শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

সুরচর্চা সঙ্গীত পরিষদের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা

c64e44

এম.ইমাম হোসেন ঃ ঝিমিয়ে পড়া মূল ধারার সাংস্কৃতিক চর্চার সাবলিল অঙ্গনকে জাগিয়ে তোলার প্রত্যয়ে মীরসরাইয়ে সুর চর্চা সঙ্গীত পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠা বাষির্কী, আলোচনা সভা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গুণীজন সংবর্ধনা গত ১০ মার্চ শুক্রবার বিকাল ৩টায় মীরসরাই মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সুরচর্চার অধ্যক্ষ সঞ্জীব কুমার নাথ এর সভাপতিত্বে, আবৃত্তিশিল্পী মাহ্‌ফুজুল আসাদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ অধ্যাপক পন্ডিত স্বর্ণময় চক্রবর্তী । স্বাগত বক্তব্য রাখেন মীরসরাই কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আবছার। এরপর ধারাক্রমে সূচনাতেই শিশুদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় দলীয় সঙ্গীত “একি অপরুপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী জননী” পরিবেশনা করেন সুর চর্চা সঙ্গীত পরিষদের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মীরসরাই পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন। এরপর আদৃতা নাথ পুজা এর কণ্ঠে রবীন্দ্র সংঙ্গীত ‘আজ জোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে’ গেয়ে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাকে মুগ্ধ করেন। মীরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইয়ামিন শাহীন কাকলী, সবাইকে শুভেচ্ছা জানান, এরপর নজরুল সংঙ্গীত পরিবেশন করে ২০১২ সালের জাতীয় পর্যায়ের প্রথম স্থান বিজয়ী প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে পুরস্কার প্রাপ্ত আনিম দেব নাথের কণ্ঠে ‘আজও মধুর বাঁশরী বাজে’ । চট্টগ্রাম সমীকরন থিয়েটার দল প্রধান বিশিষ্ট নাট্যকার ও সাস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অলক মাহমুদ দর্শক শ্রোতাকে শুভেচ্ছা জানান এবং আগামীতে সুর চর্চা সঙ্গীত পরিষদকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন, এরপর দেশাত্ববোধক সঙ্গীত গ্রামীন জনপদের জনপ্রিয় গান পরিবেশনা করেন কৃপা রাণী দেবী, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে, মাঝি পাল উড়াইয়া দে’ গানে দর্শক শ্রোতকে উত্তাল করে দেয়। মীরসরাই প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান পলাশ তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের মনোবৃত্তি প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম, সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে মানুষ বিকশিত হয়। রবীন্দ্র সংঙ্গীত ‘মোর ভাবনারে কে হাওয়ায় মাতালো’ গানটি পরিবেশনা করেন অপির্তা দাশ, নজরুল সংঙ্গীত পরিবেশন করেন অর্পিতা নাথের কণ্ঠে ‘বেল ফুল এনে দাও, চাইনা বকুল’,। পূজা রাণী দেবী কণ্ঠে দেশাত্ববোধক সঙ্গীত পরিবেশনা করেন ‘ও আমার বাংলা মা তোর আকুল করা’ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংবর্ধিত অতিথি কবি ও সাহিত্যিক কাইয়ুম নিজামী । তিনি বলেন, আমার প্রিয় মীরসরাইতে এতো সুন্দরভাবে শিশুরা এতো ভালো গায় ভাবতেই বিমোহিত আমি। তিনি এখন থেকে এমন সব কাজের সাথে নিজের একাত্মতা ঘোষনা করেন। রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন অর্পিতা দাস ‘জাগরণে যায় বিভাবরি, আখি হতে নিল হরি’, নজরুল সঙ্গীত পরিবেশনা মুগ্ধ করেন মোস্তারী খানম অপি ‘আমার সাম্পান যাত্রীনালয়, ভাঙ্গা আমার তরী, রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশনা করেন বিথী বণিক পূজা ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে, তাই হেরি তাই সকল খানে, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এর অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক বলেন মীরসরাই এর মতো গ্রামীন জনপদে এতোগুলো নাচ গান জানা প্রতিভা দেখে গর্বে আমাদের বুকটা ভরে উঠেছে। তিনি সকল শিক্ষার্থীকে সংগীতের মূলধারা তথা উচ্চাঙ্গ সংগীতের চর্চার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। এরপর পুষ্পিীতা রাণী দেবী পরিবেশন করে ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি’, রবীন্দ্র সঙ্গীত ধ্রুব নাথের কণ্ঠে ‘যদি তোর ডাক শোনে কেউ না আসে, তবে একলা চলরে, দেশাত্ববোধক গান পরিবেশন করেন আফিয়া ফারজানা ‘দোয়েল শ্যামা ডাকলে আহা শুনতে লাগে বেশ’ পুলক সরকারের কণ্ঠে ‘জন্মছি এই সোনার দেশে তাইতো আমি ধন্য, তছমিন জাহান কণ্ঠে ‘এই যে, আমার মাতৃভুমি এই যে আমার দেশ’ দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। গানের সাথে সাথে শুরু হয় নৃত্য পরিবেশনা করেন মিথিলা নাথ (সাক্ষি), সুদিপ্তা দাস(রিমঝিম), অর্পিতা নাথ, তাবিনা চৌধুরী তিনা, তন্দ্রা দাস ওচিত্য, অদ্রি দে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের নৃত্য তালে তালে মুগ্ধ করে। আধুনিক গান পরিবেশন করেন মিথিলা নাথ (সাক্ষী) কণ্ঠে ‘মধু মালতী ডাকে আয়, ফুল ফাগুনের এই খেলায়’, প্রান্ত দেবনাথ কণ্ঠে ‘কি আছে জীবনে আমার, যদি তুমি না থাক পাশে মরণে, বৃষ্টি সুত্রধর কণ্ঠে ‘যার ছায়া পড়েছে- মনের আয়নাতে, সেকি তুমি নও-ওগো তুমি নও, নবনিতা বড়ুয়া(উপমা) কণ্ঠে ‘আকাশের ঐ মিটি মিটি তারা’র সাথে কইব কথা নাইবা তুমি এলে’,২০১০ সালে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকারী ইতি বড়ুয়ার কণ্ঠে ‘জানিনা সে হৃদয়ে কখন এসেছে’প্রাণের মাঝে দোলা দিয়েছে’ উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে। দিয়া রাণী দেবী কণ্ঠে প্রত্যয়ের গান ‘হার জিৎ চির দিন থাকবে’ তবুও এগিয়ে গেতে হবে, লোক ও পল্লীগীতি গান পরিবেশনা করেন ফাইযা তাসমিয়াহ্‌ ‘মিলন হবে কত দিনে আমার মনের মানুষের সনে’ চৈতী রাণী দেবী কণ্ঠে ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’, কাশব আকিফ গলায় ‘গাড়ি চলেনা চলেনা চলেনা রে’, শিমলা সূত্রধর কণ্ঠে ‘মাটি পিঞ্জিরার মাঝে বন্দি হইয়ারে’ কান্দে হাছান রাজার মন মনিয়ায় রে’, পুর্ণতা রায় (কথা) কণ্ঠে ‘প্রাণ সখিরে ঐ শোন কদম্ব তলায় বংশী বাজায় কে’, তন্দ্রা দাস ‘আপন ঘরের খবর নেওয়া’ অনায়াসে দেখতে পাবি কোন কানে কার বারাম খানা, সুমন চন্দ্র নাথ কণ্ঠে ‘ও যার আপন খবর আপনার নেয় না’, মুক্তা রাণী দেবী গলায় ‘ ওরে সাম্পানওয়ালা তুই আমারে করলি দিওয়ানা’, অনন্য দে নিলিম কণ্ঠে ‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’, হিমেল নাথ পৃথু ‘হাওয়ার উপর চলে গাড়ি লাগেনা পেট্রোল ডিজেল’, সুরচর্চা সঙ্গীত পরিষদের ক্ষুদে ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ পরিবেশনা দলীয় সঙ্গীত ‘এক দিন ছুটি হবে অনেক দুরে যাবো’ নীল আকাশে সবুজ ঘাসে খুশিতে হারাবো’, এবং দুর্গম গিরী কান্তা মরু দুস্তর পারাবার রুহে লংঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুশিয়ার, সঙ্গীত পরিচালনা করেন, সুর চর্চা সঙ্গীত পরিষদের অধ্যক্ষ সঞ্জীব কুমার নাথ। অনুষ্ঠানে সাহিত্য অবদানের জন্য কবি ও সাহিত্যিক কাইয়ুম নিজামী এবং সাংবাদিকতার জন্য চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিককে ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।