সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

‘শত শত নৌকায় হাজার হাজার দর্শক, এই দৃশ্যও আগে কখনো দেখা যায়নি’-হানিফ সংকেত

bd-pratidin-2017-03-31-013

বিনোদন ডেক্সঃ ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রত্ন নিদর্শন ও পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানগুলোতে গিয়ে ইত্যাদি ধারণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে সুন্দরবনে। ইত্যাদি ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় হানিফ সংকেতের সঙ্গে

ইত্যাদি সুন্দরবনে কেন?

ইত্যাদি দীর্ঘদিন থেকেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় সুন্দরবন। এবারের অনুষ্ঠানে মূলত অনেক কিছুই নুতন। কিছু কিছু বিষয় দর্শকরা টিভি পর্দায় প্রথম দেখবেন। যেমন এ পর্যন্ত প্রায় মাঝ নদীতে কখনো কোনো অনুষ্ঠানের সেট বানানো হয়নি, এবার সেটা হয়েছে। এবার আমরা গ্যালারি বানিয়েছি নৌকা দিয়ে। শত শত নৌকায় চেয়ার বসিয়ে দর্শকদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শত শত নৌকায় হাজার হাজার দর্শক, এই দৃশ্যও আগে কখনো দেখা যায়নি।

এটা তো বিশাল আয়োজন! কিভাবে হলো?

ইচ্ছা। ইত্যাদি ধারণের জন্য সাতক্ষীরা অংশের সুন্দরবন সংলগ্ন এমন একটি জায়গা বেছে নিয়েছি যাতে পেছনে থাকে সুন্দরবন, সামনে আকাশলীনা আর মাঝখানে নদী। অপার সৌন্দর্য। আমরা গিয়েছি ইছামতি নদীতে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। একই নদী অথচ দু’পাশে দুদেশের পতাকা উড়িয়ে নৌকা চলছে। যদিও জোয়ার-ভাটার পুরোপুরি তথ্য দেওয়াটা কঠিন তারপরও জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় জেলেদের মাধ্যমে আমরা এক মাস আগেই পুরো এক মাসের জোয়ার-ভাটার সময়টা জেনে নেই। সেট নির্মাণের জন্য দু-তিন বার ভাটার সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। জোয়ারের সময় পানি উঠলে এ স্থানটি ভিন্ন রূপ ধারণ করে। সুন্দরবনের আবহ তৈরি করার জন্য আমরা বাঁশ আর গোলপাতা দিয়ে মঞ্চ তৈরি করেছি। মঞ্চের এই চিন্তাটিও বলতে পারেন নুতন।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে ইত্যাদি ধারণ করা অত্যন্ত কঠিন। কিভাবে পারেন?

মানুষের ভালোবাসায়। ইত্যাদির প্রতি ভালোবাসার কারণে প্রশাসন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবাই সহযোগিতা করেন। তাই আমাদের চলার পথ কখনো কঠিন মনে হয় না। আর কাজ করতে হলে একটু কষ্ট তো করতেই হবে। আমার সঙ্গে ফাগুন অডিও ভিশনের প্রতিটি কর্মীই প্রতিটি ইত্যাদির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে।

বেসরকারিভাবে অনুষ্ঠান নির্মাণের পথ প্রদর্শক ইত্যাদি। আবার টিভি অনুষ্ঠানকে স্টুডিওর  বাইরে নেওয়াটা আপনিই দেখিয়েছেন। এমন ভাবনা কিভাবে এলো?

বৈচিত্র্যের জন্য এবং টিভি অনুষ্ঠানকে মুখে নয় বাস্তবে গণমুখী করার জন্য। এক সময় টেলিভিশন অনুষ্ঠান স্টুডিওর চার দেয়ালে বন্দী ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি সেখান থেকে টিভি অনুষ্ঠানকে বাইরে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, প্রাচীন ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলোতে গিয়ে ধারণ করতে এবং সেসব স্থানের পরিচিতি তুলে ধরতে। উদ্দেশ্য নিজেকে জানা এবং অন্যকে জানানো।

২৯ বছর ধরে চলা ইত্যাদি দেশের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি অনুষ্ঠান। কেমন লাগে?

অবশ্যই আনন্দের। কারণ আমরাও সব সময় বলি ইত্যাদি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান। কারণ একটি শিশুও যেমন ইত্যাদি দেখে, তেমনি তার দাদুও দেখেন। ইত্যাদিতে আমরা সবার কথা বলতে চেষ্টা করি। কারণ দেশ গড়ায় সবার অবদান রয়েছে। আর তাই আমরা ইত্যাদিকে নিয়ে যাই গ্রামে-গঞ্জে, সাধারণ মানুষের কাছে। আর এই সাধারণ মানুষের সমর্থন, সহযোগিতা, ভালোবাসার কারণেই ইত্যাদি পাড়ি দিতে পেরেছে এই ২৯ বছরের দীর্ঘ পথ।