দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার স্মরণ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন বিশ্বনেতারা। আজ মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার সর্ববৃহত্ শহর জোহানেসবার্গের এফএনবি স্টেডিয়ামে হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে তাঁরা সম্মান জানাচ্ছেন এই মহানায়ককে। স্মরণসভায় উপস্থিত হয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কোস হল্যান্ড, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফ, জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদসহ আরও অনেকেই। স্মরণ অনুষ্ঠানে বারাক ওবামা বলেন, ‘ম্যান্ডেলা ছিলেন ইতিহাসের এক মহিরুহ।’ দক্ষিণ আফ্রিকাবাসীকে উদ্দেশ করে ওবামা বলেন, ‘ম্যান্ডেলাকে আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ায় গোটা বিশ্ব আপনাদের ধন্যবাদ জানায়।’ অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা তার নায়ককে হারাল, জাতির পিতাকে খোয়াল। তিনি আমাদের মহান শিক্ষক ছিলেন। আমাদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিয়ে গেলেন। তিনি ছিলেন আত্মত্যাগের মহান উদাহরণ। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য সবকিছু করেছেন তিনি।’ ম্যান্ডেলার এই স্মরণসভায় বিশ্বনেতাদের উপস্থিতি সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে বড় আয়োজনে রূপ নিয়েছে। বৃষ্টির কারণে অনুষ্ঠান শুরুতে দেরি হলেও তা ম্যান্ডেলাভক্তদের আগ্রহ দমাতে পারেনি। নেলসন ম্যান্ডেলা গত বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। ৯৫ বছর বয়সী ম্যান্ডেলা জোহানেসবার্গের হাউটন শহরতলিতে নিজ বাড়িতে বিশেষ ব্যবস্থায় নিবিড় চিকিত্সার অধীনে ছিলেন। ফুসফুসে সংক্রমণজনিত অসুস্থতার কারণে প্রিটোরিয়ার মেডিক্লিনিক হাসপাতালে প্রায় তিন মাস চিকিত্সা নেওয়ার পর গত ১ সেপ্টেম্বর বাড়িতে ফেরেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতির জনকখ্যাত ম্যান্ডেলা ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এর আগে শ্বেতাঙ্গ সরকারবিরোধী আন্দোলনের কারণে দীর্ঘ ২৭ বছর কারাভোগ করেন তিনি। ম্যান্ডেলার জন্ম ১৯১৮ সালে ১৮ জুলাই। দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৪৮-এর নির্বাচনে বর্ণবাদে বিশ্বাসী ও বিভিন্ন জাতিকে আলাদা করার পক্ষপাতী দল ন্যাশনাল পার্টি জয়লাভ করে। ন্যাশনাল পার্টির ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপটে ম্যান্ডেলা সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) ১৯৫২ সালের অসহযোগ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
উৎস- প্রথম আলো