নিজস্ব প্রতিবেদক:
আর কয়েক দিন পর শক্তিরুপিনী, অসুর বিনাশিনী মা দূর্গা দেবীর পূজা শুরু হতে যাচ্ছে। দেশের সনাতনী সম্প্রদায়ের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে সনাতনী সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে আন্দনের বন্যা বইতে শুরু করেছে। এর মধ্যে মৃৎ শিল্পীরা তাদের হাতের কাজ গোছাতে শুরু করেছেন। পূজা মন্ডবের নেতৃবৃন্দ নিচ্ছে চুড়ান্ত প্রস্তুতি। সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে প্রতি বছর বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে শারদীয়া দূর্গা পূজা উৎযাপন করা হয়ে থাকে।
এবার মীরসরাইয়ের ১৬টি ইউনিয়নের ৮৩টি পূজা মন্ডপে হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। সরেজমিনে দেখা যায় যে মীরসরাই উপজেলার করেরহাট, বারইয়ারহাট, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মিঠাছরা, মিঠানালা, রাজাপুর, মীরসরাই, মলিয়াইশ,আবুতোরাব, বড়তাকিয়া, কমলদহ, সাতবাড়িয়া এবং জাফরাবাদ সহ সকল মন্দিরে চলছে শেষ মহুর্তে প্রতিমা তৈরির কাজ।
সরেজমিনে বিভিন্ন পুজা মন্ডব ঘুরে দেখা গেছে, মৃৎ শিল্পীদের নির্ঘুম রাত কাটছে। ঠিক সময়ে খাওয়া দাওয়ার করার সময় নেই। রাত দিন শুধু কাজ আর কাজ।
১৫নং ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের চন্ডি মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কারিগর আদিত্য আচার্য বলেন, এই বছর ৪৩টি প্রতিমা গড়ছি। ইতিমধ্যে সব কয়টি প্রতিমার মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে রংয়ের কাজ। তবে তার তৈরিকৃত প্রতিমার পরিমাণ চট্টগ্রামে বেশি। সময় স্বল্পতার কারণে বেশি প্রতিমার অর্ডার নিতে পারেননি তিনি।
প্রতিমার কারিগররা জানায়, প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত হয় মাটি, খড়, পাট, কাপড়, রং ইত্যাদি। কারিগরের সুনিপুন হাতের কাজ প্রতিমাকে আরো বেশি উজ্জ্বল ও সুন্দর করে। তাই দূর্গা পূজা পরিচালনা পরিষদ সব সময় দক্ষ কারিগর খুঁজে থাকেন।
মা দুর্গার স্মরণে এই শরতের আগমনী বার্তা জানান দিচ্ছে ঢাক ঢোলের শব্দে মুখরিত হবে শহর থেকে অজপাড়াগাঁ এর সর্বত্র । মায়ের আশীর্বাদ নিতে পুজারীদের অঞ্জলী প্রদান এবং আশীর্বাদ গ্রহণের এই বড় ধর্মীয় উৎসব গ্রাম বাংলার আবহমান কাল থেকে একটি সার্বজনীন উৎসব হিসেবে সুপরিচিত। হিন্দু ধর্মীয় আয়োজন হলে ও সর্বস্তরে এর প্রভাব যথেষ্ট উৎসবমুখর। দেওয়ানপুর শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির কমিটির সভাপতি বাবুল সেন জানান, আগামী ৬ অক্টোবর মহাপঞ্চমীতে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের শুরু। পরদিন মহাষষ্ঠী পূজা থেকে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ। ১১ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
প্রতিবছর অধির আগ্রহের সাথে শারদীয়া দূর্গা পুজার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। পূজা উপলক্ষে প্রতিটি মন্দিরে বাড়তি আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়। এছাড়া থাকে বাড়তি নিরাপত্তা। প্রতিটি বাড়িতে তৈরি করা হয় নারিকেলের নাড়ুসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার।মীরসরাই পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি উত্তম কুমার শর্মা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও ৮৩টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর মধ্যে উপকূলীয় ও মহাসড়ক সংগলœ ১০টি মন্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নিরাপত্তার ব্যাপারে মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ এম কে ভূঁঞা ও জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবির বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘেœ পালন করতে সব মন্ডপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।