কঠোর হাতে সন্ত্রাসের মূলোৎপাটন করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাস নির্মূল করতে বর্তমান সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। বুধবার সংসদে সংসদ সদস্য সামশুল হকের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন, গণমাণ্য ব্যক্তি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে পুলিশের সক্ষমতা। সন্ত্রাস দমনে, দিনরাত সড়ক ও নৌপথে পুলিশ টহল এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। কঠোর হাতে সন্ত্রাসের মূলোৎপাটন করা হবে।সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহের এক প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষকে লোডশেডিং থেকে মুক্ত করার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের উৎপাদন ৪০ হাজার মেগাওয়াট পার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়বে। বাড়বে মানুষের জীবনমান। তাই বিদ্যুৎ ব্যবহারে দেশবাসীকে সচেতন হতে হবে।বিদ্যুতের অপব্যবহার রোধে প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে গণভবনের অনেক সুইচ অফ করেন। দেশবাসীকেও একই পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছেন, অফিস আদালত এমনকি বাসা বাড়িতেও অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত বাল্ব জ্বলতে দেখলে তা নিজের হাতে বন্ধ করুন। এতে অসম্মানের কিছু নেই।তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ১৪ কোটি মোবাইল এবং ৪ কোটি ল্যাপটপ চার্জ করা হয়। অকারণে জ্বালিয়ে রাখা হয় অসংখ্য বাল্ব। রান্নার কাজেও ব্যবহার হচ্ছে বিদ্যুৎ। এতে প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হয়। বিদ্যুতের যেমন চাহিদা বাড়ছে ঠিক তেমনি উৎপাদনও বাড়ানো হচ্ছে।’দুর্নীতি প্রতিরোধে যুগোপযোগী ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ও অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে মনিটরিং সেল, গোয়েন্দা তৎপড়তা বৃদ্ধি এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় রাখা হয়েছে। বাজারে জিনিসপত্রের মূল্য তালিকা টাঙানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফাখোর অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। ফরমালিনের অপব্যবহার রোধে আইন করা হয়েছে।মোহাম্মদ আমির হোসেনের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছে সরকার। অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভারতসহ অনেক দেশেই পিপিপি উদ্যোগে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও সেখানে কোন পিপিপি অফিস নেই। বর্তমান সরকার পিপিপিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়ে পিপিপি অফিস খুলেছে।সরকারি দলের দিদারুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ-মিয়ানমার যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্ক বেশ ভাল। তিনি বলেন, বাংলাদেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে ৩৯ হাজার। তবে অনিবন্ধিত শরণার্থী রয়েছে আরও কয়েক লাখ। বিমসটেক সম্মেলনে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি ও বিরোধী দলের নেত্রীর সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারও আন্তরিক।