তিলক বড়ুয়া : ষড়ঋতুর আবর্তে বাংলায় শীতের আগমন এনে দেয় বাড়তি উদ্দীপনা। শীত কারো কারো কাছে দুর্ভোগের আরেক নাম হলেও একটি দিক থেকে শীত সকলের কাছেই উপভোগ্য। কেননা, শীতের আগমনই যে পিঠা উৎসবের আগমন। গ্রামাঞ্চলের অবস্থাসম্পন্ন কৃষকরা এই উৎসব বেশ ভালোভাবেই উদযাপন করতে পারলেও পারেন না শহুরেরা। তবে তাঁদের পিঠার চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করে থাকেন ফুটপাথের পিঠা বিক্রেতারা। সেই ছোঁয়া বর্তমানে এসে লেগেছে মফস্বলেও।
শীতকে ঘিরে সারাদেশের মফস্বল এলাকাগুলোর মতো মীরসরাইয়ের বিভিন্ন স্থানেও শুরু হয়েছে রাস্তার ধারে ধারে পিঠা বিক্রি। যাঁরা বিভিন্ন মৌসুম অনুযায়ী তাঁদের পেশা পরিবর্তন করেন, তাঁরাই মূলত শীতকালে পিঠা বিক্রি করেন। পিঠা বিক্রি করে এই সময়টাতে লাভও তুলনামূলক বেশী হয় বলে জানিয়েছেন অনেক পিঠা বিক্রেতা। আবার অনেকে পিঠা বিক্রি করেই চালাচ্ছেন সন্তানদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের যাবতীয় খরচ। এমনই একজন পিঠা ব্যবসায়ী মীরসরাইয়ের আমবাড়িয়া গ্রামের মো: বাবুল (৩৫)।
তবে শীতের নানা জাতের পিঠা থাকলেও তিনি বিক্রি করেন শুধু ভাপা পিঠা। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান- ভাপা পিঠার চাহিদা অন্যান্য পিঠার তুলনায় অনেক বেশী। তাছাড়া এ পিঠা বানাতে সময়ও কম লাগে। দৈনিক ১২০-১৫০টি পিঠা বানাতে পারেন তিনি। প্রতিটি পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করার পর দিনে ৫০০ টাকার মতো লাভ হয় বলেও জানান তিনি। এ ভাপা পিঠা সাধারণত খাওয়া হয় খেজুর রস দিয়ে। কিন্তু খেজুর রসের অপ্রতুলতা ও অতিরিক্ত দামের কারণে তা কিনে ব্যবসা করা সম্ভব নয় বলে জানান কতিপয় পিঠা বিক্রেতা। তাই পিঠা মাঝখানটাতে সামান্য আখের গুড় দিয়েই এই বানান বিক্রেতারা।
পিঠা খাওয়ারত স্থানীয় যুবক সাদেক হোসেন বলেন- “খেজুর রস না হলেও আখের গুড় দিয়ে ভাপা পিঠার স্বাদও কোনো অংশে কম নয়। তবে খেজুর রস পেলে আরো ভালো হত।”
প্রতিবছর শীতকালে ফুটপাথে পিঠা বিক্রি জীবনযাপনে নিয়ে এসেছে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য। এতে একদিকে যেমন বিক্রেতাদের পরিবার সচল থাকছে অন্যদিকে রক্ষা হচ্ছে ভোক্তাদের সন্তুষ্টিও।