শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

সাক্ষ্য দিতে যাওয়া হল না ফেলানীর বাবার

felani_152969
শুক্রবার সকালে সকল প্রস্তুতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেও সাক্ষ্য দিতে যাওয়া হল না ফেলানীর বাবা নুর ইসলামের। মাঝ রাস্তা থেকে ফেরত আসলেন কুড়িগ্রামে। ভারতে ফেলানী হত্যার বিচারিক আদালত তিন দিনের জন্য মুলতবি ঘোষনা করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কুড়িগ্রাম সীমান্তে চাঞ্চল্যকর ফেলানী হত্যাকান্ডের পুনঃবিচার কার্যক্রম গত সোমবার ভারতের কোচবিহারে ১৮১ বিএসএফ’র সেক্টর হেট কোয়াটারের বিশেষ আদালতে শুরু হয়। ৫ম দিন শুক্রবার বিকালে এই আদালতে সাক্ষ্য দিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে আমন্ত্রণ জানায় ভারত।
সাক্ষ্য দিতে কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি ক্যাম্প থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্ণেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দের নেতৃত্বে পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন ও ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম একটি বিশেষ গাড়িতে লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী স্থল বন্দরের দিকে যাত্রা শুরু করেন। লালমনিরহাট এলাকায় পৌঁছলে কোচবিহার বিএসএফ এর পক্ষ থেকে মোবাইলে জানানো হয় সাক্ষ্য গ্রহন স্থগিত করা হয়েছ। এর পর তারা দুপুরে কুড়িগ্রামে ফেরত আসেন।
কুড়িগ্রাম বিজিবির ৪৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন জানান, ভারতের কোচবিহারে বিএসএফ সেক্টর সদর দপ্তরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোেের্টর ডাক পেয়ে ভারতের পথে রওয়না হন তারা। দুপুর নাগাদ তাদের সেখানে পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু পথি মধ্যে ফোনে জানানো হয় আদালত ৩ দিনের জন্য মুলতবি হয়ে গেছে। সাক্ষ্য নেয়ার দিনক্ষন পরে জানানো হবে। ফলে পথ থেকেই ফেরত আসতে হলো। ডাক পেলে তারা আবারও ভারতে যাবার জন্য প্রস্তুত আছেন বলে তিনি জানান।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, পুন:বিচার শুরুর ৫দিন পর ডাক পরলেও ডাকা হয়েছে একজন সাক্ষীকে। ফেলানীর মামা আব্দুল হানিফও প্রত্যক্ষ সাক্ষী। অথচ তাকে ডাকা হয়নি। আবার ভারতের পক্ষ থেকে রাতে ডেকে সকালে নিষেধ করে দেয়ার ঘটনায় তিনি হতবাক।
পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন বলেন, শুক্রবার আদালত তিন দিনের মুলতবি ঘোষনা করায় আমিসহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল মাঝ পথ থেকে ফিরে আসি।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবার সাথে ফেরার সময় ভারতের চৌধুরীহাট বিএসএফ ক্যাম্পের হাবিলদার অমিয় ঘোষ ১৫ বছরের কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনার দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট কোচবিহার জেলার সোনারী এলাকায় ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। বিচারে অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়। এই রায় প্রত্যাখ্যান করে ফেলানী হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রতিবাদের ঝর উঠে। পরে বিজিবি-বিএসএফ’র দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ফেলানী হত্যার পুঃর্ণবিচারে সম্মত হয় বিএসএফ এর উর্ধতন কর্র্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার থেকে পুনরায় বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।