শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ইংলাকের পদত্যাগ দাবিতে অনড় বিরোধীরা

4054_a1

 

আগামী ২রা ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডে জাতীয় নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার এ ঘোষণায় সায় দেয় নি বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি। তারা এরই মধ্যে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে ওই নির্বাচনে অংশ নেবে না। ওদিকে গতকাল থাইল্যান্ডে বিশাল সমাবেশ করে বিরোধীরা। তাদের দাবি ইংলাককে পদত্যাগ করতে হবে। এ অবস্থায় থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অনেকে বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনা করার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশেও আগামী ৫ই জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এ ঘোষণার পর তাদেরকে ছাড়াই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সংসদ নির্বাচন। থাইল্যান্ডের পরিস্থিতি অবশ্য এর থেকে কিছুটা ভিন্ন। সেখানে বিরোধীরা নির্বাচন বর্জন করলেও প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা এখনও ঘোষণা দেন নি যে, তিনি বিরোধী দল ছাড়াই একতরফা নির্বাচন করবেন। এরই মধ্যে থাইল্যান্ডের সেনাপ্রধান সৃষ্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশে গৃহযুদ্ধ হবে। এমন অবস্থার মধ্যে গতকাল বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগ দাবিতে যে সমাবেশ ও র‌্যালি করে। তাতে যোগ দেয় হাজার হাজার নেতাকর্মী, সমর্থক। বিরোধী নেতারা বলছেন, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা হবে কয়েক লাখ। রাজনীতিবিদদের সাধারণ ক্ষমা বিষয়ক একটি বিল পার্লামেন্টে পাসের পর এ বিক্ষোভের সূচনা। ওই বিলের অধীনে দেশে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত রাজনীতিবিদদের ক্ষমা করে দেয়ার কথা। এর মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে দেশে ফেরত আনার চেষ্টা করছেন ইংলাক- এমন দাবি বিরোধীদের। তারা আরও বলছেন, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ইংলাকের ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রা স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রয়েছেন। কিন্তু বিদেশে থাকলেও  বোনের মাধ্যমে তিনি দেশের শাসন ক্ষমতা পরিচালনা করছেন। তাই ইংলাক রাজনীতিবিদদের জন্য সাধারণ ক্ষমার বিল পাস করিয়েছেন। এ জন্য আগাম নির্বাচন দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। সমস্যার সমাধান করতে হলে পদত্যাগ করতে হবে তাকে। এ দাবিতে বিরোধীরা আন্দোলনে মাঠ সরগরম করে তুললে বিক্ষোভ দমন করতে এ মাসের শুরুতে আগাম নির্বাচন দেয়ার ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী আগামী ২রা ফেব্রুয়ারি সেখানে নির্বাচন হওয়ার কথা। ইংলাক ২০১১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছেন। ফলে তার সরকারের মেয়াদ দু’ বছরের কিছু বেশি। এরই মধ্যে তিনি বিরোধীদের রোষানলে পড়েছেন। বিরোধীদলীয় নেতা সুথেপ থাউগসুবান বলেছেন, তার প্রত্যাশা গতকালের র‌্যালিতে কয়েক লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটবে এবং তা থেকে ইংলাকের পদত্যাগ জোরালো করতে চাপ সৃষ্টি করা হবে। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা রাজধানী ব্যাংককের প্রধান ৫টি ক্রসিং পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাদের লক্ষ্য ব্যাংককের জীবনযাত্রা অচল করে দেয়া। সেনাপ্রধান দেশে গৃহযুদ্ধের সতর্কতা উচ্চারণ করলেও তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। এবার ব্যাংককে যে মাত্রায় বিক্ষোভ হচ্ছে এটা ২০১০ সালের পর সবচেয়ে তীব্রতাসম্পন্ন। তখন আন্দোলন করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইংলাকের সমর্থকরা।  এবারের বিক্ষোভে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন চারজন। শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিরোধী দল ডেমোক্রেট পার্টির নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিজিত ভেজাজিভা। তিনি বলেছেন, ফেব্রুয়ারির আকস্মিক  নির্বাচনে তারা প্রার্থী দেবেন না। থাইল্যান্ডের জনগণ এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আর আস্থা রাখে না। ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে থাইল্যান্ডের রাজনীতি।

 

উৎস- মানবজমিন

Leave a Reply