সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি

image_88948.modioath

ভারতের ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি। মোদির শপথ অনুষ্ঠানের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় দিল্লির রাইসিনা হিলসের রাষ্ট্রপতি ভবন। ৭০ মিনিটের এ শপথ অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি প্রায় চার হাজার অতিথি উপস্থিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর শপথের পর শুরু হয় বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথ।
শপথ অনুষ্ঠানে যোগদান নিয়ে সব ধরনের জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোমবার সকালে ৩০ সদস্যের দল নিয়ে নয়াদিল্লি পৌঁছান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। জাপান সফরের কারণে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারছেন না বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উপস্থিত আছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। শপথ অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে রয়েছেন। মোদির সঙ্গে সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকলেও রাজাপাকসে উপস্থিত থাকবেন বলে থাকছেন না তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। এ ছাড়াও রয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং, নেপালের প্রধানমন্ত্রী শুশিল কৈরালা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আখিলেশ যাদব উপস্থিত থাকলেও নেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে কমপক্ষে ছয় হাজার নিরাপত্তাকর্মী। ভারতীয় বিমানবাহিনী, পুলিশ, স্পেশাল কামান্ডো বাহিনীর এ সদস্যরা শপথ অনুষ্ঠানের স্থান রাষ্ট্রপতি ভবনের পাশেই রাইসিনা হিলসের পার্শ্ববর্তী ২ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলেছে।
এর আগে মোদির মন্ত্রিসভায় ৪৫ মন্ত্রীর নাম ঘোষিত হয়েছে, তবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেউ নেই এই মন্ত্রিসভায়।
নতুন সরকারের শপথগ্রহণের আগে চূড়ান্ত ব্যস্ততা দিল্লির গুজরাট ভবনে। সকাল থেকেই বিজেপির একের পর এক বড় নেতা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন মধ্যদিল্লির এই ভবনটিতে। কারণ এই ভবনটিতে আছেন দেশের ভাবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির সাক্ষাৎপ্রার্থীদের মধ্যে আছেন অরুণ জেটলি, রাজনাথ সিং, সুষমা স্বরাজের মতো বর্ষীয়ান নেতা। এ ছাড়া রামবিলাশ পাসোয়ানের মতো শরিক দলের নেতারাও এদিন সকালে মোদির সঙ্গে দেখা করেন। এঁরাই সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনের ফোর্টকোরে শপথ নিচ্ছেন। যদিও ভারতীয় রাজনীতির বর্তমান ভরকেন্দ্র গুজরাট ভবনে লালকৃষ্ণ আদভানি বা মুরলি মনোহর যোশির মতো বিজেপির বর্ষীয়ান নেতাদের দেখতে না পাওয়ায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে গুজ্ঞন।
ভারতীয় জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে স্মরণের মধ্য দিয়ে আজ সোমবারের ঐতিহাসিক দিনের সফর শুরু করেন মোদি। এদিন সকালে দিল্লির রাজঘাটে গিয়ে জাতীর জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন নমো। মহাত্মা গান্ধীর সমাধিক্ষেত্রে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পাশাপাশি সেখানে বেশ কিছুক্ষণ কাটান তিনি।
রাজঘাট থেকে গুজরাট ভবন ফিরে যাওয়ার পথে মোদির রাজনৈতিক গুরু, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ির বাসায় যান তিনি। সেখানে প্রায় ১৫ মিনিট অসুস্থ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটান তিনি। বাজপেয়ির আশীর্বাদ নিয়ে ফের মধ্য দিল্লির গুজরাট ভবনের উদ্দেশে রওনা দেয় মোদির গাড়িবহর।
শপথ অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য থাকছে নানা পদের খাবার। গুজরাটি আর বাঙালি এ দুই ধরনের খাবার থাকছে মেন্যুতে। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি অতিথিদের জন্য বাঙালি খাবার পটলের দোলমা, সন্দেশের সঙ্গে মোদির রাজ্য গুজরাটের ধোকলা, কড়ি, ডাল মাখনি, মেথি শাক রেখেছেন। অন্যদিকে মোদি নিরামিষভোজী হলেও অতিথিদের জন্য রাখছেন চিকেন হাজারভি, গলউটি কাবাব, চিংড়ির স্টু, চিকেন চেট্টিনাড়, মটন শামি কাবাব।