সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে হাত মেলাবেন না

4_85333_0

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, দেশের জ্যেষ্ঠ দুই আইন বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার এম আমীর-উল-ইসলাম স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান না।

তাদেরকে স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে হাত না মেলানোর আহ্বান জানিয়ে মাহবুবে আলম বলেন, আপনারা সংবিধান প্রণেতা। সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা আপনারাই সংসদকে দিয়েছিলেন।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আজ তাহলে কেন ডিগবাজি খাচ্ছেন। কী উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এ দুজন কার সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন। যারা যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে প্রেস কনফারেন্স করেন তাদের সঙ্গে?

আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২নং হলে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘১৯৭২ সালের সংবিধান: বিচারপতিদের দায়বদ্ধতা ও অভিশংসন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন,সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু,বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লায়েকুজ্জামান মোল্লা, ড. বশির আহমেদ,অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন,শ ম রেজাউল করিম,শেখ আওসাফুর রহমান বুলু,রবিউল আলম বুদু,হোসনে আরা বেগম বাবলী প্রমুখ।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন,উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হলে কোনো সমস্য নেই।

তিনি বলেন,বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের কাছে থাকা স্বাধীনতার অন্যতম চেতনা। তাই সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,পৃথিবীর অনেক দেশে সাংবিধানিক পদের অপসারনের ক্ষমতা সংসদের হাতে আছে।

সুতরাং ‘সংসদ সদস্যরা ইচ্ছা করলেই কোনো বিচারপতিকে অভিসংশন করতে পারবে না। এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ আইন করার পর নিয়ম ও আইন মেনেই সবকিছু করতে পারবে’ মন্তব্য করেন রাষ্ট্রের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা।

সংসদকে বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা দিলে বিচারপতিদের স্বার্থ আরও সুরক্ষিত হবে বলে দাবি করেন তিনি।

আলোচনায় বাসেত মজুমদার বলেন,ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার আমির উল ইসলাম ছিলেন সংবিধানের প্রবক্তা। সুতরাং সংসদের হাতে ক্ষমতা দেওয়ার ব্যাপারে তাদের বক্তব্যে আইনজীবীদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি হয়।

ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার আমির উল ইসলামের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কিছু লোকের খপ্পরে পড়েই তারা এমন নেতিবাচক কথা বলছেন। যারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। সংসদের হাতে বিচারপতিদের অভিসংশন ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষে মত দেন সুপ্রিমকোর্টের এই সিনিয়র আইনজীবী।

কামাল হোসেন ও আমীর-উল-ইসলামের উদ্দেশ্য করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন,‘যারা স্বাধীনতাবিরোধী,যারা যুদ্ধাপরাধীর বিচার চায় না,তারা সংবাদ সম্মেলন করেছে। তাদের সঙ্গে আপনারা,এই দুঃখ কোথায় রাখি। যারা সাঈদীর পক্ষে কথা বলে,যারা গোলাম আযমের অনুসারী,যারা বিচার চায় না,তাদের সঙ্গে আপনারা হাত মেলাবেন না। আপনারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করবেন না,যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে গলায় গলা মেলাবেন না।’ যদি এ বিষয়ে কারো কোন বক্তব্য থাকে সরকারের দরজা খোলা আছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মার্কিন যুক্তরাশষ্ট্র,ভারত,আফগানিস্তান, ভুটান,শ্রীলঙ্কা, কোরিয়া, ফিনল্যান্ডসহ পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে সংসদের হাতে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা দেওয়া আছে। এই বিধান থাকার ফলে বিচারপতিরা তাদের অবস্থান সম্পর্কে সজাগ রয়েছেন। এ কারণেই ভারতের ৬৫ বছরের ইতিহাসে মাত্র তিনজন বিচারপতিকে অভিশংসনের মুখোমুখি হতে হয়েছে।

সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন,কিছু দিন যাবৎ লক্ষ্য করছি একটি পক্ষ উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী নিয়ে বিভিন্নভাবে সমালোচনা করছেন। তাদের বলতে চাই-আমরা ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ হুবহু পুনস্থাপন করছি। একটি দাড়ি,কমা,কোলনও পরিবর্তন করছি না।