নিজস্ব প্রতিবেদক : মৌসুমী শাক সবজীর জন্য স্বনির্ভর জনপদ মীরসরাই। সমৃদ্ধ এই জনপদে সারাদেশে লাগাতার অবরোধের জের ধরে চলমান সময়ে শীতকালীন সবজি নিয়ে কৃষকরা পড়েছে চরম বিপাকে। পাহাড়ী পলি বেষ্টিত এই জনপদের উর্বর মাটি শীতকালীন সবজীর জন্য খুবই উৎকৃষ্ট। এখান থেকে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে যায় শিম, কাকরোল, ফুলকপিসহ নানান শীতকালীন সবজি। প্রতিদিন সকালে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে মৌসুমী সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, করলা, কাকরোলসহ নানা সবজি মহাসড়কের বড়দারোগারহাট, হাদি ফকিরহাট, বড়তাকিয়া, মীরসরাই সদরহাট, মিঠাছরা, বারইয়াহাট ও করেরহাটসহ বিভিন্ন বাজারে কৃষকরা তাদের সবজি নিয়ে এসেও মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। কারণ হিসেব কৃষকরা হতাশাভরা কণ্ঠে বলেন- ‘অবরোধের কারণে কোনো বড় পাইকার না আসার কথা। সরেজমিনে দেখাও গেছে তা-ই। কোন বড় কোন পাইকারই আসছে না এসব বাজারগুলোতে। স্থানীয় বিক্রেতারা ছাড়া পাইকারদের কাছে বিক্রি করতে না পেরে কম দামে ছেড়ে দিতে হচ্ছে সকল সবজি। অনেকে বিক্রি না হবার শঙ্কায় জমি থেকেই তুলছে না তাদের সবজি। তাই অনেকের সবজি পেকে গিয়ে খাবারের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে।
মায়ানী গ্রামের কৃষক মান্নান ভূঁইয়া জানায়, বিক্রি না হওয়ার কারণে জমি থেকে ফুলকপি তুলতে পারছি না। ফলে ১২ শতক জমির ফুলকপি জমিতেই নষ্ট হচ্ছে। দুর্গাপুরের কৃষক সাদেক হোসেন জানান তাঁর শিম গাছে নতুন শিম ধরেছে। এখনি বিক্রি করলে দাম পেতেন কিন্তু এখন তুললো উল্টো কমদামে দিতে হবে।
মীরসরাই পৌরবাজারে গত কয়েকদিন ধরে সরেজমিনে দেখা যায়, অনেক কৃষকই গত্যান্তর না দেখে ১০-১৫ খাঁচি ভর্তি ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন এনে সকাল ৬টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত বসে থেকেও অনেককে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে। রাস্তায় সিএনজি ছাড়া কোন দূরপাল্লার গাড়ি নেই। পিকআপ চললেও পাইকাররা আসতে পারতো।
এদিকে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে রাজনীতিবিদদের স্বার্থের কাছে বারবারই মার খাচ্ছে খেটে খাওয়া কৃষকদের স্বার্থ। এমন অবস্থা আরো দীর্ঘতর হলে কৃষকরা চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বেশী দেরি হবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।