নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখান করে ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচির ২য় দিনের শুরুতেই নগরের প্রবেশ পথ এ কে খান মোড়ে পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সীতাকুন্ডে পুলিশ ও জামায়াত-শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জন পুলিশ ১ জন আনসার সদস্য ও একজন কৃষক । সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরের কাজীর দেউড়ি মোড়ে একটি সিএনজি টেক্সিতে আগুন দিলে এতে আব্দুল হালিম ও মোরশেদ নামে নামে ২ যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৯ জনকে আটক করেছে।
বন্দর থানার নিমতলা এলাকায় অবরোধের সমর্থনে মিছিল থেকে একটি ট্রাক টার্মিনালে ঢুকে কমপক্সে ৩৫টি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ভাংচুর করা হয়েছে।সকাল ১০টার পর থেকে অবরোধকারীরা নগরের এ কে খান মোড়, কর্নেল হাট, সিটি গেট এলাকায় মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। এসময় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের স্লিপারেও আগুন ধরিয়ে দেয়।রেললাইনে আগুন দেয়ার ফলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মহানগর গোধূলী ও সুবর্ণ এক্সপ্রেস পাহড়াতলী রেল স্টেশনে আটকা পড়ে। ঠিক একইভাবে চট্টগ্রাম থেকেও কোনো ট্রেন স্টেশন ছেড়ে যায়নি। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (পশ্চিম) আরেফিন জুয়েল এ কে খান মোড়ে পুলিশ-অবরোধকারী সংঘর্ষের কথা নিশ্চিত করেছেন।
অবরোধকারীরা এলাকার বিভিন্ন উপসড়ক থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে চোরাগোপ্তা হামলার মাধ্যমে ককটেল, ইট-পাথর নিক্ষেপ করছে। পুলিশ টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করছে।
এর আগে সকাল ৯টার সময় ওয়াসার মোড়ে একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৮টার সময় মিছিল নিয়ে নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ হাজারী বলেন ‘অবরোধকারীরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে নাশকতার চেষ্টা করছে। এতে করে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটে। কয়েকটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে।’নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার ( কোতোয়ালী) মীর্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, ‘কাজীর দেউড়িতে একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। এতে এক যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। ভিআইপি টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
নগরীর এ কে খান মোড়ে, কাজীর দেউড়ি, বড়পোল, বহদ্দার হাট মোড়সহ মোট ১৫ পয়েন্টে ভোর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সীতাকুন্ডে গুলিবিদ্ধ ৫: এদিকে অবরোধের শেষ দিন বুধবার সীতাকুন্ডে পুলিশ ও জামায়াত-শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বুধবার বেলা ১১টার সময় সীতাকুন্ডে সহিংসতায় অংশ নেয়া বিভিন্ন মামলার আসামি গ্রেপ্তারে অভিযানে গেলে পৌরসভার এয়াকুব নগর এলাকায় পুলিশ ও জামায়াতের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। জামায়াত-শিবির কর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ও ইট-পাথর নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশের গুলিতে ৫ জন আহত হয়। । এর মধ্যে ৩ জন পুলিশ ১ জন আনসার সদস্য ও একজন কৃষক । গুলি বিদ্ধরা হলেন ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান , সীতকিুন্ড থানার এস আই আনোয়ার , এস আই মিজানুর রহমান ,আনসার সদস্য লুৎফর রহমান ্ অপরজন কৃষক নাজিম উদ্দিন (২৫) । তিনি এয়াকুব নগর পন্থিশিলা এলাকার নুরুল আবছারের ছেলে ।তিনি জমিতে কাজ করার সময় কোমরে গুলিবিদ্ধ হন । নাজিম উদ্দিনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে এয়াকুব নগর থেকে কাউকে গ্রেপ্তার না করেই জামায়াত-শিবিরকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়।