সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

রস ছাড়াই খেজুর গুড়!

2016_02_06_11_52_23_dmrh8YNQ2F3XJg6lh5aSSFvtk4W52l_original

রস ছাড়াই তৈরি হচ্ছে খেজুরের গুড়। আটার গোলায় চিনি, ফিটকিরি, ডালডার মিশ্রনে দেয়া হচ্ছে পুরাতন গুড় আর রঙ বানাতে মেশানো হচ্ছে খড় পঁচানো পানি ও বিষাক্ত কেমিক্যাল।

ঘিওর উপজেলাসহ মানিকগঞ্জের প্রায় প্রত্যেকটি হাট বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি ও ক্ষতিকর এই গুড়।

চিনি ও কেমিক্যাল মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি মহোৎসব চললেও তা তৈরি ও বিক্রি ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই দিনে দিনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এই অসাধু চক্রটি।

নাম প্রকাশে কয়েকজন এলাকাবাসী বাংলামেইলকে জানান, বাজারে চিনির চেয়ে গুড়ের দাম বেশি থাকায় এবং বেশি লাভের আশায় ভেজাল গুড় তৈরিতে ঝুঁকছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা।

প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়েই ঘিওর উপজেলার বাইলজজুরী, বড়টিয়া, ঘিওর বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে গড়ে উঠেছে ভেজাল গড় তৈরির কারখানা। পরে এসব ভেজাল গুড় ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। খেজুরের রস সংগ্রহ শেষ হবার আগ পর্যন্ত এ প্রক্রিয়ায় ভেজাল গুড় তৈরি অব্যাহত থাকবে বলে বাংলামেইলকে জানান এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন শ্রমিক। এরপরেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

এদিকে, সামান্য কিছু লাভের আশায় এসব অসাধু ব্যবসায়ীর কবলে পড়ে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘিওর উপজেলার বাইলজুরী গ্রামের মো. বাবুল প্রধান ও ঘিওর সদরের ছাগলহাট সংলগ্ন মানিক দীর্ঘদিন ধরে এই ভেজাল গুড় তৈরি করছেন।

ভেজাল গুড় উৎপাদক মালিকরা বাংলামেইলকে জানান, বাজার থেকে পুরান গুড় কিনে বাড়িতে এনে ভালো করে জ্বাল দিয়ে তার সঙ্গে চিনি, হইডোজ এবং রঙ দিয়ে থাকি। এতে অবিকল খেজুরের গুড় তৈরি হয়ে যায়। শুধু আমরাই না, এরকম গুড় তৈরি করছে জেলার কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। বাংলাদেশের সব জিনিসিই ভেজাল। আমাদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। পারলে এই দেশকে ভেজালমুক্ত করে দেখান। তারপর আমাদের পেটে লাথি দিয়েন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবা আইরীন বাংলামেইলকে জানান, যে চিটাগুড় দিয়ে নতুন খেজুরের গুড় তৈরি হচ্ছে সেটা গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যা মানুষের খাবারের উপযোগী নয়। ইতোমধ্যে আমরা কয়েকটি অভিযান চালিয়েছে। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যহত থাকবে।

ঘিওরের জাবরা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. আবুল হাসান বাংলামেইলকে জানান, একমাত্র চিনি ও আটা ছাড়া ভেজাল গুড় তৈরিতে যেসব উপাদান ব্যববহার করছে সেগুলো মানদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে বিষাক্ত কেমিক্যাল থাকায় তা খাবার উপযোগী নয়। এ ধরনের ভেজার গুড় খেলে কলেরা, ডায়রিয়া, হজম শক্তি হ্রাসসহ পেটের পীড়া হবার সম্ভাবনা রয়েছে এবং অ্যালকোহল থাকায় ঝিঁমুনি ভাবও দেখা দেবে।

বাংলামেইল২৪ডটকম/এমএস