সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মীরসরাইয়ে তরুন তরুণীর প্রেমের বলি হতে হলো পুরো পরিবার কে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুরন্ত বয়সের প্রেমের জালে আটকে পড়া এক তরুণ তরুণী জুটি পালিয়ে বিয়ে করে ও পেরুতে পারেনি সংকুল পথ। তরুণীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে মা প্রথম বিয়ে দেবার পর বরের সাথে এক মাস থেকে পালিয়ে যায় পুরোনো প্রেমিকের হাত ধরে। এতে মেয়ের মা অপহরণ মামলা করে দিলে প্রেমিকের পরিবারে নেমে আসে পুলিশী খর্গ। গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় পুরো পরিবার। অবশেষে তরুণী নিজে থানায় এসে জবানবন্ধি দেয় আমি স্বেচ্ছায় গিয়েছি এবং আমি পূর্বেও স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে নতুন স্বামী গ্রহন করে সুখে আছি।
মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন দেওয়ানপুর গ্রামের প্রবাসী শংকর নাথের চলতি বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কন্যা রিয়া নাথ (১৮) একই থানাধীন দক্ষিন সোনাপাহাড় গ্রামের প্রবাসী মোঃ নিজাম উদ্দিনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে মোঃ রিয়াজ উদ্দিন (২২) এর মাঝে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি রিয়ার বাবা মা টের পেয়ে মেয়েকে জোর পূর্বক ফেনী শহরে তাদের আত্বীয়ের বাসা বাড়ীতে আটকে রেখে নন্দনপুর গ্রামের মানিক নাথের ছেলে মৃদুল নাথের সাথে বিয়ে দেয় গত ৩০শে এপ্রিল । স্বামী ও মা বাবা সকলে মিলে সেখানেই গৃহ বন্ধি করে রাখে রিয়াকে। একদিন সুযোগ পেয়ে রিয়া সেখান থেকে পালিয়ে তার প্রেমিক রিয়াজের বাড়ীতে এসে ওঠে তার পরিবারের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। সনাতন ধর্মালম্বী হওয়ায় রিয়াজের পরিবার এতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলে তারা উভয়ে চট্টগ্রাম পালিয়ে গিয়ে গত ৩ জুলাই সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম এর আদালতে মৃদুল নাথের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে এবং ৬ জুলাই একই ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেন। এতে তার নতুন নাম রাখা হয় মোছাম্মৎ মীম। সেই থেকে ওরা পরস্পর স্বামী স্ত্রী রুপে বসবাস শুরু করে। এদিকে রিয়ার মা টুন টুন রানী দেবী বাদী হয়ে তার মেয়েকে অপহরণ করেছে মর্মে গত ১ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে জোরারগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। পুলিশ সেই প্রেক্ষিতে উক্ত মামলার তদন্ত করতে গেলে আসামীরা স্ব পরিবারে অন্যত্র আত্ন গোপন করে। পরে তাদেরকে না পেয়ে তাদের অবস্থান জানার জন্য রিয়াজের চাচা আবুল হোসেনকে আটক করে আবার গত ৬ সেপ্টম্বর সন্ধ্যায় জোরারগঞ্জ বাজার থেকে রিয়াজের ফুফাতো ভাই মোঃ হাসানকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অবশেষে রিয়াজের পরিবারের সদস্যদের পুলিশি হয়রানী থেকে বাঁচানোর জন্য প্রেমিকা মোছাম্মমৎ মীম তথা রিয়া গতকাল সোমবার সেচ্ছায় স্ব শরীরে জোরারগঞ্জ থানায় এসে হাজির হয়ে ঘটনার র্পূনাঙ্গ বিবরণ দেয়। রিয়ার থানায় উপস্থিতির খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা থানায় উপস্থিত হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে থানা কার্যালয়ে সাংবাকিদের প্রশ্নের জবাবে রিয়া জানায়, তাকে রিয়াজ বা তার পরিবারের কোন সদস্য অপহরণ করেনি। বরং তার বাবা মা জোর পূর্বক ফেনী শহরে আটক করে রেখে তাকে মৃদুল নাথ নামের এক ব্যবসায়ীর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। বিয়ের পর তাকে সেখানে আটক করে রাখা হয়। এক পর্যায়ে সে পালিয়ে এসে প্রেমিক রিয়াজের বাড়ীতে ওঠে। বর্তমানে এবিষয়ে রিয়াজের পরিবারকে কোন রকম হয়রানী না করার জন্যও অনুরোধ করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জোরারগঞ্জ থানার এসআই মোঃ আলমগীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা অভিযুক্ত মেয়ের জবানবন্ধি মোতাবেক পরবর্তি পদক্ষেপ এর প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাকি দায়িত্ব আদালতই বুঝবেন।