প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় কোন প্রকল্প গ্রহণ, প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে বিদেশী পরামর্শকের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, আমাদের অনেক মেধাবী ও যোগ্য জনশক্তি থাকা সত্ত্বেও বিদেশী পরামর্শকরা উন্নয়ন প্রকল্পগুলো থেকে বড় অংকের অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। বিদেশী পরার্মশক নিয়োগ দিয়ে আমাদের সরকার আর জনগণের অর্থের অপব্যবহার করতে চায় না। এ জন্য কেবল প্রয়োজন দেশীয় প্রকৌশলীদের আত্মবিশ্বাস ও নৈতিকতা। গতকাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন, বাংলাদেশ (আইইবি) প্রাঙ্গণে আইইবির ৫৫তম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে আইইবির সভাপতি অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী শামীমুজ্জামান বসুনিয়া ও সাধারণ সম্পদক প্রকৌশলী মিয়া মো. কাইয়ুম এবং আইইবি, ঢাকা কেন্দ্রের সভাপতি প্রকৌশলী মহসীন আলী ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম শরীফ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুয়েটের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমিরিটাস আবদুল মতিন পাটোয়ারীকে তার কর্মময় জীবনে অসামান্য অবদানের জন্য আইইবি স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এ পদক পরিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রী ৫০ জন ইঞ্জিনিয়ারের হাতে এসোসিয়েশন মেম্বার ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স (এএমআইই) ডিগ্রি পদক ও ৪২ জনের হাতে পেশাদার প্রকৌশলীর পদক প্রদানের ঘোষণা দেন।
শেখ হাসিনা প্রকৌশলীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে বলেন, অন্যের কাছে হাত পেতে দেশের উন্নতি করা যাবে না। এ জন্য নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। এতে আপনাদের সহযোগিতা সবার আগে প্রয়োজন। তিনি বলেন, এ দেশের মাটি ও পানির সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক রয়েছে, বিদেশীদের নেই। কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে আপনার চেয়ে বিদেশীরা ভাল পরামর্শ দিতে পারবে না। পদ্মা সেতুর কথা উলে¬খ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সেতু নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক রাজনীতি হয়েছে। আজ আমরাই এ কাজ শুরু করেছি। ইনশাআল্ল¬াহ, আমরা তা পারবো। এজন্যও আপনাদের সহযোগিতা চাই।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ গড়তে আমাদের সরকার একটি বিজ্ঞানভিত্তিক যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। এতে বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে বিভিন্নমুখী কর্মসূচি তার সরকার বাস্তবায়ন করে চলেছে। ‘আইসিটি অ্যাক্ট ২০০৯’ প্রণয়ন করা হয়েছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি হাই-টেক পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে তার সরকার তৃণমূল পর্যায়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। ৪ কোটি ৮০ লাখ মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। মোবাইলের ১১ কোটি সিম ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি বলেন, অথচ মোবাইল নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের এক মন্ত্রীর একচেটিয়া ব্যবসা ছিল। তখন কল করলেও ১০ টাকা, রিসিভ করলেও ১০ টাকা দিতে হতো। আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসে সেই একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। এ কারণে এখন একজনে একাধিক মোবাইল ও একাধিক সিম ব্যবহার করতে পারছে।তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই।