শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

প্লাটফর্মে ঢুকে পড়ল ট্রেন

1_49178

 

কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই চট্টগ্রাম স্টেশনে মহানগর প্রভাতীর ইঞ্জিন স্টেশনের প্লাটফর্মের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এ ঘটনায় সাময়িকভাবে তিনজনকে বরখাস্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। তারা হলেন শান্টিং ইঞ্জিনের চালক এ কে এম জহুরুল হক, সহকারী লোকো মাস্টার ইমরান হোসেন ও পয়েন্টসম্যান জাহাঙ্গীর। চলন্ত ট্রেনে লোকো মাস্টারের ঘুম, ঘুমন্ত অবস্থায় সহকারী লোকো মাস্টারের ট্রেন চালনা, গতি নির্ধারিতের চেয়ে বেশি, নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকার কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান। গতকাল ভোর সাড়ে ৫টায় মার্শাল ইয়ার্ড থেকে স্টেশনে আসার পথে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন আজ ও অন্য কমিটির প্রতিবেদন তিন দিনের মধ্যে জমাদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ট্রেন চালকের ঘুমন্ত অবস্থায় ট্রেন চালানো বা তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) এস এম মুরাদ হোসেন। তিনি বলেন, ট্রেনের ইস্পাতের চাকার আঘাতে প্লাটফর্মের মেঝে ভেঙে গেছে এবং ট্রেনের ধাক্কায় কাচের তৈরি প্লাটফর্মের ফটকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রাশেদা সুলতানা গনি বলেন, ‘তদন্ত চলছে। বৃহস্পতিবার (আজ) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। তদন্ত শেষ না হওয়ায় এখন কিছু বলতে পারছি না।’ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, জিএমের নির্দেশে উচ্চ পর্যায়ের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক হলেন অতিরিক্ত প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রাশেদা সুলতানা গনি। সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী আহামেদ মাহবুব চৌধুরী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংকেত ও টেলিকমিউনিকেশন) মো. মাঈনুল ইসলাম ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মফিজুর রহমান। অন্য বিভাগীয় চার সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক হলেন বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) ফিরোজ ইফতেখার, সদস্যরা হলেন বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী সমীক শাওন ও বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) আবিদুর রহমান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, ট্রেনটি স্টেশন এলাকার জন্য নির্ধারিত ১৬ কিলোমিটারের গতিসীমার বেশি গতিতে চলছিল। ট্রেন প্রটেকশন মার্ক (রেল লাইনের শেষ সীমা) কমপক্ষে দেড় শ ফুট এবং ফাউলিং মার্ক (দাঁড়ানোর নির্ধারিত স্থান) থেকে কয়েক ফুট দূরে দাঁড় করাতে হয়। কিন্তু দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসা মহানগর প্রভাতী প্রথমে ফাউলিং লাইন (সতর্কীকরণ অবস্থান) অতিক্রম করে। এরপর দ্রতগতি সামাল দিতে না পেরে ক্রস ওভার (দুই লাইনের মধ্যবর্তী ট্রেন স্থানান্তরের স্থান) ধরে পাঁচ নম্বর লাইনে ঢুকে পড়ে। মহানগর প্রভাতীর জন্য নির্ধারিত ছিল ছয় নম্বর লাইন। ট্রেনটি ক্রস ওভার করার সময় পাঁচ নম্বর লাইনে দাঁড়ানো ছিল ঢাকাগামী সুবর্ণ এঙ্প্রেস ট্রেনটি। পরে ট্রেনটি প্রটেকশন মার্ক অতিক্রম করে আরও প্রায় ৫০ ফুট এগিয়ে যায় এবং কয়েক ফুট উঁচু পাকা সীমানা ডিঙিয়ে ট্রেন উঠে পড়ে প্লাটফর্মে।