সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

আজ ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ

92531457215346_Mash-Dhoni

এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ছিনিয়ে নিয়ে নতুন এক ইতিহাস গড়তে আজ রবিবার ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। অবশ্য নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েই ১৩তম এশিয়ার কাপ টি২০ ক্রিকেটের ফাইনালে ওঠেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এখন টাইগারদের স্বপ্ন প্রথমবারের মত এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় পরা। তাই ফাইনালেও ভারতের সামনে নিজেদের সেরা পারফরমেন্সটা প্রদর্শনে মুখিয়ে আছে মাশরাফির দল। আজ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের ফাইনালটি শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।
২০১২ সালের এশিয়া কাপের ওয়ানডে ফরম্যাটের ফাইনালে উঠেছিলো বাংলাদেশ। মাত্র ২ রানে ম্যাচ হেরে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরতে পারেনি টাইগাররা। তবে গেল বছর থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটে বহুগুনে বদলে গেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পাশাপাশি ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিজেদের বদলে যাবার প্রমাণটা হাতে-নাতেই দেয় টাইগাররা। তাই বাংলাদেশকে নিয়ে এশিয়ার কাপে স্বপ্ন দেখতে থাকে ক্রিকেটনুরাগীরা। কারণ ২০১২ সালের আক্ষেপটা যে পাহাড়ের মত বিশাল।
টি২০বিশ্বকাপ দরজার সম্মুখে থাকায়, এশিয়ার কাপটি টি২০ ফরম্যাটে আয়োজনের ঘোষণা দেয় আয়োজকরা। তাতেই হৃদয় ভাঙ্গার উপক্রম বাংলাদেশের। কারণ টি২০ ফরম্যাটে যে এখনো বদলে যায়নি টাইগাররা। কিন্তু ভক্তদের মনের সেই শংকাটি ভুল প্রমাণ করেছেন মাশরাফি-সাব্বির-মাহমুদুল্লাহরা। ভারতের কাছে হার দিয়ে শুরু করলেও, নিজেদের নিয়ে চিন্তায় পড়েনি বাংলাদেশ। কারণ মাশরাফি যে দলকে নির্ভার থাকার সবধরনের ওষুধই দিয়েছেন। হতাশা যেন দলের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারেন, ম্যাশের এমন ছায়াও রয়েছে দলের উপর।
তাই বাজেভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে উদগ্রীব ছিলো বাংলাদেশ। বাঘের থাবা কতটা ভংকর হতে পারে তা দেখেছে পুচকে দল সংযুক্ত আরব আমিরাত। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৫১ রানে হারায় বাংলাদেশ। কিন্তু তা দেখেও সর্তক হতে পারেনি শ্রীলংকা। পরের ম্যাচেই শ্রীলংকাকে বাঘের ভংকর থাবা মেড়ে বসে মাশরাফি বাহিনী। ২৩ রানের জয়ে টুর্নামেন্টে মোট ৪ পয়েন্ট অ্যাকাউন্টে যোগ করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। ফলে লীগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে সহজ এক সমীকরনের সামনে পড়ে স্বাগতিকরা। আর তা হল- পাকিস্তানকে হারালেই বীরের বেশে ফাইনালে যাবে বাংলাদেশ।
এমন সমীকরনে যেন আত্মবিশ্বাসে ফুলেফেঁপে উঠে আল-আমিন-তাসকিন-সৌম্য-মাহমুদুল্লাহ-মাশরাফিরা। ঐ ম্যাচের শুরু থেকে পাকিস্তানকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। ফলে ৭ উইকেটে ১২৯ রান করে নিজেদের সম্মান কিছুটা বাঁচায় পাকিস্তান। তবে ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দেয় সৌম্য-সাব্বির-মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং। আর পাকিস্তানকে হারের লজ্জাটা দেন বাংলাদেশ দলনেতা মাশরাফি। সাকিবের অনাকাঙ্খিত বিদায়ে পর উইকেটে গিয়েই ব্যাট হাতে নিজের সাহস দেখিয়েছেন ম্যাশ। উইকেটে গিয়েই মুখোমুখি হওয়া প্রথম দু’বলেই দু’টি ৪ হাকিয়েছেন টাইগার দলপতি। তাতেই ম্যাচ জয়ের পথটা আলোকিত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের। শেষপর্যন্ত ৫ উইকেটের জয়ে ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের নাম লেখায় বাংলাদেশ। সেই সাথে টুর্নামেন্ট থেকে পাকিস্তান ও শ্রীলংকার বিদায়ের সুরটা বাজিয়ে দেয় টাইগাররা।
বাংলাদেশ যেখানে নিজেদের সেরা পারফরমেন্স দিয়ে ফাইনালে উঠেছে, সেখানে পারফরমেন্সে উজ্জল ছিলো ভারতও। লীগ পর্বে সবগুলো ম্যাচ জিতেই ফাইনালে জায়গা করে নেয় টিম ইন্ডিয়া। তবে এসব এখন অতীত। ফাইনালে মঞ্চে নিজেদের সেরাটা দেখাতে হলে অনেক হিসাব-নিকাশ নিয়েই বসতে হবে দু’দল। আর সে হিসাব-নিকাশে পারদর্শীতা দেখিয়ে এশিয়া কাপে প্রথম শিরোপা তুলে ধরতে যে একটুও কার্পন্য করবে না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, তার প্রমাণ মাশরাফির বাহিনী দিয়েেেছ বহুবার। সে বহুবারের তালিকাতে আরও একটি প্রমাণ লেখা হলে উত্তাল মার্চ মাসে বিজয়ের সুর বাজবে পুরো বাংলাদেশ জুড়ে। সেই অপেক্ষাতে পুরো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ স্কোয়াড
মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), আবু হায়দার, আল-আমিন হোসেন, আরাফাত সানি, ইমরুল কায়েস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিথুন, মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেন, নুরুল হাসান, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল ও তাসকিন আহমেদ।

ভারত স্কোয়াড
মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধিনায়ক), রবীচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিরাত বুমরাহ,শিখর ধাওয়ান, হরভজন সিং, রবীচন্দ্রন জাদেজা, বিরাট কোহলি, ভুবেনশ্বর কুমার, পাওয়ান নেগি, আশিষ নেহরা, হার্ডিক পান্ডে, পার্থিব প্যাটেল, আজিঙ্কা রাহানে, সুরেশ রায়না, রোহিত শর্মা ও যুবরাজ সিং।