রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

নরসিংদীতে ছাত্রদল-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে যুবলীগকর্মী নিহত

image_2

নরসিংদীতে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে আনোয়ার হোসেন (৩৫) নাম এক যুবলীগকর্মী নিহত হয়েছে। এ সময় পাঁচদোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আরো ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলার পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল নজরুল ক্লিনিকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। নিহত আনোয়ার হোসেন ঘোড়াশাল কেন্দ্র পাড়া এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে।পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে বেশ কিছু দিন যাবত ছাত্রলীগ নেতা মনিরের সাথে ও ছাত্রদল নেতা হাসেমের সঙ্গে দ্বন্ধ চলে আসছিল। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে একাধিক বার মারামারি, সংঘর্ষ, মামলা ও পাল্টা মামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনির ও তার সমর্থকরা ছাত্রদলের হাসেম ও সোহেলকে ধরে এনে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি ও ছাত্রদলে নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সন্ধায় ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের সভাপতি রতন মিয়ার নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতাকমীরা অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে ঘোড়াশাল নজরুল ক্লিনিকের পিছনে বালুর মাঠে অবস্থান নেয়। এ খবর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিরের নিকট পৌঁছালে রাত সাড়ে নয়টার দিকে মনির গ্রুপের সদস্যরা ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাচদোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মোল্লা, ছাত্রলীগকর্মী শহিদুল ও যুবলীগকর্মী আনোয়ার হোসেন গুরুতর আহত হয়। পরে খবর পেয়ে ঘোড়াশাল পৌর মেয়র শরিফুল ইসলাম ও যুবলীগ নেতা জাবেদ তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে পাঠায়। কর্তব্যরত চিকিত্সক যুবলীগকর্মী আনোয়ার হোসেন আনুকে মৃত ঘোষণা করে। নিহত আনোয়ারের মাথায় ও শরিরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। অপরদিকে হাসপাতালে আনার পর ছাত্রলীগ নেতা ইয়াসিন মোল্লা ও ছাত্রলীগকর্মী শহিদুলের অবস্থার অবনতি হলে চিকিত্সক তাদেরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনার পর আতঙ্কে ঘোড়াশাল বাজার ও আশপাশের এলাকায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এলকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।অপর একটি সূত্র থেকে জানা যায়, সম্প্রতি বিরোধী দলের হরতাল ও অবরোধের কর্মসূচি সফল করতে ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের সভাপতি  রতন মিয়ার নেতৃত্বে ৭/৮ জনের একটি গ্রুপ পলাশ ও ঘোড়াশাল এলাকায় যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে ছাত্রলীগ নেতারা তাদের মারপিট করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সজিব হোসেন দাবি করেন, আসছে নির্বাচনে দলীয় কর্মকাণ্ড নিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি কারিউল্লাহ মতবিনিময় সভা করছিল। এ সময় পৌর ছাত্রদলের সভাপতি রতনের নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে হামলা চালালে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিকালের সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে রাতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উৎস-কালেরকন্ঠ

Leave a Reply