চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে স্কুল ছাত্রকে অপহরণের পর হত্যা করেছে অপহরণ কারীরা। ঘটনার ৬ দিন পর শুক্রবার সকাল ১০টা আসামীদের সীকারোক্তিতে গহীন পাহাড়ের নীচ থেকে শাকিবের ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। নিহত স্কুল ছাত্র ফারহান শাকিব (১৫)। সে উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ধুম ইউনিয়নের মোবারকঘোনা গ্রামের বসির উল্লাহ ভূঁইয়া বাড়ীর নাছির আহম্মদের ছোট ছেলে। সে জেবি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্র। পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ জুন শনিবার অনুষ্টিত তার পরীক্ষা শেষে বাড়ীতে ফিরে। বিকেলে বাড়ী থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। এসময় তার পরিবার বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে সন্ধান না পেয়ে পরদিন ৭ জুন তার ভাই রুবেল বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। এরপর জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই হামিদ বিভিন্নস্থানে সন্ধান করতে থাকে। এক পর্যায়ে নিহত শকিবের ব্যবহৃত মোবাইলের কল লিস্ট চেক করে তার প্রতিবেশী সরওয়ারের সংশ্লিষ্টতা পায়। এর পর পুলিশ তার ভাই হোসনে মোবারক রুবেল ও তার মা স্বপ্নাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং কললিষ্টের মাধ্যমে একই এলাকার কামাল মেম্বারের ছেলে শহীদুল ইসলাম (২৪) কে ফেনী থেকে র্যাব-৭ আটক করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে হত্যার রোম হর্ষক বিবরণ। এসময় শহীদ জানায়, শাকিবের প্রতিবেশী স্থানীয় দোকানি সরওয়ার দীর্ঘদিন আর্থিক সংকটে ছিলো। এদিকে শাকিব এবং তার পরিবারের সাথে সরওয়ারের ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে সরওয়ার টার্গেট করে শাকিবকে। আর সেই মোটা অংকের টাকার লোভে ঘটনার দিন বিকেলে শাকিবকে তার শশুরবাড়ী নিয়ে যাবে বলে মোবাইল ফোনে তার দোকানে ডেকে আনে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে করেরহাট বাজারে গেলে সেখান থেকে বাকী অপহরণ কারীরাসহ একজোট হয়ে তাকে করেরহাটের গহীন জঙ্গলে নিয়ে যায় এবং এর পর তারা মুক্তি পনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। এসময় সরওয়ার তাকে জিজ্ঞস করে বাড়ী থেকে কি বলে এসছে? তখন শাকিব বলে, সরওয়ারের শুশুর বাড়ী যাওয়র কথা তখন ঘটনার মোটিভ পাল্টে গিয়ে মুক্তিপণ না চেয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। একপর্যায়ে মুক্তিপণ নিয়েও এঘটনা থেকে রেহাই পাবেনা ভেবে অপহরণ কারীরা ওই রাতেই তাকে জবাই করে হত্যা করে মস্তক ও হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে লাশ স্থানীয় নয়টিলা মাজার এলাকার পাহাড়ের চুড়া থেকে প্রায় ৪০০ ফুট নীচে ফেলে দেয়। এ হত্যাকান্ডে সরওয়ারের নেতৃত্বে মোট চারজন অংশ নেয়। এদিকে নিহতের বাড়ী গিয়ে দেখা যায়, তার পরিবার এবং সহপাঠিদের আর্তনাদে এলাকার আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে উঠেছে। তার সহপাঠি অজিৎ, নোমান, শাখাওয়াত, আসিব, ফারুক প্রমুখ তারা বলে, শাকিব খুব শান্ত প্রকৃতির ছিলো। সব সময় তাদের সাথে হাসি ঠাট্টায় মেতে থাকত। এভাবে সে পর পারে চলে যাবে আমরা ভাবিনি। শাকিবের চাচাতো ভাই নাইম ও মনছুর বলেন, সে এত শান্ত ছিলো যে, তার তুলনা হয় না। এসময় তার সহপাঠি এবং স্থনীয়রা এ হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবি করেন। এবিষয়ে জোরাগঞ্জ থানার ওসি এ. কে. এম লিয়াকত আলী বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত ২জনকে আটক করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা জলছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে নিহতের ভাই রুবেল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা নং (৯) দায়ের করেছে।