রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

৬ টিভি উপস্থাপক আলোচকের বিরুদ্ধে মামলা

pic-22_125002

ইসলামী ফ্রন্ট নেতা নূরুল ইসলাম ফারুকী হত্যার ঘটনায় টিভি উপস্থাপক জামায়াতের রুকন তারেক মনোয়ারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নালিশি মামলাটি এজাহার হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নুর বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে এ আদেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন নরসিংদী জেলা জামায়াতের সাবেক আমির কামাল উদ্দিন জাফরী, কাজী ইব্রাহীম, আরকানুল্লাহ হারুনী, খালেদ সাইফুল্লাহ বখশী ও মুখতার আহমদ। আসামিরা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ও আলোচনার সঙ্গে যুক্ত।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামী ছাত্র সেনা ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার আদালতে হাজির হয়ে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৯৬/১০৯/১২০বি/৩৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। বাদীপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আলী আহসান মোল্লা।
বাদী আরজিতে বলেন, ‘২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে সুনামগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের উগ্রপন্থীরা মাওলানা ফারুকীকে হত্যার চেষ্টা করে। ২০১২ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে কাজী ইব্রাহিম তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও অনুষ্ঠানে আসামিরা তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়। ফারুকী হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর ছেলে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহার পুরো ঘটনার বিবরণ নয়। নূরুল ইসলাম ফারুকীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। অথচ থানা ডাকাতি করতে গিয়ে হত্যার ধারায় মামলা নিয়েছে। এ অবস্থায় শেরেবাংলা নগর থানার মামলার সঙ্গে এ মামলা সংযুক্ত করে তদন্তের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, সুন্নি মতাবলম্বী ইসলামী ফ্রন্টের শরিক দল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সেনা। নিহত মাওলানা ফারুকী ছিলেন ইসলামী ফ্রন্টের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। ঢাকা ও চট্টগ্রাম এই দুই অঞ্চলে ভাগ করে চলছে ইসলামী ছাত্র সেনার কাজ। ঢাকা অঞ্চলের সভাপতি মনির হোসেন জানান, অহিংস ছাত্র রাজনীতি কায়েম করাই তাঁদের উদ্দেশ্য। ইসলামী আইন মোতাবেক সমাজ কায়েম করা তাঁদের দলের মূল নীতি। তাঁদের নেতা নূরুল ইসলাম ফারুকী চ্যানেল আইয়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, ইসলামিক মিডিয়া জনকল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান ও ফারুকী ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের এমডি ছিলেন।
গত ২৭ আগস্ট সন্ধ্যায় ১৭৪ পূর্ব রাজাবাজারের বাসায় খুন হন ফারুকী। ওই ঘটনায় তাঁর ছেলে ফয়সাল ফারুকী শেরেবাংলা নগর থানায় দণ্ডবিধির ৩৯৬ ধারায় একটি ডাকাতি ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ‘তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে মাওলানা ফারুকীকে হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য মেলেনি। গুরুত্ব দিয়েই আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে হজে লোক পাঠানোর ব্যবসা, পারিবারিক বিরোধ, ধর্মীয় মতবাদ নিয়ে বিরোধসহ সব বিষয় বিবেচনায় রয়েছে। তবে আর্থিক ও ব্যক্তিগত কারণে ফারুকীর সঙ্গে কারো বিরোধের তথ্য মেলেনি।’ তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নিয়ে ভিন্নমতাদর্শীদের হুমকি ছিল। এ বিষয়টিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’