তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে পদ্মার মাওয়া ঘাটের কাছে ডুবে যাওয়া লঞ্চ পিনাক-৬ শনাক্তকরণ ও উদ্ধার তৎপরতা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় মাওয়ার ‘পদ্মা’ রেস্ট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল।রোববার সংবাদ সম্মেলন করে কান্ডারি-২ ও জরিপ-১০ ছাড়া বাকি সব সংস্থার অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেছিলেন মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক। তখন বলা হয়েছিল ডুবে যাওয়া লঞ্চটি শনাক্তকরণে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখবে কান্ডারি-২ ও জরিপ-১০। ২৪ ঘন্টার মাথায় এসে অনুসন্ধান অভিযান থেকে সর্বাধুনিক প্রযু্িক্তর এ দুই নৌযান প্রত্যাহার করে নেয়া হলো। এর মধ্য দিয়ে লঞ্চ পিনাক-৬ ডুবির অষ্টম দিনে সব ধরনের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের যবনিকাপাত ঘটলো। জেলা প্রশাসক বলেন, মাওয়ায় কান্ডারি-২ এ অবস্থান করা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীর সঙ্গে সর্বশেষ আলাপ করে লঞ্চটির সন্ধান বিষয়ে আমরা শতভাগ আশাবাদী হতে পারেনি।তিনি বলেন, নদীর তীব্র স্রোতের কারণে সনাক্তরণ জাহাজের ক্যামেরা স্ক্যানার সোনারে যে ইমেজ ধরা পড়েছে তা ডুবে যাওয়া লঞ্চ পিনাক-৬ কিনা আসলে সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারেনি। এ নিয়ে কাজের কোন অগ্রগতিও নেই । আমরা চেষ্টা করেছি, দুর্ভাগ্য লঞ্চটির সঠিক সন্ধান আমরা দিতে পারেনি।সাইফুল হাসান বলেন, এ অবস্থায় লঞ্চটি শনাক্তকরণ ও উদ্ধার তৎপরতা আমরা স্থগিত ঘোষণা করছি। তবে তিনি জানান, আমরা লাশের সন্ধানে ভাটি অঞ্চলগুলোতে কোস্টগার্ড ও নৌ-টহল জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি লাশও যদি পাওয়া যায় অন্তত একটি পরিবারকে সান্ত্বণা তো দেয়া যাবে। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত লাশের তল্লাশি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।তবে স্থানীয়ভাবে লঞ্চটির সন্ধানে যে অভিযান চলছে তাতে জেলা প্রশাসনের নজরদারি ও সহযোগিতা থাকবে।লঞ্চডুবির ষষ্ঠদিনে কান্ডারি-২ এর ক্যামেরা স্ক্যানার সোনারে লঞ্চসদৃশ ধাতব বস্তুর ইমেজ ধরা পড়েছিল। এতে লঞ্চটি শনাক্ত ও উদ্ধারে আশাবাদি হয় সবাই। কিন্তু আস্তে আস্তে সে আশা ফিকে হতে থাকে। তা বাস্তব হতেও বেশি সময় নেয়নি। অষ্টমদিনে এসে সর্বাধুনিক প্রযু্িক্তর শনাক্তরণ জাহাজ কর্তৃপক্ষও লঞ্চটির সন্ধানে নিজেদের ব্যর্থতা নদীর তীব্র স্রোতের ওপর চাপিয়ে অনুসন্ধানের পরিসমাপ্তি ঘটালেন।গত সোমবার মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়া আসার পথে মাওয়া ঘাটের কাছে তিন শতাধিক যাত্রী পদ্মায় ডুবে যায় লঞ্চ পিনাক-৬। প্রশাসনের তথ্যমতে ৪৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৬১ জন। এছাড়া জীবিত শতাধিক ব্যাক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।