শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

সাত কেজি টমেটোতে এক কেজি চাল!

এবারের হরতাল অবরোধের প্রভাবে মীরসরাই-সীতাকুণ্ড অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষিদের। গতকাল বাজারে ৭ কেজি টমেটো বিক্রি করে এক চাষি কিনতে পেরেছেন মাত্র এক কেজি চাল! সবজিতো আর সংরক্ষণ করা যায় না, তাই অনেক কৃষককে ক্ষেতেই পচে যেতে দেখতে হচ্ছে তার উৎপাদিত ফসল। অনেকে বাজারে নিয়েও ফেলে দিচ্ছেন রাগে, ক্ষোভে, কষ্টে।

মীরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলার মধ্যবর্তী বড়দারোগারহাট বাজারের হাটবার (বাজার বসার দিন) ছিল গতকাল সোমবার। সীম, টমেটোর খ্যাতির জন্য এই বাজারটি চট্টগ্রাম বিভাগের সকলের জানা। আগেতো সবজি মৌসুমে এই হাটে শুধুমাত্র সবজির জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকতো।

গতকাল এই হাটের সেই ঐতিহ্যবাহী অনেক টমেটো চাষিরা বাড়ি ফিরিয়ে না নিয়ে অভিমান করে রাস্তার পাশে ফেলে দিয়েছেন। বারৈয়াঢালা গ্রামের টমেটো বিক্রেতা কৃষক জাহাঙ্গীর আলম (৪২) বলেন, ‘দুই খাঁচি টমেটো আনছি বাজারে, এক খাচিত ২০ কেজি করি, এক খাচি মাত্র ১শ টাকা করি মুলার বেয়ারী, কেজি পরের ৫ টাকা করি, আর ৭ কেজি টমেটো বেইচলে পামু ১ কেজি চাইল, দুই খাচি ২শ টিয়া বেচিলে কেনে বাইচ্চুম।’

অপর কৃষক মনছুর আলি বলেন, এক কেজি টমেটো চাষে ১০ টাকার উপরে খরচও আছে। এখন এভাবে লোকসান দিলে কৃষকের তো বেঁচে থাকাও দায় হয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, এই অঞ্চলে এবারও টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু অব্যাহতভাবে হরতাল-অবরোধের ফলে টমেটোর দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের হয়েছে সর্বনাশ। তারা পানির দরে টমেটো বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মওসুমে এখানে ৫ শতাধিক হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। সংরক্ষণাগার না থাকা, যানবাহন সমস্যা ও পাইকারদের অনুপস্থিতি সব মিলিয়ে পানির দামে টমেটো বিক্রি করতে হচ্ছে।

মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য একটি হিমাগার খুবই প্রয়োজন, তাহলে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমতো।