগছে। স্মৃতি হয়ে থাকবে ভালোবাসার নিজামপুর কলেজ ক্যাম্পাস। অনুষ্ঠান সাফল্যমতি করায় অনুষ্ঠান বিষয়ক কমিটির নাহিদ মাহমুদ, আলী চৌধুরি, মাঈনুল চৌধুরি সবুজ, শাখাওয়াত হোসের এবং ফরহাদ হোসেনের এর অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।
শুরুটা হয়েছিল কলেজে আলপনা আঁকা এবং সকালে র্যালির মাধ্যমে এরপর পবিত্র কুরআন থেকে তেলোয়াত, গীতা পাঠ, জাতীয় সংগীত,কেক কাটা, আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক পর্ব।অনুষ্ঠান সমাপ্তির আগ মুহুর্তে আবির মেখে এবং সম্মানিত শিক্ষক দের সহ নিয়ে ফটোসেশন করা হয়। অনুষ্ঠানের এক মুহূর্তে এসে একে অন্যকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সবশেষে সবাই যেন বলছেন বিদায়, ভালো থেকো বন্ধু। ‘দেখা হবে বন্ধু কারণে বা অকারণে।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন, নিজামপুর কলেজের সকল শিক্ষক শিক্ষিকা, মীরসরাই প্রেস ক্লাবের সভাপতি দৈনিক যুগান্তর ও দৈনিক আজাদী মীরসরাই প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান পলাশ, মীরসরাই প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি রণজিত ধর, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন তপু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসাইন, নিজামপুর কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী সহ প্রমুখ।