বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

৭ খুনের দায় সরকার এড়াতে পারে না

24963_es

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের দায় সরকার এড়াতে পারে না। এ খুনের বিচার অবশ্যই করতে হবে। গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হলে শান্তি ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। আমরা আর কোন রক্ত ঝরতে দিব না বাংলাদেশে। শনিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটিতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিম ওসমানের স্মরণে ‘নাগরিক শোক সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ এসব কথা বলেন। এরশাদ বলেন, পাট, নদী বন্দরসহ নানা কারণে নারায়ণগঞ্জের একটা ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ এখন কলংকিত। এখানে রক্তের দাগ লেগে গেছে। এ রক্তের দাগ চিরকালের জন্য মুছে ফেলতে হবে। শোক সভায় নাসিম ওসমানের প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, নাসিম ওসমান আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে। নাসিম ওসমান ছিলেন আমার সহযোগী, সহযোদ্ধা। তাকে আমি ভালবাসতাম। সেও আমাকে যেমন ভালোবাসতো তেমনি নারায়ণগঞ্জবাসীকেও ভালোবাসতো। ভালাবাসার টানেই শোক সভাতে মানুষের ঢল নেমেছে। নাসিম ওসমান ছিলেন সকলের প্রিয় পাত্র।
সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, সারাদেশে এখন সন্ত্রাস চলছে। এ সন্ত্রাস থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। নাগরিক শোক সভাতে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জাসদের সভাপতি আবদুস সাত্তার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাসিম ওসমানের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের এমপি শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের এমপি ও জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুল হাই, নারায়ণগঞ্জ জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা প্রমুখ।

শামীম ওসমানের গ্রেপ্তার দাবিতে মিছিল
এদিকে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডারের ঘটনার মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে শামীম ওসমানের কথার অডিও টেপ প্রকাশের একদিন পরেই শামীম ওসমানের গ্রেপ্তার চেয়ে মিছিল হয়েছে। ওই মিছিলের স্লোগানে শামীম ওসমান ও নূর হোসেনকে ‘গডফাদার’ উল্লেখ করে ফাঁসি দাবি করা হয়। এসময় অদূরেই উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। সেভেন মার্ডারের ঘটনার পর নূর হোসেন, র‌্যাবের চাকুরীচ্যুত তিনজন কর্মকর্তাকে দায়ী করা হলেও শামীম ওসমানের গ্রেপ্তার চেয়ে এলাকাবাসীর এটাই প্রথম কোন মিছিল। যদিও এর আগে এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় শামীম ওসমানকে পরোক্ষভাবে দায়ী করে আসছিল বিভিন্ন মহল।
শনিবার বিকেলে শহরের ডিআইটিতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সদ্য প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের স্মরণ সভায় বক্তব্য দিয়ে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাত ৮টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজিতে ‘বুকস গার্ডেন’ ভবনে যান। ওই ভবনেই নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।
এরশাদের সঙ্গে তখন নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম, ভাই আবদুস সালাম, সহ নজরুলের সঙ্গে নিহত মনিরুজ্জামান স্বপন, সহযোগি তাজুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এরশাদ এসব পরিবারের সঙ্গে প্রায় আধাঘণ্টা সময় দেন এবং নিহত পরিবারকে সান্তনা দেন। তখন তিনি তাদেরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে সরকারের প্রতি সুপারিশ করবেন বলে আশ্বাস দেন।
এ সময় নিহত পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এদিকে এরশাদ উপস্থিত থাকতেই স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে নানা স্লোগান দেন নজরুল ইসলামের সমর্থকরা। এসময় তারা বলতে থাকেন বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার হলেও নারায়ণগঞ্জে কেন সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। শামীম ওসমানই খুনীদের গ্রেপ্তারে বাধা। তাকে গ্রেপ্তার করলেই খুনীরা গ্রেপ্তার হবে।