কামরুল হাসান জনি :
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে ২০২০ ওয়ার্ল্ড এক্সপো অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশসহ এশিয়া অঞ্চলে ব্যাপক বাণিজ্যিক বিপ্লব ঘটতে পারে। ইতিমধ্যে সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে আমিরাত সরকার সারাবিশ্বে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২৭ নভেম্বর বিশ্বের ১৬০টি দেশের সংখ্যাগরিষ্ট অংশের সমর্থন আদায়ের মধ্য দিয়ে দুবাই ২০২০ ওয়ার্ল্ড এক্সপো করার সুযোগ পেয়ে যেতে পারে আমিরাত। ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোটের অধিকার রাখে। আমিরাত সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের নিকট চিঠি পাঠিয়েছে। পাশাপাশি আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং দুবাইস্থ বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলকে বাংলাদেশের সমর্থন পাওয়ার লক্ষ্যে চিঠি দিয়ে অবগত করেছে। তবে এই ভোটাভুটির উপর নির্ভর করছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত সাড়ে ১২ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশীর ভাগ্য নির্ধারণী খেলা। কেননা ২০২০ ওয়ার্ল্ড এক্সপোকে ঘিরে প্রতিযোগী দেশের সংখ্যা ৪টি। এসব দেশ সমূহ হচ্ছে থাইল্যান্ড, তার্কি, রাশিয়া, ব্রাজিল। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার নিউক্লিয়ার চুক্তি থাকায় বাংলাদেশের সমর্থন দুবাই আদৌ পাবে কিনা এই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং নিউক্লিয়ার চুক্তি থাকার ফলে ২০২০ এক্সপো নিয়ে ভোটাভুটির ক্ষেত্রে রাশিয়াকে যদি সমর্থন দেয়া হয়, তাহলে এটি হবে বাংলাদেশের জন্য বড় ধরণের একটি ভুল। কেননা সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের ১২ লক্ষ প্রবাসী অবস্থান করছে। এক্ষেত্রে যদি আমিরাত বাংলাদেশের ভোট থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আমিরাত সরকারের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠতে পারে। তাই ভোটাভুটির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অত্যন্ত দুরদর্শিতার পরিচয় দিতে হবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন দুবাই ২০২০ এক্সপোর মধ্য দিয়ে এশিয়া অঞ্চলে ব্যাপক বাণিজ্য বিপ্লব ঘটবে এবং এ বিপ্লবের অংশীদার হবে বাংলাদেশ। এমনকি এই ২০২০ ওয়ার্ল্ড এক্সপোকে ঘিরে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও নিজস্ব পণ্য বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার দ্বার উম্মোচিত হবে। আগামী ২৭ নভেম্বর আমিরাত সরকার ২০২০ এক্সপো দুবাই করার সুযোগ পেয়ে গেলে সংযুক্ত আমিরাতে গত ক’বছর যে অর্থনৈতিক নাজুক অবস্থা দেখা দিয়েছিল সেই অবস্থা ঘুরে দাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই ভোটাভুটির ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ভোট প্রদান করা হয় তাহলে সাম্প্রতিক সময়ের ভিসা বন্ধের ব্যাপারটি নিয়ে আমিরাত সরকার শীতল অবস্থানে যেতে পারে এবং ২০২০ এক্সপোকে ঘিরে আমিরাত সরকারের যে মহা পরিকল্পনা ও কর্মযজ্ঞ করার প্রস্তুতি রয়েছে এখানে বাংলাদেশী শ্রমিকদের কদর বিশেষভাবে বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের ভাগ্য উন্নয়নসহ আরো প্রায় ৩ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২ নভেম্বর প্যারিসের ব্যুরো ইন্টারন্যাশনাল দেস এক্সপোজিশন (আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ব্যুরো) এ একটি প্রস্তাবনা পেশের মাধ্যমে এক্সপো ২০২০ নিলামে অংশগ্রহণের জন্য দুবাই তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে। এই নিলামে অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে ইউ.এ.ই হলো ৫ম প্রার্থী।