রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ছিটমহলবাসীর আর কোন কষ্ট থাকবে না

prime minister-001_81644

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছিটমহলবাসীর আর কোন কষ্ট থাকবে না। আমরা তাদের জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করবো, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেব।তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে ভারতের দালালী করে আর আওয়ামী লীগ ভারতের কাছ থেকে নায্য দাবী আদায় করে। ভারতের সাথে স্থলসীমান্ত চুক্তি বাংলাদেশের কুটনৈতিক সাফল্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুতের উন্নয়ন করে আর বিএনপি তা ধ্বংস করে। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত বিদ্যুতের জন্য কানসাটে ১৮জন মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়।তিনি আজ শনিবার বিকেলে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জামায়াত ধংসের রাজনীতি করে। তারা সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও বাংলাভাই সৃষ্টি করেছিল। আওয়ামী লীগকে উৎখাত করতে খালেদা জিয়া আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে ঘরের ভেতর থেকে ভালো ভালো খাবার খেয়েছেন। আর সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছেন। খালেদা জিয়ার নির্দেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নারী ইউপি সদস্য নূরজাহানের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। আওয়ামীলীগ নেতার ছেলে বলে ৯বছরের শিশু রকিকে হত্যা করা হয়। তার কাজ মানুষ হত্যা করা। আর ধ্বংসাত্মক কাজ করা।বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির সময় বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল ৩হাজার ২’শ মেগাওয়াট। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুতের উন্নয়ন ঘটিয়ে তা ১৩হাজার ৭’শ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছে। ৩লাখ নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই সেখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে।শেখ হাসিনা বলেন, রাজশাহী-সোনামসজিদ দিয়ে ভারতের সাথে বাস যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হবে এবং রহনপুর দিয়ে নেপালের সাথে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন করা হবে। দারিদ্রতা হ্রাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৩বছরের মধ্যে দারিদ্রতা ১০ভাগ কমিয়ে দেশের উন্নয়ন ঘটানো হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।সমুদ্রসীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ভারত ও মায়ানমার থেকে সুমুদ্রসীমা জয় করে এনেছি। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তা পারেনি। শিক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া শিক্ষার গুরুত্ব বুঝে না। তাই তিনি পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধের ঘোষণা দেয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ায়, বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়েছে। আশা করছি এই মাসের মধ্যেই এসএসসি’র ফলাফল ঘোষণা করা হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কৃষকবান্ধব বলেই মাত্র ১০টাকার বিনিময়ে কৃষকদের ব্যাংক হিসেব খোলার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে এবং কৃষি ভর্তুকির অর্থ সেই ব্যাংক হিসেবে সরাসরি দেয়া হচ্ছে।তিনি বলেন, আমি মা-বাবা-ভাইসহ সব হারিয়েছি। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। আমি রাজনীতি করি মানুষের উন্নয়নের জন্য। তবে যদি দেশের মানুষের কেউ ক্ষতি করার চেষ্টা করে। তাহলে তাকে ধরিয়ে দিন। বিচারের আওতায় এনে তাকি শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।চাঁপাইনবাবগঞ্জের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জেলায় একটি আধুনিক বাস টার্মিনাল, জেলার গৃহহারা মানুষকে খাস জমির মাধ্যমে গৃহের ব্যবস্থা, একটি অত্যাধুনিক উপজেলা কমপ্লেক্স, প্রতি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন নির্মাণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ করে দেয়া হবে।জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক মঈনুদ্দিন মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক এমপি, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক এমপি, সাবেক রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, গোলাম রাব্বানী প্রমূখ।তিনি প্রায় ৩৪মিনিট বক্তব্য রাখেন এবং জনসভার শুরুতে জনসভাস্থল থেকে তিনি শহরের পিটিআই-মাষ্টার পাড়া এলাকায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কল্যাণপুরে বাংলাদেশ পরমাণূ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের উপকেন্দ্র, বালিগ্রামে চক্ষু হাসপাতাল, স্বরপনগরে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজের নবনির্মিত একাডেমিক ভবন ও গোমস্তাপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশন উদ্বোধনসহ একই সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালকে ২’শ ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, আমনুরায় ১’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কানসাট-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট সড়কের উন্নয়ন ও পদ্মার ভাঙ্গন থেকে আলাতুলি ইউনিয়ন রক্ষা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

 

উৎস- বাংলাদেশ প্রতিদিন