বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ইংল্যান্ড হোয়াইটওয়াশ

60
অস্ট্রেলিয়া ৩২৬ (স্মিথ ১১৫, হ্যাডিন ৭৫, স্টোকস ৬/৯৯) ও ২৭৬ (রজার্স ১১৯)
ইংল্যান্ড ১৫৫ (স্টোকস ৪৭, সিডল ৩/২৩, জনসন ৩/৩৩, হ্যারিস ৩/৩৬)
ও ১৬৬ (কারবেরি ৪৩, হ্যারিস ৫/২৫, জনসন ৩/৪০)
টস করার সময় মাইকেল ক্লার্ককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কোন দু’জন অধিনায়ক অস্ট্রেলিয়াকে ৫-০-তে সিরিজ জিতিয়েছেন। নামটা কি তিনি জানেন। উত্তরটা জানা ছিল ক্লার্কের, ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং ও রিকি পন্টিং। কাল তাতে যোগ হল আরেকটি নাম, মাইকেল ক্লার্ক। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫-০-তে অ্যাশেজ সিরিজ জেতা অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক এখন তিনজন। ইংল্যান্ডের ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান বয়েড র‌্যানকিন রায়ান হ্যারিসের বলে খোঁচা দিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়লেন ক্লার্কের হাতে। ক্যাচটা নিলেন মাথার ওপর দু’হাত তুলে। সঙ্গে সঙ্গে এবারের অ্যাশেজ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল ২৮১ রানে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের মধ্য দিয়ে। ৫-০-তে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে আর্মস্ট্রং ও পন্টিংয়ের পাশে নিজের নাম লেখালেন ক্লার্ক। তার দল শুধু ইংল্যান্ডকে হারায়নি, হেনস্তাও করল।
রবিবাসরীয় জয়ের পর নাথান লায়নের নেতৃত্বে গোটা অস্ট্রেলিয়া দল পিচে বিজয়ের গান গাইল- ‘আন্ডারনিথ দ্য সাউদার্ন ক্রস’। গ্যারায় প্রথম সকালে যে এগারজন অস্ট্রেলিয়ার জয়যাত্রা শুরু করেছিলেন, সেই তারাই এদিন সিডনিতে শেষ করলেন সেই রোমাঞ্চকর অভিযাত্রা। সবচেয়ে বড় কথা, মাত্র ২১ দিনে স্বাগতিকরা ধবলধোলাই করল সফরকারীদের। ২০০৬-০৭-এ পন্টিং করেছিলেন ২২ দিনে। আর আর্মস্ট্রংয়ের অস্ট্রেলিয়ার ১৯২০-২১-এ ২৪ দিনে গুটিয়ে দিয়েছিল ইংল্যান্ডকে।
অ্যালিস্টার কুকের জন্য এই সিরিজ আজীবন দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে। সেই দুঃস্বপ্নের শেষ হয়েছে তিন দিনে হেরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে তাকে এই হার হজম করতে হয়েছে। সিরিজের শেষ ইনিংসে ইংল্যান্ডের ১৬৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার মধ্যে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। গোটা সফরে তাদের ব্যাটিং তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে বারবার। পঞ্চম ও শেষ টেস্টেও কুকরা সিরিজসেরা মিচেল জনসন এবং ম্যাচসেরা রায়ান হ্যারিসকে সামলাতে পারেননি। তৃতীয় দিনে চা-বিরতির পর ৫২ মিনিটে সাত উইকেট হারিয়ে নিজেদের দুর্দশা সম্পূর্ণ করেন।
এর আগে সকালে ক্রিস রজার্স নিজের তৃতীয় টেস্ট শতক পূর্ণ করার পর ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৪৪৮ রান। হার এড়ানোর জন্য বিশ্বরেকর্ড করতে হত ইংল্যান্ডকে। সেই সামর্থ্য তাদের ছিল না। কুক (৭) জনসনের অফ-স্টাম্পের বাইরের খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। ইয়ান বেল (১৬) গালিতে ক্যাচ দেন হ্যারিসের বলে। কেভিন পিটারসেনও (৬) হ্যারিসকে উইকেট দেন। ইংল্যান্ড চা-বিরতিতে যায় ৩/৮৭-তে। চা-বিরতির পর জনসন শুরু করেন এক ওভারে দুটি ইউকেট নিয়ে। মাইকেল কারবেরি (৪৩) ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। গ্যারি ব্যালান্স (৭) হন লেগ বিফোর। পরের ওভারে লায়নও দুটি উইকেট নেন। জনি বেয়ারসটো (০) ও স্কট বোর্থউইক (৪) তার দুই শিকার।বেন স্টোকস ও স্টুয়ার্ট ব্রড এরপর কয়েকটি বাউন্ডারি মেরেছেন। স্টোকসকে (৩২) ফেরান হ্যারিস। ব্রডকেও (৪২) বোল্ড করেন তিনি। এরপর র‌্যানকিনকে তুলে নিয়ে হ্যারিস পূর্ণ করেন পাঁচ উইকেট। ইংল্যান্ড ১৬৬-তে অলআউট। সিরিজে এ নিয়ে দশ ইনিংসে ষষ্ঠবার তারা ব্যর্থ হয় ২০০ করতে।
দিনের শুরুতে রজার্স পরপর দ্বিতীয় টেস্টে সেঞ্চুরি করেন। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে করে ২৭৬। জর্জ বেইলিকে সঙ্গে নিয়ে রজার্স ১০৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। হ্যাডিন দ্রুতগতিতে ২৮ তুলে অস্ট্রেলীয় উইকেটকিপার হিসেবে এক টেস্ট সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড গড়েন। টপকে যান অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ৪৭৩ রানের রেকর্ড, যেটি গিলি করেছিলেন ২০০১-০২-এ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এ জয়ে আইসিসি টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে পঞ্চম থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে এলো অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বের একনম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য যা একটি চ্যালেঞ্জ। সেসব কথা না ভেবে আপাতত অস্ট্রেলিয়া উৎসবে মাতোয়ারা। ক্রিকইনফো।

Leave a Reply